প্রথম পাতা খবর ১০০ দিনের কাজে শূন্য বরাদ্দ! অভিষেকের প্রশ্নে কেন্দ্রের পরিসংখ্যানে ফের স্পষ্ট বাংলার বঞ্চনা

১০০ দিনের কাজে শূন্য বরাদ্দ! অভিষেকের প্রশ্নে কেন্দ্রের পরিসংখ্যানে ফের স্পষ্ট বাংলার বঞ্চনা

9 views
A+A-
Reset

১০০ দিনের কাজের বকেয়া নিয়ে কেন্দ্র–রাজ্য সংঘাত নতুন নয়। তৃণমূল দীর্ঘদিন ধরে অভিযোগ করে আসছে যে রাজনৈতিক কারণে পশ্চিমবঙ্গকে প্রাপ্য অর্থ দেওয়া হচ্ছে না। কেন্দ্র সেই অভিযোগ অস্বীকার করলেও, লোকসভায় দেওয়া নিজেদের তথ্যেই যে অভিযোগ অনেকটাই সত্যতা পেল—তা আরও একবার স্পষ্ট হল গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রকের পরিসংখ্যানে। চলতি অর্থবর্ষে দেশের সব রাজ্যের জন্য কমবেশি মনরেগার অর্থ বরাদ্দ থাকলেও, পশ্চিমবঙ্গের বরাদ্দের জায়গায় স্পষ্টভাবে লেখা—শূন্য

তৃণমূলের লোকসভা দলনেতা অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় সংসদে জানতে চান, ২০২৫ সালের অক্টোবর পর্যন্ত কোন কোন রাজ্যের কত টাকা বকেয়া রয়েছে, বকেয়া মেটাতে কত সময় লেগেছে এবং সেপ্টেম্বর ২০২৫ পর্যন্ত ১০০ দিনের কাজে ব্যবহৃত পণ্যের বকেয়া কত। পাশাপাশি তিনি সময়মতো মজুরি দেওয়া সংক্রান্ত কোনও সার্বজনিক পরিসংখ্যান আছে কি না তাও প্রশ্ন করেন।

জবাবে কেন্দ্রীয় গ্রামোন্নয়ন প্রতিমন্ত্রী কমলেশ পাসওয়ান জানান, রাজ্যের চাহিদা অনুযায়ী দৈনিক ভিত্তিতেই শ্রমিকদের মজুরি সরাসরি তাদের অ্যাকাউন্টে দেওয়া হয় এবং নতুন অর্থবর্ষ শুরুর আগেই আগের অর্থবর্ষের সব বকেয়া মিটিয়ে দেওয়া হয়ে থাকে। কিন্তু তিনি স্পষ্ট স্বীকার করেন—২০২৪–২৫ পর্যন্ত সব বকেয়া মিটেছে বাংলা ছাড়া। দেশের অন্যান্য সব রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল মিলিয়ে যেখানে ৬৯ হাজার কোটি টাকারও বেশি বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে, সেখানে পশ্চিমবঙ্গের বরাদ্দ শূন্য।

এতেই শেষ নয়। কেন্দ্রীয় মন্ত্রক যে তথ্য জানিয়েছে, তাতে আরও দেখা যাচ্ছে—২০২৫–২৬ অর্থবর্ষের অবশিষ্ট বরাদ্দেও বাংলার নাম নেই। ডিসেম্বরের ৩ তারিখ পর্যন্ত ১০০ দিনের কাজের জন্য আরও প্রায় ২০ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে, কিন্তু তাতেও পশ্চিমবঙ্গ বাদ।

এই পরিস্থিতিকে “ইচ্ছাকৃত বঞ্চনা” বলে আক্রমণ শানিয়েছে তৃণমূল। দলের দাবি, সব মিলিয়ে প্রায় ৫২ হাজার কোটি টাকা প্রাপ্য পশ্চিমবঙ্গের। তার মধ্যেই কলকাতা হাই কোর্ট ইতিমধ্যেই নির্দেশ দিয়েছে—১০০ দিনের কাজের বকেয়া কেন্দ্রকে মিটিয়ে দিতেই হবে। কিন্তু কেন্দ্র এখনও অ্যাকশন টেকেন রিপোর্ট চাইছে এবং তহবিল ছাড়ছেনা বলে অভিযোগ।

তৃণমূল শিবিরের বক্তব্য, কেন্দ্রের এই আচরণ শুধু প্রশাসনিক নয়, রাজনৈতিক প্রতিহিংসার বহিঃপ্রকাশ। অন্যদিকে কেন্দ্রীয় শাসকদলের দাবি, রাজ্যের অনিয়ম ও তথ্য জমা না দেওয়াই বরাদ্দ আটকে যাওয়ার কারণ।

কিন্তু প্রশ্ন উঠছে—যখন দেশের সব রাজ্য টাকা পাচ্ছে, তখন শুধুমাত্র পশ্চিমবঙ্গই কেন বঞ্চিত? কেন্দ্রের জবাবে এই প্রশ্নের কোনও স্পষ্ট উত্তর নেই। ফলে রাজনৈতিক চাপানউতোর আরও বাড়বে বলেই মনে করছেন রাজনৈতিক মহল।

আরও খবর

মন্তব্য করুন

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.