ওয়েবডেস্ক : হিমবাহ ভেঙে তুষারধস নামল উত্তরাখণ্ডের চমোলি জেলায়। রবিবার সকালে জোশীমঠের কাছে ওই তুষারধসের জেরে ধউলিগঙ্গার জলস্তর প্রবল ভাবে বেড়ে যায়। তীব্র জলোচ্ছ্বাসে একের পর এক গ্রাম ভেসে যায়। ভেঙে যায় সেতু।
বাঁধ ভাঙা জল নদীর দু’পাশের বাড়ি ঘর ভেঙে তীব্র গতিতে এগোচ্ছে। চামোলি থেকে ঋষিকেশ যাওয়ার রাস্তায় ইতিমধ্যেই জারি হয়েছে লাল সতর্কতা।
তপোবন বিষ্ণুগড় জলবিদ্যুৎ প্রকল্পের নিকটবর্তী টানেলে আটকে পড়েছিলেন বহু শ্রমিক। এ ছাড়া ঋষিগঙ্গা জলবিদ্যুৎ প্রকল্পটিও পুরোপুরি ভেসে গিয়েছে বলে রবিবার জানিয়েছে চামোলির ডিজিপি।
স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, খোঁজ মিলছে না আরও অনেকেরই। ঋষিগঙ্গা জলবিদ্যুৎ প্রকল্পটির পাশাপাশি তপোবন বিদ্যুৎ কেন্দ্রের টানেলেও আটকে থাকতে পারে বহু শ্রমিক।
শুধু উত্তরাখণ্ড নয়, উত্তরপ্রদেশের গঙ্গার দু’পারেও জারি করা হয়েছে চূড়ান্ত সতর্কতা। ঘটনায় আটকে পড়েছেন বহু পর্যটক। শ্রীনগর ও ঋষিকেশ বাধের লাগোয়া অঞ্চল খালি করে দেওয়া হয়েছে।
উদ্ধার কাজে নেমেছে বায়ু সেনা বাহিনী। জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীর বেশ কয়েকটি দলকে দেরাদুনের জলি গ্রান্ট বিমানবন্দর থেকে উড়িয়ে আনা হয় উত্তরাখণ্ডের ওই এলাকায়। এছাড়া ভারতীয় সেনা বাহিনীর প্রায় ৬০০ জনের বাহিনীও রওনা হয়েছে জোশীমঠের উদ্দেশে।
উদ্ধার কাজের জন্য মোতায়েন করা হয়েছে সেনা বাহিনীর কপ্টার। এ ছাড়া ভারতীয় বায়ু সেনাবাহিনীর কপ্টারও রয়েছে এলাকায়। ঘটনাস্থলে যুদ্ধকালীন তৎপরতায় কাজ শুরু করেছে ভারত-তিব্বত সীমান্তরক্ষী বাহিনী (আইটিবিপি) এবং কেন্দ্র-রাজ্য বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী।
এছাড়া চামোলির রেনি গ্রামে চিকিৎসক দল পাঠানো হয়েছে। জরুরি পরিস্থিতির জন্য জোশী মঠে তৈরি করা হয়েছে ৩০ শয্যার একটি হাসপাতালও। শ্রীনগর, ঋষিকেশ, জলিগ্রান্ট এবং দেরাদুনেও প্রস্তুত রাখা হয়েছে হাসপাতাল।
রবিবারের ঘটনায় টুইট করে উদ্বেগ জানান রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দ, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী, কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ এবং পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
এর আগে ২০১৩ সালে এরকমই মেঘ ভাঙা বৃষ্টি ও হরপা বানে উত্তরাখণ্ডে প্রায় ছ’হাজার মানুষ মারা যান। রবিবার সকালের ঘটনা সেই ভয়ঙ্কর স্মৃতি ফিরিয়ে আনল।