ডেস্ক: আতঙ্ক কাটিয়ে, প্রায় ২০ মাস পর ফের বাংলায় সচল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। সকাল থেকে শহর কলকাতা থেকে রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে সরগরম হয়ে উঠেছে পড়ুয়াদের উপস্থিতিতে। এই পরিস্থিতিতে অনেক বিধিনিষেধ মেনে ক্লাস চলবে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলিতে। আপাতত নবম থেকে দ্বাদশ শ্রেণির পড়ুয়ারা স্কুলে যাবে। এরপর ধাপে ধাপে বাকিদেরও ক্লাস চালু হবে। মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশ পেয়েই রাজ্যের শিক্ষা দফতর জেলাগুলিতে নির্দেশিকা পাঠিয়েছে কী ভাবে স্কুল খুলতে হবে।
সংক্রমণ এড়াতে জোর দেওয়া হচ্ছে পরিচ্ছন্নতার উপর।শিক্ষা দফতর জানিয়েছে, ক্লাস শুরুর আধঘণ্টা আগে স্কুলে পৌঁছতে হবে পড়ুয়াদের। স্কুলের করিডর, গেটে নির্দিষ্ট দূরত্ব মেনে চিহ্ন এঁকে দিতে হবে। স্কুলে প্রবেশাধিকার থাকবে না অভিভাবকদের। মূলত এই গাইডলাইনে বলা হয়েছে, প্রত্যেক ছাত্র ছাত্রীকে মাস্ক পরে স্কুলে আসতে হবে। সেই মর্মে বিদ্যালয়গুলিকে নোটিস জারি করতে হবে। এছাড়াও প্রতিটি স্কুলে একটি শয্যাযুক্ত আইসোলেশন রুম রাখতে হবে। আচমকা যদি কেউ অসুস্থ হয়ে পড়ে, তাকে যেন সেখানে স্থানান্তরিত করা যায়।
আরও পড়ুন: রাজ্যে পারদ নেমেছে, বইবে উত্তুরে হাওয়া, জেলায় জেলায় কুয়াশার দাপট
পাশাপাশি শিক্ষক শিক্ষিকাদের জন্য বিশেষ প্রশিক্ষণেরও উল্লেখ রয়েছে এই স্কুল রিওপেন বুকলেটে। যাতে কারও জ্বর এলে বা অসুস্থ হলে প্রাথমিক ভাবে তা সামাল দিতে পারেন স্কুলে স্যার, দিদিমণিরা। আরও একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়েরও উল্লেখ রয়েছে এই গাইডলাইন বুকে। বার বার শিক্ষাবিদ বা চিকিৎসকরা যেটা বলছিলেন, সম্ভব হলে দুই শিফটে ক্লাস হোক। এখানেও বলা হয়েছে, পরিস্থিতি ও পরিকাঠামোর দিকে নজর রেখে প্রয়োজনে স্কুল দুই শিফট অর্থাৎ মর্নিং ও ডে’তে ক্লাস করাতে পারে।
এদিকে জানানো হয়েছে, কোনও খেলাধুলো বা সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান করা যাবে না। হস্টেল খোলা যেতে পারে। তবে, সেই ক্ষেত্রে কঠোর ভাবে কোভিড বিধি মানতে হবে কর্তৃপক্ষকে। স্কুলের হস্টেলে আলাদা আইসোলেশন রুম রাখা বাধ্যতামূলক হবে। স্কুল-কলেজ বা বিশ্ববিদ্যালয়ে যাওয়া কোনও পড়ুয়া কোনও গয়না পরতে পারবে না। প্রার্থনা হবে ক্লাসরুমেই। এদিকে পানীয় জল বা বই ভাগাভাগি করা যাবে না। এদিকে কলেজ বা বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্ষেত্রে ক্যাম্পাসে সচেতনামূলক পোস্টার দিতে হবে। বহিরাগতের প্রবেশ নিষিদ্ধ থাকবে ক্যাম্পাসে।
মহামারী পরিস্থিতির সামান্য উন্নতি হলে চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে দিন কয়েকের জন্য এ রাজ্যে স্কুল খোলা হয়েছিল। প্র্যাকটিক্যাল ক্লাস চলছিল নবম থেকে দ্বাদশ শ্রেণির। কিন্তু শ্রেণিকক্ষে পড়ুয়াদের বসিয়ে ক্লাস বেশিদিন চালানোর ঝুঁকি নেয়নি সরকার। ফলে স্কুল ফের কার্যত বাড়িতেই চলে গিয়েছিল। কিন্তু এবার আর তেমনটা নয়। করোনা বধে একাধিক সতর্কতামূলক ব্যবস্থার মাধ্যমে কার্যত চক্রব্যুহ তৈরি করে পাকাপাকিভাবেই স্কুল, কলেজের তালা খুলে গেল।