মনমোহনও কিন্তু বিরোধীদের প্রশ্নের উত্তর দিতেন, মোদীকে বিঁধলেন ডেরেক

ডেস্ক: সংসদের বাদল অধিবেশন নির্ধারিত সময়ের ২ দিন আগেই শেষ করতে হয়েছে। এই নিয়ে চরম অসন্তোষ শাসক দলে। বিরোধীরা বিক্ষোভের নামে এতটাই অশোভন আচরণ করেছে যে বাধ্য হয়েই অধিবেশন নির্ধারিত সময়ের আগে শেষ করে দিতে হয়েছে বলে দাবি করেছেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রীরা। আবার অন্যদিকে, অধিবেশনে কোন রকম আলোচনা ছাড়াই একাধিক বিল পাশ করেছে সরকারপক্ষ। এই অভিযোগে বারবার সরব হয়েছেন বিরোধীরা, অধিবেশনেও তাঁরা এ নিয়ে তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছেন। অধিবেশন শেষের পর দিল্লিতে তৃণমূল সাংসদরা সাংবাদিক বৈঠক করে সরকারের বিরুদ্ধে একের পর এক তোপ দাগলেন। ডেরেক ও ব্রায়েন, সৌগত রায় , যশবন্ত সিনহারা পালটা সরকারের বিরুদ্ধেই ‘গুন্ডামি’র অভিযোগ তুললেন। 


OBC বিল-সহ একাধিক গুরুত্বপূর্ণ বিল পাশ হয়েছে সংসদের বাদল অধিবেশনে। তবে এবারের অধিবেশনের শুরুতেই ঝড় তুলেছিল ফোনে আড়ি পাতা কাণ্ড বা ‘পেগাসাস’ ইস্যু। একাধিক গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব, শিল্পপতি, সাংবাদিকদের ফোনে ইজরায়েলি স্পাইওয়্যার দিয়ে নজরদারি চালানো হয়েছে। সংসদ অধিবেশনের শুরুর দিনই এই খবর প্রকাশ্যে আসার পরই বিরোধীরা এ নিয়ে আলোচনার দাবি তোলেন। তৃণমূল-সহ সবকটি বিরোধী দলই এমন স্পর্শকাতর বিষয় নিয়ে সরব হয়েছিল। বারবার সংসদে আলোচনার দাবি করেছিলেন বিরোধীরা। কিন্তু গোটা অধিবেশনে তা নিয়ে কোনও আলোচনা হয়নি। 


বৃহস্পতিবার এক সাংবাদিক সম্মেলনে, তৃণমূল সাংসদ সৌগত রায় বলেন, আসলে সংসদ চালাতেই চায় না সরকার। খোদ প্রধানমন্ত্রী সংসদে থাকেন না। এটা কি গণতন্ত্র! এবার বাদল অধিবেশনে ওবিসি বিল পাস হয়েছে। সংসদে আসেননি নরেন্দ্র মোদী ও অমিত শাহ। বিতর্ক ছাড়াই পাস করানো হচ্ছে বিল।


ডেরেক বললেন, ”সংসদীয় কমিটিতে আলোচনা ছাড়া একের পর এক বিল পাশ করা হয়েছে। প্রতি ১০ টি বিল পিছু ৪টি অর্ডিন্যান্স। কেন? এটাই কি গুন্ডামি নয়? বলা হচ্ছে, বিরোধীরা গুন্ডাদের মতো আচরণ করছে। কিন্তু আমরা বলছি, সরকার পক্ষই গুন্ডামি করেছে।”

আরও পড়ুন: বিরোধীদের বিশেষ বৈঠক, ফের সোনিয়ার ডাকে দিল্লি যাবেন মমতা


তৃণমূল সাংসদের অভিযোগ, কেন জানি না সংসদ থেকে পালিয়ে বেড়ান প্রধানমন্ত্রী। মনমোহন সিংও তার প্রধানমন্ত্রিত্বের সময়ে ৫ বছরে ২১ প্রশ্নের উত্তর দিয়েছেন। বিরোধীদের প্রশ্ন কখনও এড়িয়ে যেতেন না তিনি। সংসদে বিরোধীদের সব প্রশ্নের উত্তর দিতেন। কিন্তু মোদী সেটারও প্রয়োজন মনে করেন না। দুই প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিং এবং দেবেগৌড়া যদি উপস্থিত থাকতে পারেন সংসদে তাহলে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী কেন পারলেন। তিনি কেন বিরোধীদের প্রশ্নের উত্তর দিতে পারলেন না বলে সরব হয়েছেন ডেরেক। বর্তমান প্রধানমন্ত্রীর অ্যাটনমিক এনার্জি সহ একাধিক গুরুত্বপূর্ণ দফতরের দায়িত্বে রয়েছেন। কিন্তু গত ৫ বছরে কোনও প্রশ্নের উত্তর তিনি দেননি।


ডেরেক ওব্রায়েন বলেন, সরকার যখন সব সীমা ছাড়িয়ে যায় তখন বিরোধীদের কী করার থাকে। আমরা কি বিরোধী আসনে বসে ললিপপ খাব! নাকি এর প্রতিবাদ করব! ২০১৯ এর লোকসভা নির্বাচনে বিজেপি পেয়েছে ৩৭ শতাংশ ভোট। ষাট শতাংশের বেশি ভোটে পেয়ে বিরোধীরা এখন দেশের মানুষের প্রতিনিধিত্ব করছে। তাদেরকেই এখন উপেক্ষা করছে কেন্দ্র সরকার।

Related posts

পুজোর ভিড় সামলাতে শিয়ালদহে বিশেষ ব্যবস্থা, চালু হচ্ছে ৩১টি স্পেশাল ট্রেন

‘যাঁরা বলতেন বাংলায় দুর্গাপুজো হয় না, আজ তাঁরাই উদ্বোধন করছেন’— অমিত শাহকে তীব্র কটাক্ষ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের

সন্তোষ মিত্র স্কোয়ারে পুজো উদ্বোধনে অমিত শাহ, মঞ্চ থেকেই বাংলায় বিজেপি সরকার গঠনের ডাক