রাজ্যের ১০৮ পুরসভার নির্বাচনে সেঞ্চুরি হাঁকাল তৃণমূল কংগ্রেস। শুধুমাত্র দার্জিলিং ও তাহেরপুর পুরসভা দুটি বাদ দিলে বাকি ১০৬ পুরসভায় দেখা গেলো তুমুল সবুজ ঝড়। দার্জিলিংয়ে জিতেছে হামরো পার্টি। আর তাহেরপুর পুরসভা কোনক্রমে নিজেদের দখলে রেখেছে সিপিএম। এছাড়াও এগরা, চাঁপদানি, বেলডাঙা ও ঝালদা পুরসভার ফল হয়েছে ত্রিশঙ্কু।
এই পুরভোটের সব থেকে তাৎপর্যের বিষয় বিজেপি ও কংগ্রেস একটি পুরসভাও দখল করতে পারেনি। আর বামেরা কোনক্রমে তাহেরপুর নিজেদের দখলে রেখে চূড়ান্ত লজ্জার হাত থেকে মুখ বাঁচিয়েছে।
এদিন ভোট গণনার শুরু থেকেই দেখা জয় রাজ্যের প্রায় সব জায়গাতেই সবুজ ঝড়ে উড়ে গেছে বিরোধীরা। এর সব থেকে বড় প্রমাণ ১০৮ পুরসভার মধ্যে ৩০টি পুরসভাই বিরোধীশূন্য। আরও তাৎপর্যের বিষয় হল, বিজেপি বা সিপিএম অথবা কংগ্রেস নয়, তৃণমূলের পরেই জেতার নিরিখে দ্বিতীয় স্থানে উঠে এসেছে নির্দল। আটটি পুরসভায় বিরোধীদের থেকে বেশি আসন পেয়েছে নির্দল।
এই বিরাট জয়ের পর রাজ্যের সাধারণ মানুষের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। পুরভোটে তৃণমূলের জয় নিয়ে টুইট করে তিনি বলেছেন, ‘ এই বিশাল জয়ের জন্য মানুষকে ধন্যবাদ। জয়ী প্রার্থীদের শুভেচ্ছা।’
একইসঙ্গে তাঁর ট্যুইট ‘জয়ের সঙ্গেই দায়িত্ব বাড়ে। যত জিতব, তত নম্র হতে হবে। শান্ত হতে হবে। স্নিগ্ধ হতে হবে।’
দীর্ঘ প্রায় চার দশক পর কাঁথি পুরসভা অধিকারী পরিবারহীন। কাঁথি পুরসভায় ২১ ওয়ার্ডের মধ্যে ১৮টি ওয়ার্ড জিতেছে তৃণমূল কংগ্রেস। বিজেপি পেয়েছে মাত্র ২টি আসন। এমনকি অধিকারী পরিবার পরাজিত তাঁদের নিজেদের ওয়ার্ডেই। অধিকারীদের নিজেদের ওয়ার্ড ১৫ নম্বর ওয়ার্ডেও জিতেছেন তৃণমূল প্রার্থী।
কাঁথির পাশাপাশি প্রথমবার মুর্শিদাবাদের বহরমপুর পুরসভাও দখল করল তৃণমূল কংগ্রেস। প্রায় তিন দশক পর নিজের ‘গড়’ রক্ষায় ব্যর্থ অধীর চৌধুরী। বহরমপুর পুরসভায় ২৮ ওয়ার্ডের মধ্যে তৃনমূলের দখলেই ২২টি ওয়ার্ড। এমনকি অধীরের নিজের ওয়ার্ডেও জয়ী তৃণমূল কংগ্রেস।
কংগ্রেস ও বিজেপি খাতা খুলতে না পারলেও তাহেরপুর নিজেদের দখলে রেখে মুখ রক্ষা হয়েছে বামেদের। এমনকি ওয়ার্ডভিত্তিক ফলাফলেও বিজেপিকে পিছনে ফেলে দু’নম্বরে এখন বামেরা। বামেদের এই উত্থানে স্বাভাবিকভাবেই এখন অনেকটাই খুশির হাওয়া আলিমুদ্দিনে।