ভালোবাসার উৎসব ভাইফোঁটা এবং প্রার্থণার উৎসব ছট পুজো

পঙ্কজ চট্টোপাধ্যায়

বাঙালির বারো মাসে তেরো পাব্বনের অন্যতম হোল কালীপূজোর পরেই ভাইফোঁটা। কিন্তু এ শুধু বাংলা ও বাঙালির নয়।এই অনুষ্ঠান সারা দেশে,এমন কি দেশের বাইরে নেপালে,বাংলাদেশে,শ্রীলঙ্কাতেও পালিত হয়।

আমাদের দেশের উত্তরপ্রদেশ,মধ্যপ্রদেশ,বিহার,ঝাড়খণ্ড ইত্যাদি অঞ্চলে পাঁচদিন ধরে এই অনুষ্ঠান  “ভাইদুজ্” নামে পালিত হয়। রাজস্থান,গুজরাট,মহারাষ্ট্রে, গোয়াতে “ভাইবিজ” বা”ভৌবিজ” নামে পালিত হয়। দক্ষিণ ভারতে “যম দ্বিতীয়া” নামে পালিত হয়। বাংলাতে,বাংলাদেশে,ত্রিপুরায়,আসামে “ভাই দ্বিতীয়া” নামে পালিত হয়। নেপালে,দার্জিলিং  এলাকাতে “ভাইটিকা” নামে পালিত হয়।

এই অনুষ্ঠানের কথা বেদে,উপনিষদে,মহাভারতে পাওয়া যায়। ১২০০ সালে আচার্য  সর্বানন্দ পুরীর “দীপোৎসব কল্প” নামে এক তালপাতার পুঁথিতে পাওয়া যায় যে ৫২৭ খ্রীস্টপূর্বতে এই অনুষ্ঠান শুরু করেন জৈন ধর্মের প্রবক্তা মহাবীর বর্ধমান-এর মহা প্রয়াণের পরে তার বিশেষ অনুগামী রাজা শোকাতুর নন্দী বর্ধন কে পুনরায় রাজ্য শাসনে স্বাভাবিক করতে তার বোন অনসুয়া দেবী রাজাকে কার্ত্তিক মাসের এই দ্বিতীয়ার দিনে রাজটিকা দিয়ে,খাবার খাইয়ে পুনরায় অভিসিক্ত  করেছিলেন। সেই থেকে এই অনুষ্ঠানের প্রচলন।

সে যাই হোক ভাইদ্বিতীয়া আজ আমাদের জীবনে ভাই-বোনের ভালোবাসায় মাখামাখি এক পরমোৎসব।

ছটপুজো

আমাদের দেশের আর এক প্রার্থণার উৎসব হল এই ছট পুজো। মা ষষ্ঠীর মানে দেবী কাত্যায়নীর কাছে কার্ত্তিক মাসের এই দিনের প্রথম সূর্য-কে সাক্ষী  রেখে তার কাছে কলা,আদা,আখ,ইত্যাদি ফল ও ফসল উপহার নৈবেদ্য দিয়ে আমরা প্রার্থনা করি ঘরে ঘরে সকলের জন্য মঙ্গলাকাঙখিতা,আশীর্বাদ। প্রার্থনা করা হয় সম্মৃদ্ধির।

এই ছট পুজো সারা দেশে অতি ভক্তি সহকারে ছট পুজোর দিনের ভোরবেলায় পবিত্র গঙ্গার তীরে, বা কোন নদীর বা কোন জলাশয়ের তীরে সূর্যকে প্রণাম জানিয়ে ভগবানের কাছে প্রার্থণা জানিয়ে এই উৎসব পালিত হয়।

Related posts

কিন্তু মৃত্যু যে ভয়ংকর, সে-দেহে তাহার কোন প্রমাণ ছিল না

২৭ শে এপ্রিল মানে জাগা, জেগে থাকা, জাগানো…

‘কলকাতার যীশু’, ‘উলঙ্গ রাজা’, ‘অমলকান্তি’-র প্রণেতা, শতবর্ষী কবি নীরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তী