রাজ্যের স্বাস্থ্য পরিষেবায় নতুন দিগন্ত খুলতে চলেছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার। এবার মানুষের দুয়ারেই পৌঁছে যাবে হাসপাতাল। অত্যাধুনিক যন্ত্রপাতি-সহ বিশেষ ভ্রাম্যমাণ হাসপাতাল চালু করছে রাজ্য সরকার। স্বাস্থ্য পরিবহণ শাখার নিজস্ব ডিজাইনে তৈরি এই ফাইভ-জি সুবিধাযুক্ত ‘মোবাইল মেডিক্যাল ইউনিট’-কে স্বাস্থ্যকর্তারা মিনি হাইটেক হাসপাতাল বলেই আখ্যা দিচ্ছেন।
প্রতিটি ভ্রাম্যমাণ হাসপাতালে থাকছে চিকিৎসক, নার্স, মেডিক্যাল টেকনোলজিস্ট ও মোবাইল মেডিক্যাল ইউনিট অ্যাটেনডেন্ট। অনলাইন প্রেসক্রিপশন, ইসিজি, রক্ত সংগ্রহ ও পরীক্ষার সুবিধা মিলবে সেখানে। রোগী দেখার জন্য বিশেষ এগজামিনেশন রুমের পাশাপাশি বেশ কিছু ইউনিটে থাকবে পোর্টেবল এক্স-রে ও ইউএসজি মেশিনও।
অগ্রাধিকার পাচ্ছে জঙ্গলমহল ও চা-বাগানের মতো তুলনামূলকভাবে পিছিয়ে পড়া এলাকা। স্বাস্থ্যদপ্তর সূত্রে খবর, মোট ২১০টি মোবাইল হাসপাতাল কেনার সিদ্ধান্ত হয়েছে, যার মধ্যে প্রায় ৩০টিতে এক্স-রে ও ইউএসজি সুবিধা থাকবে। প্রতিটি গাড়ির সঙ্গে যুক্ত থাকছে ভেহিকেল লোকেশন ট্র্যাকিং ডিভাইস, ফলে সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ থাকবে স্বাস্থ্যভবনের কাছে। এই হাসপাতাল প্রত্যন্ত গ্রামে গিয়ে বাড়ি বাড়ি পৌঁছবে।
একেকটি মিনি হাসপাতাল তৈরির খরচ আনুমানিক ৪০ লক্ষ টাকা, আর এক্স-রে ও ইউএসজি-সহ গাড়িগুলির খরচ আরও বেশি। সব মিলিয়ে এই প্রকল্পে প্রায় ১০০ কোটি টাকা বিনিয়োগ করছে রাজ্য সরকার।
শুধু স্বাস্থ্য পরিষেবা নয়, এই প্রকল্পে কর্মসংস্থানেরও সুযোগ তৈরি হচ্ছে। ইতিমধ্যেই মাসে ১৬ হাজার টাকা বেতনে ২৩১ জন চালক এবং মাসে ১৫ হাজার টাকা বেতনে ২৩১ জন মোবাইল মেডিক্যাল ইউনিট অ্যাটেনডেন্ট নিয়োগের বিজ্ঞাপন প্রকাশিত হয়েছে ২৬ আগস্ট।
বিনামূল্যের চিকিৎসা, স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্প এবং ন্যায্য মূল্যের ওষুধের দোকানের পর এবার ‘দুয়ারে হাসপাতাল’ হতে চলেছে মমতার নতুন গেম চেঞ্জার উদ্যোগ—এমনটাই মত স্বাস্থ্য মহলের।
কী কী থাকছে এই ভ্রাম্যমাণ হাসপাতালে:
- ফাইভ-জি সুবিধা
- চিকিৎসক, নার্স ও মেডিক্যাল টেকনোলজিস্ট
- ইসিজি সুবিধা
- মেডিক্যাল এগজামিনেশনের বিশেষ কক্ষ
- পোর্টেবল এক্স-রে
- পোর্টেবল ইউএসজি
- রক্ত সংগ্রহ ও পরীক্ষার ব্যবস্থা