নিজস্ব প্রতিনিধি, বরানগর : কথা ছিল সকাল ন’টায় রোড শো শুরু হবে। সে রকমই মাইকে প্রচার চলছিল বরানগর এলাকায়। কিন্তু বিজেপি প্রার্থী পার্ণো মিত্রর সমর্থনে মিঠুন চক্রবর্তীর রোড শো শুরু হল সকাল ১১টায় নাগাদ।
বরানগর বিধানসভা। যেখানে একদা প্রার্থী হয়েছিলেন জ্যোতি বসু। তারপর থেকে বরাবরই রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব এখানে প্রার্থী হয়েছিলেন। কিন্তু এবার সেই ঐতিহ্যে বদল এনেছে বিজেপি। রাজনীতিতে একেবারে আনকোরা, টলি অভিনেত্রী পার্ণো মিত্রকে প্রার্থী করেছে তারা।
কেন পার্নো মিত্রকে প্রার্থী করা হল? বিজেপির কাউকে পাওয়া গেল না প্রার্থী করার জন্য? এই প্রশ্ন আদি বিজেপির অনেক করেছেন। সরাসরি উত্তর না মিললেও ঠোরেঠোরে গোষ্ঠী দ্বন্দেরই ইঙ্গিত মিলেছে।
বরানগরে বিজেপি অনেক আগে থেকেই তাদের শক্তি বাড়িয়েছে। তৃণমূল থেকে বিক্ষুব্ধ একটি অংশ নাম লিখিছে বিজেপিতে। তাই প্রশ্ন ওঠে বরানগরের মতো রাজনৈতিক সচেতন এলাকায় কি অভিনেত্রী প্রার্থীকে দিয়ে সাফল্য আসবে?
তবে এ সব প্রশ্ন এখন অতীত। যে দাঁড়িয়েছেন, তাঁকে জেতাতেই হবে। এই লক্ষ্য নিয়ে মাঠে নেমে পড়েছেন দলের কর্মী-সমর্থকরা। তাই জমায়েত আরও জোরালো করার জন্য একটু বেলা করে শুরু হয়েছে মিঠুনের রোড-শো। এমনটাই যুক্তি এক মণ্ডল কর্তার।
ভিড় ছিল। শুধু বরানগর বিধানসভা নয় আশপাশের এলাকা থেকেও বহু মানুষ এসেছিলেন এই রোড শোতে যোগ দিতে। ডিজে আর ডঙ্কা, চচ্চরি বাজনা, সঙ্গে নাচ। কিছুরই কম ছিল না। ডিজে গানের মাঝে-মাঝেই বাজছিল মিঠুনের সেই পরিচিত শ্লোগান। ‘শালা মারব এখানে লাশ পড়বে শশ্মানে।’
১১টা নাগাদ রোড-শো শুরু হয়। গাড়িতে উঠে মিঠুন হাত নাড়তেই উচ্ছ্বাস, জয় শ্রীরাম ধ্বনি। আবেগের বশে কেউ একজন বলে দিলেন, ‘মিঠুনদা, নাচুন না!’
সিঁথির মোড় থেকে গোপাল ঠাকুর রোড হয়ে ডানলপে শেষ হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু বনহুগলী মোড়ে এসে হঠাৎ মিঠুন রোড-শোর গাড়ি থেকে নেমে তাঁর নিজস্ব গাড়ি করে হাত নাড়তে নাড়তে চলে গেলেন। হতাশ হলেন পথের পাশে দাঁড়িয়ে থাকা মানুষজন।
কেন চলে গেলেন? তবে কি রাস্তার দু’পাশে লোক কম ছিল? নাকী অন্য কোনো কারণ?
বরানগর বিধানসভায় মিঠুনের উপস্থিতি ভোটে প্রভাব ফেলবে? হাতে গরম উত্তর পাওয়া।
মিঠুনকে দেখার জন্য রাস্তার পাশে দাঁড়িয়ে থাকা বছর পঁয়তাল্লিশের এক মহিলা বললেন, ‘‘আসলে কাছ থেকে মিঠুনদকে দেখার খুব ইচ্ছে ছিল তাই এলাম আর কী। ভোট আমি আমার মতো দেবো। ওর সঙ্গে এসবের সম্পর্ক নেই।’’