উত্তরপ্রদেশের ঝাঁসিতে মহারানি লক্ষ্মীবাঈ মেডিক্যাল কলেজের নিওন্যাটাল বিভাগে বিধ্বংসী অগ্নিকাণ্ডে ১০ সদ্যোজাতের মর্মান্তিক মৃত্যু ঘটেছে। শুক্রবার রাতে ঘটে যাওয়া এই ঘটনায় প্রশাসন প্রাথমিকভাবে শর্ট সার্কিট থেকে আগুন লাগার তত্ত্ব দিলেও এক প্রত্যক্ষদর্শীর বয়ানে নতুন করে চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শী ভগবান দাস, যিনি হামিরপুরের বাসিন্দা এবং যার ছেলে ওই হাসপাতালে ভর্তি ছিল, দাবি করেছেন যে আগুন লাগার পেছনে একটি নার্সের গাফিলতি রয়েছে। তিনি বলেন, অক্সিজেন পাইপ সংযোগের সময়ে এক নার্সকে সদ্যোজাতদের ওয়ার্ডের কাছে দেশলাই জ্বালাতে দেখা যায়। তার কিছুক্ষণের মধ্যেই নিমেষে গোটা ওয়ার্ডে আগুন ছড়িয়ে পড়ে।
ভগবান দাস জানান, ‘দেশলাই জ্বালানোর পরই আগুন দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। কোনওমতে তিন-চারটি শিশুকে কম্বলে মুড়ে আমি ওয়ার্ড থেকে বেরিয়ে আসি।’ এই সাহসী পদক্ষেপে তিনি বেশ কয়েকটি শিশুকে নিরাপদে বের করতে সক্ষম হন বলে দাবি করেছেন তিনি।
এই ভয়াবহ ঘটনায় মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ শনিবার সন্ধ্যার মধ্যে প্রাথমিক তদন্ত রিপোর্ট জমা করার নির্দেশ দিয়েছেন। রাজ্যের স্বাস্থ্যমন্ত্রী ব্রজেশ পাঠক জানিয়েছেন, ‘আগুন লাগার কারণ খতিয়ে দেখা হচ্ছে। দোষ প্রমাণ হলে কাউকে রেয়াত করা হবে না।’
অন্যদিকে, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী মৃত সদ্যোজাতদের পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানিয়ে পরিবারপিছু ২ লক্ষ টাকা আর্থিক সাহায্যের ঘোষণা করেছেন। পাশাপাশি, যোগী আদিত্যনাথের সরকার মৃতদের পরিবারকে ৫ লক্ষ টাকা এবং আহতদের ৫০ হাজার টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
এই মর্মান্তিক ঘটনায় হাসপাতালের ব্যবস্থাপনা ও নিরাপত্তা ব্যবস্থার গাফিলতি নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। শর্ট সার্কিট না কি নার্সের দায়িত্বজ্ঞানহীন আচরণ—আগুনের প্রকৃত কারণ দ্রুত জানার জন্য অপেক্ষা করছে গোটা দেশ।