কেক কাহিনি

পঙ্কজ বন্দ্যোপাধ্যায়

বড়দিন মানেই কেক।সান্তা ক্লজ,খ্রিসমাস ট্রি, ঘণ্টা ইত্যাদি, ইত্যাদি আমাদের পরিচিত। কিন্তু এই কেক বা কেক শব্দটি এলো কোথা থেকে,তার একটি ছোট্ট কাহিনি জানা যাক।

কেক শব্দটির উৎপত্তি হল নর্স উপজাতির খাদ্য ‘কাকা’ থেকে, সে আজ বহুকাল আগেকার কথা। এই নর্স উপজাতিরা থাকতো স্ক্যন্ডিনেভিয়ার বিভিন্ন অঞ্চলে।তারাই তাদের খাবার হিসাবে খেতো ময়দার সাথে চিনি বা মধু,ডিম,দুধ,মিশিয়ে আগুনে সেঁকে নিয়ে খেত। খুব সুস্বাদুও লাগতো খেতে। ঠান্ডার এই সময়ে সেই খাবারও বেশ কয়েকদিন ধরে রেখে খাওয়াও যেতো।

অবশ্য পাঁউরুটি বানানোর পদ্ধতি তার অনেক আগে থেকেই ইউরোপের বহু দেশেই জানা ছিল। এই পাঁউরুটি ‘বেক’ (Baked) করার কৌশল উদ্ভাবিত হয়েছিল প্রাচীন মিশরের মানুষের দ্বারা অনেক আগেই। পাঁউরুটিতে মধু মিশিয়ে তাকে মিষ্টি সুস্বাদু করার  সুত্রপাতও তাদের হাতেই হয়েছিল।

গ্রীসের মানুষের অতি প্রিয় ছিল চিজ কেক। প্রাচীন রোমানরাও কিসমিস,আখরোট আর চেরী ফল এবং অন্যান্য ফল মিশিয়ে প্রথম ফ্রুট ক্রক বানিয়ে খেত।

প্রাচ্যে আমাদের এই উপমহাদেশে কেক তৈরি হতো। জাপানিরা ‘ক্যা সে তুরা’ নামের স্পঞ্জ কেক প্রথম বানায়।চিনারাও ‘ইন্ চি ইয়াং’ ফ্রুট কেক প্রথম বানায়। ফিলিপিন্স, মায়নামার,ইয়াঙ্গন,প্রভতি দেশের রাইস কেক বা মুন কেকের সঙ্গে, মহারাষ্ট্রের পূরণ পোলি-র সাথে  আমাদের এই বাংলার পিঠে-পুলির অনেক অনেক মিল পাওয়া যায়।

আমাদের দেশের কেকের জনপ্রিয়তা শুরু হয় মুঘলযুগে পর্তুগিজ, ইংরেজ,ফরাসিদের আগমনে।তারা তখন এ দেশের সাধারণ গরিব মানুষদের মন জয় করার জন্যে বিভিন্ন জায়গাতে গির্জার সামনে এই বড়দিনের সময়ে কেক বিলি করতো। নতুন খাবারের স্বাদ পেল এদেশের মানুষের রসনা। সেই শুরু, এখন তো বড়দিন মানেই রঙিন কাগজে মোড়া ক্রিসমাসের কেক।

Related posts

আমাদের দেশ, আমাদের দ্বেষ-বিদ্বেষ এবং রবীন্দ্রনাথ

কিন্তু মৃত্যু যে ভয়ংকর, সে-দেহে তাহার কোন প্রমাণ ছিল না

২৭ শে এপ্রিল মানে জাগা, জেগে থাকা, জাগানো…