প্রাকৃতিক গুণসম্পন্ন ভেষজ উদ্ভিদ অ্যালোভেরা, জেনে নিন এর ব্যবহার

ডেস্ক: প্রাকৃতিক গুণসম্পন্ন ভেষজ উদ্ভিদ অ্যালোভেরা বা ঘৃতকুমারীর গুনের কোনো সীমা পরিসীমা নেই। রাস্তাঘাটে কিংবা বাজারে খুবই সহজলভ্য এটি। এটি অনেক রোগ নিরাময়ে করতে সক্ষম । এই উদ্ভিদের পাতায় রয়েছে ২০ রকমের খনিজ পদার্থ যা মানবদেহের জন্য যে ২২টি এমিনো অ্যাসিড প্রয়োজন সেগুলো এতে বিদ্যমান। এতে রয়েছে ক্যালসিয়াম, সোডিয়াম, জিংক, আয়রন, পটাশিয়াম, ম্যাঙ্গানিজ, জিঙ্ক, ফলিক অ্যাসিড, অ্যামিনো অ্যাসিড ও ভিটামিন-এ, বি৬ ও বি২ ইত্যাদি, যা স্বাস্থ্যরক্ষার বিভিন্ন কাজে লাগে। এর ব্যবহার বহু যুগ আগে থেকেই। অনেক গুণের কারণে অ্যালোভেরা ব্যবহার করে মানুষ পেয়েছেন নানা রোগের সমাধানও। কিন্তু এর রয়েছে কিছু ক্ষতিকর দিকও, যা অনেকেই জানে না।


বৈজ্ঞানিক গবেষণায় দেখানো হয়েছে যে, এই উদ্ভিদটি অ্যান্টিবায়োটিকের প্রভাব যা এটি রক্তে শর্করার মাত্রা হ্রাস করে। এজমা, ড্যান্ড্রাফ, সেরিয়াসিসের মতো রোগগুলোর জন্য স্কিন কেয়ার চিকিৎসাগুলোতে অ্যালোভেরা অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। 


উপকারিতা
ডায়াবেটিস– যারা ডায়াবেটিসের সমস্যায় ভুগছেন তারা নিয়মিত অ্যালোভেরা রস খেলে রক্তের গ্লুকোজের পরিমাণ কমিয়ে আনতে এবং ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারবেন।


হজম ক্ষমতার উন্নতি–   অ্যালোভেরা জুস শরীরের জন্য উপকারি। কারণ এই প্রকৃতিক উপাদানটি শরীরে পাচক রসের ক্ষরণ এতটা বাড়িয়ে দেয় যে বদ-হজমের কমায়, এক কথায় হজম শক্তি বাড়ায়। সেই সঙ্গে গ্যাস-অম্বল, অ্যাসিডিটি এবং কনস্টিপেশনের মতো সমস্যাও কমতে শুরু করে।


কোষ্ঠকাঠিন্য– কোষ্ঠকাঠিন্য এমন একটি সমস্যা যা নিয়ে সবাই চিন্তিত। এই সমস্যাগুলি কাটিয়ে ওঠার জন্য অ্যালোভেরার রস পান করা  উচিত, এটি ব্যক্তিকে  কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা থেকে মুক্তি দেয়। আপনার কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা থাকলে অ্যালোভেরার রস পান করুন এবং কোষ্ঠকাঠিন্য থেকে মুক্তি পান। 


ওজন হ্রাস করে-  আপনার বাড়তি ওজন কমাতে অ্যালোভেরার রস প্রতিদিন খাওয়া উচিত। অ্যালোভেরার জুসে এমন কিছু খনিজ ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট রয়েছে যা ফ্যাট কমায়। এলোভেরা ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখে। 


কোলেস্টেরল কমায়-  শরীরে কোলেস্টেরল থাকা প্রয়োজন। তবে বেশি পরিমাণে কোলেস্টেরল থাকার কারণে অনেক ধরণের সমস্যা দেখা দেয়। খারাপ কোলেস্টেরল হার্টের ক্ষতি করে। অ্যালোভেরা বেশি পরিমাণে ব্যবহার করলে কোলেস্টেরলের মাত্রা বাড়ে।


হার্ট– অ্যালোভেরার জুস কোলেস্টেরলের মাত্রা কমিয়ে রাখে। এটি দূষিত রক্ত দেহ থেকে বের করে দেয় এবং হৃদযন্ত্রকে সুস্থ রাখতে সাহায্য করে থাকে।

আরও পড়ুন: রোজ খান আদা, নিজের মধ্যে লক্ষ্য করুন পরিবর্তন


ত্বকের যত্ন
– বহু বছর ধরে ত্বকের যত্নে অ্যালোভেরা জেল ব্যবহৃত হয়ে আসছে। ত্বকে র‌্যাশ,  চুলকানি, রোদে পড়া দাগ দূর করতে অ্যালোভেরার তুলনা হয় না। যেকোনো উপটান বা প্যাক অথবা সরাসরি এই জেল লাগালে ত্বক উজ্জ্বল ও মসৃণ থাকে এবং বয়সের ছাপ মুছে যায়। 


পুষ্টি সমৃদ্ধ: ভিটামিন এবং খনিজ সুস্থ থাকতে এবং অসুস্থতা প্রতিরোধের জন্য প্রয়োজনীয়। অ্যালোভেরা হল দুটিরই প্যাকেজ। এটিতে ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম, ফলিক অ্যাসিড এবং ভিটামিন সি, এ এবং ই রয়েছে সেই সাথে ক্যালোরির পরিমাণও অত্যন্ত সামান্য। নিয়মিত  খালি পেটে অ্যালোভেরা খেলে আপনার পুষ্টির ঘাটতি দূর হবে এবং নিজেকে সুস্থ রাখতে পারবেন।
এছাড়া প্রচণ্ড গরমে অ্যালোভেরার পাতার রস সরবত করে খেলে শরীর ঠান্ডা থাকে। এর পাতার রস মাথা ঠান্ডা রাখতে সাহায্য করে।


অপকারিতা: যদি কোনও ব্যক্তি অ্যালোভেরার রস পান করতে চান তবে প্রথমে চিকিৎসকের সাথে পরামর্শ করুন কারণ এর রসগুলিও ক্ষতিকারক হতে পারে।গর্ভবতী মহিলাদের এবং স্তন্যদানকারী মহিলাদের অ্যালোভেরার রস ব্যবহার এড়ানো উচিত। কারণ এটি তাদের স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকারক হতে পারে। অ্যালোভেরা বেশি পরিমাণে খাওয়া উচিত নয়, এটি রক্তের বৃদ্ধি করে । তবে পাশাপাশি এটি কিডনির ক্ষতি করে।

Related posts

বাইরে বেরোলে জ্বালাপোড়া গরম, কী করবেন আর কী করবেন না?

জুন মাসে ভারতে আছড়ে পড়তে পারে করোনার চতুর্থ ঢেউ

কোভিডে কাহিল ন্যাশনাল মেডিক্যাল, আক্রান্ত ৮০ স্বাস্থ্য কর্মী