ডেস্ক: না ফেরার দেশে সুব্রত মুখোপাধ্যায়। একের পর এক হার্ট অ্যাটার্ক। সবরকম ভাবে চেষ্টা করলেন ডাক্তাররা। কিন্তু পারলেন না। না ফেরার দেশে চলে গেলেন বর্ষীয়ান এই রাজনীতিবিদ। সুব্রত মুখোপাধ্যায়ের প্রয়াণে রাজনীতিতে একটা গভীর শূন্যতা সৃষ্টি করল। বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ৯টা নাগাদ এসএসকেএম হাসপাতালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি। তাঁর বয়স হয়েছিল ৭৫ বছর। ‘জীবনে অনেক দুর্যোগ দেখেছি, সুব্রতদার মৃত্যুর মতো দুর্যোগ কখনও দেখেনি। সুব্রতদার মরদেহ দেখতে পারব না।’ সুব্রত মুখোপাধ্যায়ের প্রয়াণের পর ভেঙে পড়লেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
এসএসকেএমে দাঁড়িয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ই জানান, “সুব্রত মুখোপাধ্যায় প্রয়াত। কালীপুজোতে এ ভাবে আলো নিভে যাবে ভাবতে পারিনি। আমি সুব্রতদার মৃতদেহ দেখতে পারব না।”
দীর্ঘদিনের রাজনৈতিক সহযোগী তথা রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে পৌঁছনো মাত্রই হাসপাতালে হাজির হন তিনি। বেশ কিছুক্ষণ হাসপাতালে কাটানোর পর মুখ্যমন্ত্রীই ঘোষণা বলেন, ‘আলোর দিনে এতবড় অন্ধকার, ভাবতেও পারিনি। অনেক দুর্যোগ এসেছে, কিন্তু এটা ভীষণ বড় দুর্যোগ। সুব্রত মুখোপাধ্যায়ের মতো মানুষ, এত প্রাণবন্ত তিনি, পার্টি অন্ত প্রাণ আর হবে কিনা জানি না। সেদিনও দেখা হল, হাসল। বলল আবার জেলায় জেলায় যাব। কিন্তু কী যে হল। বিরাট হার্ট অ্যাটাক হল। ডাক্তাররা চেষ্টা করেছিলেন অনেক।
আরও পড়ুন: প্রয়াত রাজ্যের পঞ্চায়েতমন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায়
দার্জিলিংয়েও এমন হয়েছিল একবার, অনেক কষ্ট করে আমরা ফিরিয়ে এনেছিলাম। কিন্তু এবার আর হল না।”
ফিরহাদ হাকিম বলেন, “মমতাদি আসতে আসতে পুরো ভেঙে পড়েছিলেন। বলছিলেন জীবনে অনেক ঝড় ঝাপ্টা দেখেছি। কিন্তু এরকম ভাবে সুব্রতদার চলে যাওয়া ভাবতে পারি না। আজ আমাদের বিরাট ক্ষতি। ৯টা ২২-এ সুব্রতদা শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেছেন। সিভিয়ার কার্ডিয়াক অ্যারেস্ট। স্টেন্ট বসে গিয়েছিল। বাথরুম থেকে ঘরে ঢোকার সময় একটা সিভিয়ার হার্ট অ্যাটাক। পরে আবারও হার্ট অ্যাটাক।”
বাংলার রাজনীতির বর্ণময় চরিত্র সুব্রত মুখোপাধ্যায়। বলা যেতে পারে, শেষ হল এক অধ্যায়। ষাটের দশকে কংগ্রেসী ঘরানার রাজনীতিতে হাতেখড়ি হয়েছিল তাঁর। শুরু করেছিলেন ছাত্ররাজনীতি দিয়েই। প্রিয়রঞ্জন দাশমুন্সির সঙ্গেই উত্থান তার। ১৯৭২-১৯৭৭ তথ্য সংস্কৃতি দফতরের এর মন্ত্রী ছিলেন। ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করেছেন সিদ্ধার্থ শংকর রায়ের সঙ্গে। কলকাতার ৩৬ তম মেয়র তিনি। ২০০০ থেকে ২০০৫ সাল মেয়র পদে বহাল ছিলেন তিনি।