কলকাতা: চিকিৎসা করাতে এসে খুন বাংলাদেশের সাংসদ আনোয়ার-উল-আজিম। ১২ মে ভারতে আসেন তিনি। এই ঘটনায় রীতিমতো শোরগোল শুরু হয়েছে দুই দেশে। জানা যাচ্ছে, নিখোঁজ সাংসদের তদন্তে নেমে পুলিশের কাছে উঠে আসছে খুনের তত্ত্ব।
৯ দিন ধরে নিখোঁজ ছিলেন বাংলাদেশের সাংসদ আনোয়ার-উল-আজিম। বাংলাদেশ পুলিশ ইতিমধ্যেই ৩ জনকে গ্রেফতার করেছে করেছে বলে খবর। খুনের কথা স্বীকার করেছেন ধৃতরা। বাংলাদেশের পুলিশ ও ভারতের পুলিশ সমন্বয় করেই এই ঘটনার তদন্ত করেছে।
নৃশংস ভাবে খুন এবং দেহ লোপাট
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, গত ১৩ মে নিউ টাউনের একটি ফ্ল্যাটে খুন হন সাংসদ। তাঁকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয়েছে। হত্যাকারীরা তাঁর মৃত্যু নিশ্চিত করতে ভারী কিছু দিয়ে তার মাথায় আঘাত করে। আনোয়ার-উলকে হত্যার পর তার লাশ টুকরো টুকরো করে অন্য কোথাও ফেলে দেওয়া হয়। ৩টি ভিন্ন তারিখে ফ্ল্যাট থেকে লাশের টুকরোগুলো বের করা হয়। ১৪, ১৫ ও ১৮ মে খুনিরা লাশ নিয়ে যায়। দেহের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ অপসারণের দায়িত্ব দেওয়া হয় দুজনকে। এই দু’জনই পলাতক, পুলিশের জন্য শরীরের অঙ্গ খুঁজে পাওয়া কঠিন হয়ে পড়েছে। নিউ টাউনের ফ্ল্যাট থেকে পুলিশ ছোট প্লাস্টিকের ব্যাগ খুঁজে পেয়েছে এবং পুলিশ সন্দেহ করছে যে শরীরের অঙ্গগুলি ছোট প্লাস্টিকের ব্যাগে ফেলে দেওয়া হয়েছে।
কী ভাবে রহস্যের সমাধান?
কলকাতায় এসে তিনি উঠেছিলেন দীর্ঘদিনের পরিচিত বরানগরে গোপাল বিশ্বাস নামে এক বন্ধুর বাড়িতে। ২ দিন সেখানে থাকার পর ১৪ তারিখ তিনি গোপালকে জানান, বিশেষ প্রয়োজনে তিনি বের হচ্ছেন, আজই ফিরে আসবেন। তবে তার পরদিনও সাংসদ না ফেরায় উদ্বিগ্ন গোপাল থানায় গিয়ে নিখোঁজ ডায়েরি করেন। পুলিশের তরফেও তাঁকে ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে ফোন সুইচ অফ পাওয়া যায়। এর পরই সাংসদের খোঁজে তৎপর হয়ে ওঠে ভারত ও বাংলাদেশ।
আজিমের গাড়ি আগেই উদ্ধার করেছিল নিউটাউন থানার পুলিশ। বেশ কয়েকদিন ধরেই ঘটনার তদন্ত চালানো হচ্ছিল । ঘটনায় জড়িত সন্দেহে মোট ৩ সন্দেহভাজনকে আগেই আটক করা হয়েছিল। তাঁদের বয়ানের সূত্র ধরেই বাংলাদেশের সাংসদের রহস্যজনক অন্তর্ধান-তদন্তে বুধবার নিউটাউনের একটি আবাসনে তল্লাশি চালায় বিধাননগর কমিশনারেটের পুলিশ।
আবাসনের সিসি ক্যামেরার ফুটেজে ধরা পড়েছে, যে ৩ জন ব্যক্তি সাংসদের সঙ্গে ছিলেন, পরে তাঁরা বেরিয়ে গেলেও সাংসদকে বার হতে দেখা যায়নি। পুলিশ ওই ফ্ল্যাটের মেঝে , বেসিনে চাপ-চাপ রক্তের দাগ পায়। তার থেকেই তাঁদের সন্দেহ হয় খুনের পর ওই সাংসদের দেহ টুকরো করে কোথাও লোকানো হয়েছে।