কাশ্মীরের পহেলগাঁওয়ে ভয়াবহ জঙ্গি হামলার পর এবার সামনে এল এক সন্দেহভাজন জঙ্গির ছবি। সংবাদমাধ্যম ইন্ডিয়া টুডে-র প্রতিবেদন অনুযায়ী, ছবিটিতে দেখা যাওয়া ব্যক্তিকে হামলাকারীদের মধ্যে একজনের বলে দাবি করা হয়েছে। যদিও জঙ্গির মুখ দেখা যায়নি, তবু তার হাতে থাকা একে-৪৭ এবং পরনের মেটে রঙা কুর্তা স্পষ্ট দেখা গিয়েছে। পিছন থেকে তোলা ছবিটি নিয়ে ইতিমধ্যেই চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে গোটা দেশে। তবে সরকারি ভাবে এই ছবি নিয়ে এখনও কোনো মন্তব্য করা হয়নি।
মঙ্গলবার অনন্তনাগ জেলার বৈসরন উপত্যকায় ঘটে এই রক্তক্ষয়ী হামলা। পর্যটকে ঠাসা এলাকায় আচমকা এলোপাথাড়ি গুলি চালায় অজ্ঞাত বন্দুকধারীরা। মাত্র কয়েক মিনিটের মধ্যে মৃত্যু হয় ২৬ জনের—তাঁদের মধ্যে বেশিরভাগই ছিলেন পর্যটক। কারও স্বামী নিহত, কারও বা সন্তান। এমন নির্মমতায় স্তব্ধ দেশ।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, চার থেকে ছ’জন জঙ্গি হামলায় অংশ নেয়। প্রত্যেকের পরনে ছিল সেনা বা পুলিশের পোশাক। তাঁদের হাতে ছিল অত্যাধুনিক একে-৪৭ রাইফেল। হামলার ধরন দেখে স্পষ্ট, এটি ছিল পূর্বপরিকল্পিত ও সুসংগঠিত আক্রমণ।
জঙ্গি সংগঠন ‘দ্য রেজিস্ট্যান্স ফ্রন্ট’ বা টিআরএফ এই হামলার দায় স্বীকার করেছে। ২০১৯ সালে সংবিধানের ৩৭০ অনুচ্ছেদ বিলোপের পরে পাক-সমর্থিত লশকর-ই-ত্যায়বার ছায়া সংগঠন হিসাবে উঠে আসে এই টিআরএফ। তাদের বিরুদ্ধেই এখন তৎপর হয়েছে নিরাপত্তা বাহিনী।
হামলার তদন্তে ইতিমধ্যেই নামে জাতীয় তদন্ত সংস্থা (NIA)। পহেলগাঁও এবং সংলগ্ন অঞ্চলে শুরু হয়েছে ব্যাপক তল্লাশি ও নজরদারি। ছবিতে ধরা পড়া বন্দুকধারীর পরিচয় জানার চেষ্টা চলছে।
বিশ্ব জুড়ে এই হামলার নিন্দা করেছেন বিভিন্ন রাষ্ট্রপ্রধান। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প, রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন এবং ইতালির প্রধানমন্ত্রী জর্জিয়া মেলোনি ভারতবাসীর প্রতি তাঁদের সমবেদনা জানিয়েছেন।
এই ঘটনায় নতুন করে প্রশ্ন উঠছে উপত্যকার নিরাপত্তা নিয়ে। পর্যটন মরশুমে এমন হামলা প্রশাসনিক গাফিলতির দিকেই কি ইঙ্গিত করছে? তদন্ত চলছে, উত্তর দেবে সময়। তবে এতটুকু নিশ্চিত—দেশ জুড়ে এই হামলার নিন্দা ও অপরাধীদের দ্রুত গ্রেপ্তারের দাবি ক্রমেই জোরাল হচ্ছে।