কী ভাবে এত ভয়াবহ দুর্ঘটনার কবলে করমণ্ডল এক্সপ্রেস

ওড়িশার বালেশ্বরের কাছে বাহানাগা বাজার স্টেশন এলাকায় ভয়াবহ ট্রেন দুর্ঘটনা। একটি নয়, দুর্ঘটনার কবলে এক সঙ্গে তিনটি ‌ট্রেন। হাওড়া-চেন্নাই করমণ্ডল এক্সপ্রেস, যশবন্তপুর-হাওড়া এক্সপ্রেস এবং একটি মালগাড়ি – তিনটি ট্রেন এই দুর্ঘটনার কবলে পড়ে। শুক্রবার সন্ধ্যার সেই দুর্ঘটনায় উদ্ধার একের পর এক মৃতদেহ।

জানা গিয়েছে, শুক্রবার দুপুর ৩টে ১৫ মিনিট নাগাদ শালিমার স্টেশন থেকে ছাড়ে ১২৮৪১ আপ করমণ্ডল এক্সপ্রেস। পশ্চিম মেদিনীপুরের খড়্গপুর স্টেশন ছাড়ে বিকেল সওয়া ৫টায়। সন্ধ্যা সাড়ে ৬টা নাগাদ ট্রেনটি পৌঁছয় বালেশ্বরে। কাছেই বাহানগা বাজারের কাছে দুর্ঘটনার কবলে পড়ে ২৩ কামরার ট্রেনটি। তবে দুর্ঘটনা কী করে ঘটেছে, তার একাধিক বিবরণ পাওয়া যাচ্ছে।

স্থানীয় একটি সূত্রের দাবি, প্রথমে করমণ্ডল এক্সপ্রেসই তীব্র গতিতে গিয়ে ধাক্কা মারে একই লাইনে আগে আগে চলতে-থাকা একটি মালগাড়ির পিছনে। দুর্ঘটনার অভিঘাতে করমণ্ডল এক্সপ্রেসের ইঞ্জিনটি মালগাড়ির উপরে উঠে যায়। ২৩টি কামরার মধ্যে ১৫টি কামরা লাইন থেকে ছিটকে পড়ে পাশের ডাউন লাইনে ও নয়ানজুলিতে। সেই লাইন দিয়ে তখন আসছিল ডাউন যশবন্তপুর-হাওড়া সুপারফাস্ট এক্সপ্রেস। করমণ্ডল এক্সপ্রেসের লাইনচ্যুত কামরাগুলি গিয়ে পড়ে ডাউন লাইনের উপর। যশবন্তপুর-হাওড়া ডাউন ট্রেনটি সেই বেলাইন কামরাগুলির উপর এসে পড়ে। হাওড়াগামী সেই ট্রেনটিরও দু’টি কামরা লাইনচ্যুত হয়।

অন্য একটি মতে, সুপারপাস্ট করমণ্ডল এক্সপ্রেস বেশ গতিতে চলছিল। তবে, যশবন্তপুর-হাওড়া এক্সপ্রেসের গতি খুব বেশি ছিল না। দুটি ট্রেন পাশাপাশি একে অপরকে অতিক্রম করার সময়, কোনো ভাবে যশবন্তপুর-হাওড়া এক্সপ্রেস ট্রেনটি লাইনচ্যুত হয়েছিল এবং পাশ থেকেই ধাক্কা মারে করমণ্ডল এক্সপ্রেসকে। সেই ধাক্কায় লাইন থেকে ছিটকে যায় প্রচণ্ড গতিতে থাকা করমণ্ডল এক্সপ্রেসও। রেল কর্তাদের অনুমান, করমণ্ডল এক্সপ্রেসের পাশের ট্র্যাকে ছিল আরেকটি মালগাড়ি। সেই মালগাড়িটিকে পাশাপাশিই ধাক্কা মারে লাইনচ্যুত করমণ্ডল এক্সপ্রেস। মালগাড়িটির উপরে উঠে যায় করমণ্ডল এক্সপ্রেসের ইঞ্জিন।

শনিবার ভোরে ওড়িশার মুখ্যসচিব পিকে জেনা জানিয়েছেন, একটি যাত্রীবাহী ট্রেন অন্য একটি ট্রেনের লাইনচ্যুত বগিকে ধাক্কা দেওয়ার কারণেই এই বড়োসড়ো দুর্ঘটনায়। এখনও পর্যন্ত মৃতের সংখ্যা ২০৭। আহত ৯০০ জনেরও বেশি। প্রত্যক্ষদর্শীদেরও আশঙ্কা, মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে। উদ্ধারকাজ যত এগোবে, নিহত এবং আহতের সংখ্যা আরও বাড়বে। দুর্ঘটনাগ্রস্ত ট্রেনে অনেক যাত্রী আটকে রয়েছেন বলেও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানাচ্ছেন। তবে রেলসূত্রে মৃতের সংখ্যা ৮৮ বলে জানানো হয়েছে। আহত ৬০০ জনেরও বেশি।

Related posts

বিকেল ৫টা পর্যন্ত বাংলার সাত লোকসভা কেন্দ্রে ভোট পড়ল ৭৩ শতাংশ

হুগলির ধনিয়াখালিতে বিক্ষোভের মুখে লকেট, অশান্ত পরিস্থিতি

ভোট চলাকালীন ঝেঁপে বৃষ্টি, ছাতা মাথায় ভিড় ভোটারদের