এসো আজ, থাকি পাশাপাশি, একটু অবসর! দাও বলিবারে ভালোবাসি… ভালোবাসি

পঙ্কজ চট্টোপাধ্যায়

আজ ভালোবাসার দিন, আজ কাছে আসার দিন …আজ ভ্যালেন্টাইন্স ডে…

তাই বারবার বলতে ইচ্ছে করে অন্তরে,অন্দরে, তোমারেই যেন ভালোবাসিয়াছি, শত রূপে শতবার.. ওগো তুমি যে আমার…

জানি,ভালোবাসার কোন দিন ক্ষণ হয়না, তবুও একটি বিশেষ দিনে জীবনের একজন সবিশেষ মানুষকে ভালোবাসার নিবেদনে ভরে ওঠে যেন এই ১৪ ই ফেব্রুয়ারী,ভ্যালেন্টাইন্স ডে-র দিনে।

প্রিয়জনকে, ভালোবাসার মানুষকে ভালোবাসার জন্যে কত মানুষ এই একটা দিনে কলেজ পালিয়ে, কেউ টিউশন কেটে,আবার কেউ হয়তোবা অফিস থেকে মিথ্যে শরীর খারাপের নাম করে ছুটি নিয়ে নেয়। উদ্দেশ্য একটাই,প্রিয়জনের সাথে একটু নিরিবিলিতে কিছুটা সময় কাটানো। সে ঘরেই হোক,বা বাইরেই হোক।সামাজিক স্বীকৃতির আগেই হোক,বা পরেই হোক। বয়সে তরুন-তরুনী হোক,বা,যুবক-যুবতী হোক,কিম্বা একসাথে সংসার করা মাঝবয়েসী বা বয়স্ক নারী-পুরুষের ভালোবাসাই হোক। আজ শুধুই একে- অপরকে ভালোবাসার দিন।

কিন্তু, ভ্যালেন্টাইন্ কথাটার মানেই কি প্রেম? একটু ইতিহাস ঘাঁটলেই আমরা দেখতে পাই যে,ল্যাটিন শব্দ
“ভ্যালেন্টাইনাস”-এর মানে হোল ” সুযোগ্য বা শক্তিশালী। দ্বিতীয় থেকে অষ্টম নবম শতাব্দী অবধি খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বীদের মধ্য থেকে অনেক খ্রিস্টান সন্ত-দের নামের সাথে “ভ্যালেন্টাইন” উপাধি যুক্ত হয়েছে।মানে মন্দ ভালো মিশিয়ে তুমিই আমার প্রিয়,তুমিই আমার সুযোগ্য,তুমি আমার প্রেম,তুমিই আমার যাবতীয় ভালোবাসা।

আমরা এখন যে ভ্যালেন্টাইন্স ডে পালন করি, সেটা কিন্তু সন্ত ভ্যালেন্টাইনের নামানুসারে। তিনি রোমান রাজা ক্লদিয়াসের সময়কালীন। যুবক যুবতীদের ভালোবাসায় নিষিদ্ধতার রাজাদেশের বিরুদ্ধে গিয়ে সন্ত ভ্যালেন্টাইন তখনকার প্রেমিক প্রেমিকাদের পাশে দাঁড়িয়েছিলেন।সেই অপরাধের জন্য রাজা ক্লদিয়াস সন্ত ভ্যালেন্টাইনের প্রকাশ্য দিবালোকে,প্রকাশ্য রাস্তায় শিরচ্ছেদ করার আদেশ দেন,এবং সেইমত সন্তের মাথা কেটে ফেলা হয় আজকের দিনে এই ১৪ই ফেব্রুয়ারী।

সেই থেকেই, এই ১৪ ই ফেব্রুয়ারী সন্ত ভ্যালেন্টাইনের স্মৃতিকে শ্রদ্ধা জানিয়ে দিনটি “ভালোবাসা”-র দিন হিসাবে পালিত হয়।

আসুন আজ আমরাও শ্রদ্ধা জানাই সন্ত ভ্যালেন্টাইনের সেই ভালোবাসার শহীদ স্মরণ স্মৃতিকে। শ্রদ্ধা জানাই মানুষের ভালোবাসাকে। শ্রদ্ধা জানাই অন্তরের প্রেমকে।

আজ সবাই ভালোবাসার হৃদয়ের স্রোতে অবগাহন করে একে অপরকে বলি…”তোমারেই ভালোবাসিয়াছি জীবনে জীবনে শতরূপে শতবার…” “ওগো তুমি যে আমার…কানে কানে শুধু একবার বলো,তুমি যে আমার,ওগো তুমি যে আমার….”

ভালোবাসার জয় হোক।

Related posts

১৯শে মে বাঙালি ও বাঙলা ভাষার এক ইতিহাস

আমাদের দেশ, আমাদের দ্বেষ-বিদ্বেষ এবং রবীন্দ্রনাথ

কিন্তু মৃত্যু যে ভয়ংকর, সে-দেহে তাহার কোন প্রমাণ ছিল না