ডেস্ক: আমফানের স্মৃতি উসকে ধেয়ে আসছে ঘূর্ণিঝড় ইয়াস। সমুদ্রের মধ্যে ক্রমশ শক্তি সঞ্চয় করছে ঘূর্ণিঝড় ইয়াস। আগামী কয়েক ঘণ্টার মধ্যে শক্তি সঞ্চয় করে তা পরিণত হবে অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড়ে। ওডিশার পারাদ্বীপ ও পশ্চিমবঙ্গের সাগর দ্বীপের মাঝখান দিয়ে স্থলভাগে ঢুকবে ইয়াস।
ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের ল্যান্ডফলের আগে ইতিমধ্যেই মেঘলা আকাশ উপকূলবর্তী জেলাগুলিতে। প্রবল জলোচ্ছ্বাসও শুরু হয়েছে সমুদ্রে। এই মুহূর্তে দিঘা থেকে ঠিক ৪২০ কিলোমিটার দূরে রয়েছে ইয়াস, পারাদ্বীপ থেকে তার দূরত্ব ৩২০ কিলোমিটার।
আলিপুর আবহওয়া দফতরের বিশেষজ্ঞরা আশ্বস্ত করেছেন, কখনই আমফান আর ইয়াসের প্রভাব একই রকম হবে না। ইয়াস অনেক বেশি শক্তিশালী। তবে ল্যান্ডফল করবে বালেশ্বরে। আর আমফান সাগরে ধাক্কা খেয়ে গিয়েছিল কলকাতার বুক চিড়ে। দুটোর প্রভাব কখনই একই রকম নয়।
আগামী ১২ ঘণ্টায় আরও শক্তি সঞ্চয় করবে ইয়াস। পূর্ণিমা ও পূর্ণগ্রাস চন্দ্রগ্রহণের জোড়াফলায় শক্তিশালী হয়ে উঠছে ইয়াস। তবে কলকাতা ও পার্শ্ববর্তী স্থানে ঝড়ের দাপট বেশি হবে না বলেই জানিয়েছে আলিপুর আবহাওয়া দফতর। ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টির পূর্বাভাস রয়েছে কলকাতা ও দক্ষিণবঙ্গের জেলাগুলিতে। তবে সবচেয়ে বেশি প্রভাব পড়বে পূর্ব মেদিনীপুরে। আছড়ে পড়ার সময় পূর্ব মেদিনীপুরে ঝড়ের বেগ হতে পারে ঘণ্টায় ১৪৫ কিমি। ইতিমধ্যেই সেখানে রেড অ্যালার্ট জারি করা হয়েছে। কমলা সতর্কতা জারি করা হয়েছে বাঁকুড়া, ঝাড়গ্রাম, দক্ষিণ ২৪ পরগনায়।
দক্ষিণ ২৪ পরগনার কাকদ্বীপে শুরু বৃষ্টি। বাড়ছে নদীর জলস্তর। এরই মধ্যে সাগরের বঙ্কিম নগর ও সুমতি নগর এলাকায় বাঁধ মেরামতির কাজ খতিয়ে দেখেন সুন্দরবন উন্নয়নমন্ত্রী বঙ্কিম হাজরা।
রাজ্যের উপকূল এলাকা থেকে বাসিন্দাদের সরাতে শুরু করে দিয়েছে প্রশাসন। ইতিমধ্যেই দক্ষিণ ২৪ পরগনার বকখালি থেকে ১৬ হাজার বাসিন্দাকে সরানো হয়েছে। পূর্ব মেদিনীপুরের দিঘা থেকে সরানো হয়েছে ১ লক্ষ ১০ হাজার বাসিন্দাকে।
আশঙ্কার বিষয় ইতিমধ্যেই ফ্রেজারগঞ্জ, গঙ্গাসাগর, মুড়িগঙ্গা-সহ সহ বহু জায়গায় সমুদ্র উপচে জল উঠতে শুরু করেছে। গতকাল থেকেই শুরু হয়েছে কয়েক লক্ষ মানুষকে রিলিফ সেন্টারে পৌঁছে দেওয়ার কাজ।
পূর্ব মেদিনীপুরে মালুম হচ্ছে ঘূর্ণিঝড় ‘ইয়াস’-এর দাপট। জেলায় মাঝারি থেকে ভারী বৃষ্টিপাত শুরু হয়েছে। উপকূলে বইছে ঝোড়ো হাওয়া। দিঘায় বেড়েছে জলোচ্ছ্বাস। ইতিমধ্যে পূর্ব মেদিনীপুরে ‘হলুদ’ সতর্কতা জারি করা হয়েছে। বিকেলের পর তা ‘লাল’ সতর্কতায় পরিণত হবে। ইতিমধ্যে এলাকায় মোতায়েন করা হয়েছে জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীর একাধিক দল। নামানো হয়েছে কুইক রেসপন্স টিম। ঘূর্ণিঝড়ের আশঙ্কায় চালানো হয়েছে মাইকিং। খালি করা হয়েছে দিঘা উপকূল। নীচু এলাকার বাসিন্দাদের সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।