উত্তরবঙ্গের ক্রীড়া মহলে আনন্দের জোয়ার। বিশ্বজয়ী ভারতীয় মহিলা ক্রিকেটার রিচা ঘোষ-এর নামে তৈরি হবে নতুন স্টেডিয়াম — সোমবার শিলিগুড়ির উত্তরকন্যা থেকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এই ঘোষণা করেন।
চাঁদমনি টি এস্টেটের ২৭ একর জমিতে তৈরি হবে এই স্টেডিয়াম। রাজ্য সরকারের উদ্যোগে গড়ে তোলা হবে এই আধুনিক ক্রীড়াঙ্গন, যা উত্তরবঙ্গের ক্রীড়াবিকাশে নতুন অধ্যায় তৈরি করবে বলে মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল।
মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “রিচা ঘোষ শুধু বাংলার নয়, গোটা ভারতের গর্ব। তাঁর নামেই তৈরি হবে শিলিগুড়িতে একটি আধুনিক স্টেডিয়াম।”
উত্তরবঙ্গের মুখ্য প্রশাসনিক বৈঠকে তিনি জানান, রাজ্যের ক্রীড়া দপ্তর ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ এই প্রকল্পের দায়িত্ব নেবে। যদিও নির্মাণ শুরু বা প্রকল্পের সময়সীমা সম্পর্কে বিস্তারিত এখনও প্রকাশ করা হয়নি, তবে সরকারি সূত্রে জানা যাচ্ছে, স্টেডিয়ামটিতে আন্তর্জাতিক মানের অবকাঠামো থাকবে।
চাঁদমনি টাউনশিপ এলাকায় এই স্টেডিয়াম তৈরি হলে তা হবে উত্তরবঙ্গের প্রথম পূর্ণাঙ্গ বহুমুখী ক্রিকেট ও ক্রীড়া কমপ্লেক্স।
দক্ষিণবঙ্গের মেয়ে হলেও, উত্তরবঙ্গের গর্ব রিচা ঘোষ। শিলিগুড়ির এই তরুণী ভারতীয় মহিলা ক্রিকেট দলের অন্যতম ভরসা। গত ২ নভেম্বর, মুম্বইয়ের ডি ওয়াই পাতিল স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত মহিলা ওয়ানডে বিশ্বকাপের ফাইনালে অস্ট্রেলিয়াকে হারিয়ে ইতিহাস গড়ে ভারতের মহিলা ক্রিকেট দল। সেই জয়ের অন্যতম নায়িকা ছিলেন রিচা।
বাংলা তথা ভারতীয় ক্রিকেটের ইতিহাসে এই জয়কে উদযাপন করতে রাজ্য সরকার ইতিমধ্যেই রিচাকে একাধিক সম্মান দিয়েছে। ইডেন গার্ডেন্সে আয়োজিত ‘রিচা-বরণ’ অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী নিজে উপস্থিত ছিলেন। সেখানে রিচাকে ‘বঙ্গভূষণ’ সম্মান ও রাজ্য পুলিশের ডিএসপি পদে নিয়োগপত্র প্রদান করা হয়।
এবার তাঁর নামেই তৈরি হবে এক স্থায়ী স্মারক — একটি আন্তর্জাতিক মানের স্টেডিয়াম।
মুখ্যমন্ত্রীর এই ঘোষণার খবর পৌঁছতেই আবেগে ভেসেছে রিচার পরিবার।
রিচার মা বলেন, “এটা আমাদের জীবনের গর্বের মুহূর্ত। মেয়ের নাম আজ একটা স্টেডিয়ামের সঙ্গে যুক্ত হবে—এই আনন্দ ভাষায় প্রকাশ করা যায় না।”
পিতা মনোজ ঘোষের কথায়, “মুখ্যমন্ত্রীর এই ভালোবাসা ও সম্মান আমাদের আরও অনুপ্রাণিত করল। রিচার সাফল্য যেন আরও ছড়িয়ে পড়ে বাংলার প্রতিটি মেয়ের জীবনে।”
ওয়াকিবহাল মহলের মতে, রিচা ঘোষের নামে স্টেডিয়াম তৈরি হলে উত্তরবঙ্গের তরুণ ক্রীড়াবিদদের জন্য তা হবে বড় প্রেরণা। সেখানে ক্রিকেট ছাড়াও অ্যাথলেটিকস, ফুটবল ও অন্যান্য ক্রীড়া কার্যক্রমের সুযোগ তৈরি হতে পারে।