নির্বাচন কমিশনের ‘অনুমতি’ না মিললেও জলপাইগুড়িতে ঝড়ে দুর্গতদের ১ লক্ষ ২০ হাজার টাকা করে অনুদান রাজ্যের

আলিপুরদুয়ার: জলপাইগুড়িতে ঝড়ে দুর্গতদের পর্যাপ্ত আর্থিক ক্ষতিপূরণ নিয়ে চাপানউতোর অব্যাহত। ভোট ঘোষণা হয়ে যাওয়ায় আদর্শ আচরণবিধির কারণে ক্ষতিপূরণের অঙ্ক নিয়েই চলছে বিতর্ক। তবে, নির্বাচন কমিশন ‘অনুমতি’ দিক বা না-দিক, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার ১ লক্ষ ২০ হাজার টাকা করে দেবে ঝড়ে দুর্গতদের।

সম্প্রতি প্রাকৃতিক দুর্যোগে লন্ডভন্ড হয়ে গিয়েছিল জলপাইগুড়ি এবং আলিপুরদুয়ারের বেশ কিছু জায়গা। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে একাধিক বাড়ি। লোকসভা ভোটের জন্য নির্বাচনের আদর্শ আচরণবিধি মেনে ক্ষতিগ্রস্তদের আর্থিক সাহায্য করার জন্য কমিশনের দ্বারস্থ হয়েছিল তৃণমূল। কিন্তু, পর্যাপ্ত অনুমতি না মেলায় বিশেষ নিয়মে ক্ষতিগ্রস্তদের বাড়ি বানিয়ে দেওয়ার ঘোষণা করলেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এর জন্য যদি কেউ কেস করেন, তাতে কোনো আপত্তি নেই মুখ্যমন্ত্রীর!

শুক্রবার আলিপুরদুয়ারে নির্বাচনী সভা থেকে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “জলপাইগুড়িতে যাঁদের মৃত্যু হয়েছে, প্রশাসনের তরফ থেকে ইতিমধ্যেই এক লক্ষ টাকা করে দেওয়া হয়েছে। আহতদের পঞ্চাশ হাজার টাকা করে দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়াও বিভিন্ন ভাবে সাহায্য করা হয়েছে। তাদের বাকি ছিল বাড়ি। যেহেতু নির্বাচন ঘোষণা হয়ে গেছে, তাই নির্বাচন কমিশনের কাছে অনুমতি চেয়েছিলাম। বলেছিলাম, যাঁদের বাড়ি মাটিতে মিশে গেছে, তাঁদের বাড়ি তৈরি করে দেওয়ার অনুমতি দেওয়া হোক। এর জন্য ১ লক্ষ ২০ হাজার টাকা করে দেওয়ার জন্য চিঠি লিখে অনুমতি চেয়েছিলাম। তার পরে অনেক দিন হয়ে গেল।”

মমতা একই সঙ্গে বলেন, “চালু নিয়মানুযায়ীই কাজ হবে। চালু নিয়মানুযায়ী ক্ষতিগ্রস্ত হলে পাঁচ হাজার টাকা আর পুরো ভেঙে পড়লে বিশ হাজার টাকা। ওইটুকু দিয়ে কী হবে। বাড়ি হবে? বিশ হাজার টাকা বাজারে নিয়ে গেলে কটা টিন কিনতে পাওয়া যাবে। বিশ হাজার টাকা করে সরকার দিয়ে দিয়েছে। কিন্তু আজকে আমরা সরকারের সিদ্ধান্ত জানতে পেরেছি এবং এটা বলতে গিয়ে যদি কেই মনে করেন আমার বিরুদ্ধে কেস করবেন,করতে পারেন। গরিব লোকের কথা বলতে গিয়ে আমাকে কেস খেতে হলে খাব। এক বার নয়, হাজার বার কেস খাব। যাঁদের ঘরবাড়ি তৈরি হবে আমরা ১ লক্ষ ২০ হাজার টাকা করেই দেব। যেহেতু ইলেকশন চলছে, আমি নিজে না করি, প্রশাসন করবে। আমার বিপর্যয় সংক্রান্ত বিশেষ আইন খুঁজে বের করেছি। সেই আইনানুযায়ীই টাকা দেওয়া হবে। ইতিমধ্যে বিশ হাজার টাকা দেওয়া হয়েছে। কদিনের মধ্যেই ৪০ হাজার টাকা দেওয়া হবে, বাকিটা পরের কিস্তিতে।”

প্রসঙ্গত, সাম্প্রতিক বিধ্বংসী ঝড় কার্যত পথে বসিয়ে দিয়েছে বহু মানুষকে। অনেকেরই বাড়ি ভেঙে গিয়েছে। ওই রাতেই জলপাইগুড়ি চলে গিয়েছিলেন বাংলার মুখ্য়মন্ত্রী। এরপর তিনি তাঁদের পাশে থাকারও আশ্বাস দিয়েছিলেন। কিন্তু নির্বাচন পর্ব শুরু হয়েছে। আদর্শ নির্বাচনী আচরণ বিধিও লাগু হয়েছে। সেক্ষেত্রে সরাসরি সেই দুর্গতদের জন্য় কিছু ঘোষণা করার ক্ষেত্রে সমস্যাও রয়েছে।

Related posts

তৃতীয় দফায় পশ্চিমবঙ্গের চেয়ে বেশি ভোট পড়েছে অসম ও গোয়ায়

আজ পঁচিশে বৈশাখ, রবীন্দ্রজয়ন্তী উদ্‌যাপন

ভেঙে পড়বেন না, চাকরি বাতিল মামলায় সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ নিয়ে মন্তব্য শিক্ষামন্ত্রীর