কার্গিল বিজয় দিবসের আজ ২৩ বছর পার

কার্গিল বিজয় দিবসের আজ ২৩ বছর পূর্ণ হল। ১৯৯৯ সালের জুলাইয়ে কার্গিলে পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে যুদ্ধে জয়ী হয় ভারতীয় সেনা। নিজেদের জীবন উৎসর্গ করে দেশের সম্মানরক্ষা করেছিলেন সেনা জওয়ানরা।

১৯৯৯ সালের মে-জুলাই মাসে কাশ্মীরের কার্গিল জেলায় ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে যুদ্ধ হয়। পাকিস্তানি সেনা নিয়ন্ত্রণ রেখা পেরিয়ে ভারতে অনুপ্রবেশ করলে, যুদ্ধ অনিবার্য হয়ে ওঠে। কার্গিলের উঁচু দুর্গম পাহাড়ে অনুপ্রবেশ করে ঘাঁটি তৈরি করে পাকিস্তানি সেনার দল। ভারতীয় সেনাবাহিনী এই বিষয়ে অবগত ছিল না। কিন্তু যখন ভারতীয় সৈন্যরা জানতে পারেন, সেই মুহূর্তে তাঁরা পাকিস্তানি সৈন্যদের সেখান থেকে উৎখাত করতে তৎপর হন।

প্রতি বছর ২৬ জুলাই দেশজুড়ে পালিত হয় এদিনটি। ভারতীয় সৈন্যদের আত্মত্যাকে স্মরণ করেন দেশবাসী। ৫০০-র বেশি ভারতীয় সেনা মাতৃভূমিকে রক্ষা করতে গিয়ে জীবন উৎসর্গ করেছিলেন। এই যুদ্ধে তিন হাজারের বেশি পাকিস্তানি সেনা ও সন্ত্রাসী নিহত হয়েছিল। কার্গিল যুদ্ধ শুরু হয়েছিল ৩ মে। কারণ ওই দিন থেকেই সন্ত্রাসীরা অনুপ্রবেশ শুরু করেছিল ভারতীয় ভূখণ্ডে। ২৬ জুলাই যুদ্ধ শেষ হয়। পাকিস্তানি সেনা ও সন্ত্রাসবাদীদের ভারতীয় ভূখণ্ড থেকে পালাতে বাধ্য করে ভারতীয় সেনা। কার্গিলের সেই অপারেশন বিজয় আজও ভারতীয় সেনার গর্ব। দেশবাসীরও।

৩ মে, ১৯৯৯, স্থানীয় কিছু মানুষ ভেড়া চড়াতে গিয়ে দেখেন, কার্গিলের পার্বত্য অঞ্চলে বেশ কিছু সশস্ত্র পাকিস্তানী সৈন্য এবং সন্ত্রাসীরা অনুপ্রবেশ করছে। সেনা কর্তাদের বিষয়টি জানান তারা। ৫ মে, ১৯৯৯, কার্গিল এলাকায় অনুপ্রবেশ রোখার চেষ্টা করে ভারতীয় সেনা। সেই সময় পাকিস্তানি সেনাদের সঙ্গে লড়াইয়ে পাঁচজন ভারতীয় সেনা শহিদ হন।

১০ মে ১৯৯৯: এর পর পাকিস্তানি সেনারা জম্মু ও কাশ্মীরের অন্য অংশে অনুপ্রবেশ শুরু করে। এলওসির কাছে জুড়ে দ্রাস এবং কাকসার সেক্টরে অনুপ্রবেশ করে তারা। এই দিনে দুপুরে ভারতীয় সেনাবাহিনী ‘অপারেশন বিজয়’ শুরু করে। অনুপ্রবেশের চেষ্টা বন্ধ করতে কাশ্মীর উপত্যকা থেকে বিপুল সংখ্যক সৈন্যকে কার্গিল জেলায় স্থানান্তরিত করা হয়েছিল। তবে পাকিস্তানি সেনাবাহিনী জানায়, তারা ভারতে আক্রমণ করেনি।

পাকিস্তানের এক্স কর্পস কমান্ডার লেফটেন্যান্ট জেনারেল মাহমুদ আহমেদ, মেজর জেনারেল জাভেদ হাসান এবং আশরাফ রশিদ এবং পাকিস্তানের তৎকালীন সেনা জেনারেল পারভেজ মোশাররফ কার্গিলে বেআইনি ভারতের সীমার মধ্যে ঢুকে তা অধিগ্রহন করার পরিকল্পনা করেছিল। পাকিস্তানের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফ এই অভিযান সম্পর্কে জানতেন না বলে দাবি করেছিলেন।

ভারতীয় বায়ুসেনাকে কার্গিলে এলওসি অতিক্রম না করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। ফাইটার পাইলটদের আক্রমণের নতুন কোণ নিয়ে আসতে হয়েছিল কারণ বেশিরভাগ শত্রু কার্যত এলওসি-তে ছিল। পাক বাহিনী ভারতীয় বাহিনীর সাহসিকতার কাছে শেষ পর্যন্ত পরাজিত হয়। ১৪ জুলাই ১৯৯৯ ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী সেনাবাহিনীর ‘অপারেশন বিজয়’ সফলভাবে সম্পন্ন করার ঘোষণা করেন। এবং ২৬ জুলাই, ১৯৯৯ তারিখে তারা যে ভারতীয় ভূখণ্ড দখল করে আসছিল সেখান থেকে প্রত্যাহার করতে বাধ্য হয়।

আরও পড়ুন :

চিরঘুমে পদ্মশ্রী প্রাপ্ত জনদরদী চিকিৎসক সুশোভন বন্দ্যোপাধ্যায়

বাংলার কোচ হিসাবে সম্ভবত দায়িত্ব নিতে চলেছেন লক্ষ্মীরতন শুক্লা

মাঙ্কিপক্সের ৩ উপসর্গে উদ্বেগ বাড়াচ্ছে বিশেষজ্ঞদের

অন্যায়কে আমি সমর্থন করি না: মমতা

‘বঙ্গবিভূষণ’ পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে চাঁদের হাট

Related posts

রাজ্যপালের বিরুদ্ধে শ্লীলতহানির অভিযোগ! চন্দ্রিমা ভট্টাচার্যের নেতৃত্বে পথে তৃণমূল মহিলা কংগ্রেস

মালদহে দেবের হেলিকপ্টারে আগুন, অল্পের জন্য রক্ষা পেলেন তারকা অভিনেতা

নির্বাচনী সভা থেকে ‘চাকরিহারা’দের বড়সড় আশ্বাস প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর