সরকারি চাকরিতে কোটাকে কেন্দ্র করে বৈষম্যের অভিযোগ তুলে বাংলাদেশে ছাত্র আন্দোলন কার্যত অগ্নিগর্ভ চেহারা নিয়েছে।
ঢাকা, চট্টগ্রাম-সহ বাংলাদেশের বিভিন্ন প্রান্তে কোটা বিরোধী আন্দোলন এবং সংঘর্ষে নিহতের সংখ্যা বেড়ে হল ১৯। তাঁদের মধ্যে বেশিরভাগ মৃত্যুর খবরই এসেছে ঢাকা থেকে। শুধু ছাত্র নয়, নিহতদের মধ্যে রয়েছেন ব্যবসায়ী থেকে শুরু করে সাংবাদিকও।
বাংলাদেশ জুড়ে এই ভয়াবহ পরিস্থিতির জেরে সেখানে অবস্থিত ভারতীয় হাইকমিশন, সিলেট, ঢাকা, চট্টোগ্রাম, খুলনায় হাইকমিশনের দফতের ২৪ ঘণ্টার হেল্পনাইন নম্বর চালু করেছে। সেখানে অবস্থিত ভারতীয়দের কোনও রকমের প্রয়োজন পড়লে এই নম্বরে যোগাযোগ করার কথা বলা হয়েছে।
কী কারণে এই আন্দোলন এবং সংঘর্ষ?
২০১৮ সালেও একই বিষয়ে আন্দোলনে উত্তাল হয়ে উঠেছিল দেশটি। সরকারি চাকরিতে নিয়োগের ক্ষেত্রে সে দেশে মোট ৫৬ শতাংশ আসন সংরক্ষিত ছিল এবং ৪৪ শতাংশ আসন সাধারণের জন্য নির্ধারিত ছিল। এই ৫৬ শতাংশের মধ্যে স্বীকৃতিপ্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধাদের স্বজনদের জন্য ৩০ শতাংশ, নারীদের জন্য ১০ শতাংশ, বিভিন্ন জেলার জন্য ১০ শতাংশ, জনজাতিদের জন্য ৫ শতাংশ এবং প্রতিবন্ধীদের জন্য ১ শতাংশ সংরক্ষিত পদ ছিল। ২০১৮ সালে সংরক্ষণ বিরোধী আন্দোলন ছড়িয়ে পড়ায় প্রধানমন্ত্রী হাসিনা নির্দেশ জারি করে মুক্তিযোদ্ধার স্বজনদের জন্য ৩০ শতাংশ, নারীদের জন্য ১০ শতাংশ এবং জেলা খাতে ১০ শতাংশ সংরক্ষণ বাতিল করে দেন। রাখা হয় শুধু জনজাতিদের ৫ শতাংশ এবং প্রতিবন্ধীদের ১ শতাংশ সংরক্ষণ। তখনকার মতো আন্দোলনে ইতি টানেন ছাত্রেরা। পরে সাত জন মুক্তিযোদ্ধার স্বজন ২০১৮-র সংরক্ষণ বাতিলের নির্দেশনামার বৈধতাকে চ্যালেঞ্জ করে ২০২১-এ হাই কোর্টে যান।
গত ৫ জুন হাই কোর্ট রায় দেয়, হাসিনা সরকারের নির্দেশ অবৈধ। নির্দেশনামা বাতিলের অর্থ ফের আগের মতো সংরক্ষণ ফিরে আসা। তার প্রতিবাদেই ফের আন্দোলনে নামেন ছাত্ররা। তাঁরা দাবি করেন, স্থায়ী ভাবে সরকারি নিয়োগ থেকে সব ধরনের কোটা ব্যবস্থা বাতিল করতে হবে। হাসিনা সরকার হাই কোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগে আবেদন করেছে। রবিবার সেই মামলার শুনানির দিন ধার্য করা হয়েছে।