কলকাতা: নিয়োগ দুর্নীতির তদন্তে নেমে কেন্দ্রীয় সংস্থার জালে জড়িয়েছেন জেলবন্দি প্রাক্তন মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের ঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচিত মিডলম্যান প্রসন্ন রায়। নিউটাউনে তাঁর বাড়িতে তল্লাশি চালিয়ে সিবিআই অনেক কিছুই বাজেয়াপ্ত করেছে। বাজেয়াপ্ত হওয়া নথির মধ্যে রয়েছে দিলীপ ঘোষের নামের একটি দলিল। সেই যোগসূত্রেই এ বার দিলীপকে গ্রেফতারের দাবি তুললেন কুণাল ঘোষ।
শনিবার তৃণমূল ভবনে যুগ্ম সাংবাদিক বৈঠক করেন কুণাল ও রাজ্য তৃণমূলের সহসভাপতি জয়প্রকাশ মজুমদার। কুণাল বলেন, ‘‘দিলীপ ঘোষের বাড়ির দলিল কী করে নিয়োগ কাণ্ডে দুর্নীতিতে ধৃতের বাড়িতে যায়? আমাদের স্পষ্ট দাবি, দিলীপ ঘোষকে গ্রেফতার করতে হবে। বাইরে থাকলে দিলীপবাবু তদন্তে প্রভাব খাটাবেন।’’
মিডিয়া রিপোর্ট অনুযায়ী, এই প্রসন্ন রায়ের মাধ্যমেই নিয়োগ দুর্নীতির টাকা তোলা হত বলে অভিযোগ সিবিআই। এই আবহে এবার সেই প্রসন্ন রায়ের বাড়িতে দিলীপ ঘোষের দলিল মেলায় শোরগোল পড়ে গিয়েছে। প্রসন্নর বাড়ি থেকে উদ্ধার হওয়া জিনিসের তালিকা বা সিজার লিস্টের আট নম্বর আইটেমটি হল এই দলিল। সৌভিক মজুমদার এবং দিলীপকুমার ঘোষের মধ্যে ২০২২ সালের ২২ এপ্রিল একটি ডিড হয়েছিল। দক্ষিণ ২৪ পরগনার একটি জমি কেনাবেচার ডিড সেটি। জমিটি সৌভিক মজুমদারের থেকে কিনেছেন দিলীপ।
দলিল-কাণ্ডে শোরগোলের মধ্যেই অভিযোগের সুরে কুণাল বলেন, ‘‘নিয়োগ দুর্নীতিতে ধৃত প্রসন্ন রায়ের বাড়ি থেকে দিলীপ ঘোষের বাড়ির দলিল উদ্ধার হয়েছে। সিবিআই এই নথি উদ্ধার করেছে। সিবিআই প্রথমে গোপন করল। সিজার লিস্ট জমা দেওয়া হয়নি প্রথমে। আইনজীবীদের তরফে দাবি ওঠায় দেওয়া হয়।’’
কেন্দ্রীয় এজেন্সি দিয়ে রাজ্যের শাসকদলের উপর চাপ তৈরি করার অভিযোগ সামনে রেখে কুণাল বলেন, “আমরা লক্ষ্য করেছি অভিযোগের ছুতো দিয়ে তৃণমূলকে কুৎসা করা হচ্ছে। কেন্দ্রীয় এজেন্সির ক্রেডিবিলিটি নষ্ট করে দিচ্ছেন বিজেপি নেতারা। চাপ তৈরি করছে। নিরপেক্ষ তদন্ত করা হোক। একেবারে পক্ষপাত দুষ্ট ভূমিকা হলে আমাদের প্রতিবাদ হবে৷ নারদ কেসে এর আগে তৃণমূলের নেতা-মন্ত্রী গ্রেফতার হয়েছে। যদিও এফআইআরে নাম থাকা সত্ত্বেও শুভেন্দুর বাড়িতে যায়নি।”
এ বিষয়ে বিজেপির সর্বভারতীয় সহ-সভাপতি দিলীপ ঘোষের বক্তব্য, “এটা আমার দলিল, আমার বাড়ির দলিল। ও যেখানে থাকে ওখানেই আমি ফ্ল্যাট কিনেছি। সেই দলিলের আসল কপি ব্যাঙ্কে জমা আছে, যেখান থেকে লোন নেওয়া হয়েছে। আরেকটা কপি বিদ্যুতের মিটারের নাম পরিবর্তন করার জন্য। এর জন্য জমির দলিল দিতে হয়। সেটাই ওকে দিই। ও যেহেতু ওখানে পরিচিত, ওখানে থাকে। সেইদিন তাঁর বাড়িতে রেইড হয়। ওটা নিয়ে গেছে। ওটা আমারই দলিল।”
আরও পড়ুন: বিতর্কিত মন্তব্যের জের, দুঃখপ্রকাশ করে রাষ্ট্রপতিকে চিঠি পাঠাচ্ছেন মন্ত্রী অখিল গিরি