ওয়েবডেস্ক : করোনা পরবর্তী অর্থনৈতিক মন্দা মোকাবিলায় সাধারণ মানুষের হাতে নগদ অর্থ পৌঁছে দেওয়ার কথা বলেছিলেন অর্থনীতিবিদরা। সেই সুরেই সাধারণ বাজেটের সমালোচনা করলেন পশ্চিমবঙ্গের অর্থমন্ত্রী অমিত মিত্র।
তিনি বললেন, ‘‘বাজেট বিভ্রান্ত। মধ্যবিত্তের জন্য এই বাজেটে কিছুই নেই। করোনা পরবর্তী সময়ে বাজার চাঙ্গা করতে মানুষের হাতে সরাসরি অর্থ পৌঁছে দেওয়া দরকার ছিল। যাতে বাজারে চাহিদা বৃদ্ধি পায়। তা দিল না কেন্দ্র। উল্টে সরকারের শেষ পুঁজিটুকু বেচে দেওয়ার বাজেট পেশ হল সোমবার।’’
সরকার সমস্ত কিছুর বেসরকারিকরণ করে দিচ্ছে বলে অভিযোগ করেন তিনি। বাজেটের পরেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়,ডেরেক ও’ব্রায়েন বেসরকারিকরণের বিরুদ্ধে মুখ খুলেছিলেন। অমিত মিত্র সেই কথাগুলিই বললেন।
তাঁর মতে, পিপিপি মডেল আসলে ভাঁওতা। সরকারের যা শেষতম পুঁজি ছিল, তা বিক্রি করে দেওয়ার পরিকল্পনা করছে কেন্দ্র। ২টি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্ক বিক্রি করে দেওয়া হবে। এখনও কেউ জানে না, কোন ব্যাঙ্কগুলির কথা বলা হচ্ছে।
আরও পড়ুন : হুক্কাহুয়া বাজেট, উপেক্ষিত আমজনতা, সাধারণ বাজেটের তীব্র সমালোচনায় বাংলার মুখ্যমন্ত্রী
জীবন বিমার ক্ষেত্রে ৭৪ শতাংশ বিদেশি বিনিয়োগের কথা বলা হয়েছে। শেয়ার ছাড়া হয়েছে এলআইসি-এর। সব মিলিয়ে বাজেটে কোনও দিশা নেই সাধারণ মানুষের জন্য। এ এক দিশাহারা বাজেট।
কেন্দ্রী-রাজ্যের প্রকল্পের তুলনা টেনে, পরিসংখ্যান দিয়ে অর্থমন্ত্রী বলেন, পশ্চিমবঙ্গ সরকার একাই করোনা মোকাবিলায় ৪ হাজার কোটি টাকা খরচ করেছে। কেন্দ্রীয় সরকার যে করোনা মোকাবিলায় যথেষ্ট সাহায্য করেনি, বুঝিয়ে দিয়েছেন অমিত মিত্র।
অর্থমন্ত্রীর প্রশ্ন, কেন ভোটের মুখে কয়েকটি রাজ্যে রাস্তা তৈরির প্রকল্প নিচ্ছে কেন্দ্রীয় সরকার। কেন্দ্র বলেছে ৬২৫ কিলোমিটার রাস্তা তৈরি করবে পশ্চিমবঙ্গে। সেই কথা টেনে তিনি বলেন, রাজ্য সরকার পশ্চিমবঙ্গে ৮৮ হাজার ৮৪১ কিলোমিটার রাস্তা তৈরি করেছে। বড় রাস্তা তৈরি হয়েছে ৫ হাজার ১১১ কিলোমিটার। অর্থাৎ ৬২৫ কিলোমিটারের কোনও তুলনাই হয় না।
পাশাপাশি ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প ক্ষেত্র, অসংগঠিত শ্রমিকদের ক্ষেত্রে কেন্দ্রীয় বাজেটে কেন কিছু নেই, সাংবাদিক বৈঠক থেকে এ প্রশ্নও তোলেন অমিত মিত্র। তিনি বলেন, ভারতের উৎপাদনের বড় অংশ যাঁদের হাতে, যাঁরা অর্থনীতি নিয়ন্ত্রণ করছেন, সেই অসংগঠিত শ্রমিকদের হাতে কেন কিছু দেওয়ার ঘোষণা করা হল না?