যুদ্ধের কারণে রাশিয়ার অন্দরেই বিক্ষোভার মুখে প্রেসিডেন্ট পুতিন

ইউক্রেনের ওপর হামলার প্রতিবাদে রাশিয়ার অন্দরেই উঠেছে প্রেসিডেন্ট পুতিন বিরোধী স্লোগান। প্লেকার্ডে, পোস্টারে পুতিনকে হিটলারের সাথেও তুলনা করা হয়েছে। ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে এখনও পর্যন্ত ১৭০০ বেশি বিক্ষোভকারীকে গ্রেফতার করেছে রাশিয়ান পুলিশ। উল্লেখ্য, বৃহস্পতিবার ভোর থেকে ইউক্রেনের ওপর হামলার নির্দেশ দেয় রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। আর তারপর থেকেই গোটা ইউক্রেন জুড়ে হামলা, আকাশে বারুদের গন্ধ, কান পাতলে সাইরেনের শব্দ, শত শত মানুষ তথা ইউক্রেনের সৈন্যবাহিনীর জওয়ানদের মৃত্যু ছবি এক এক করে সামনে আসে। গোটা বিশ্ব সমেত খোদ রাশিয়ার মানুষকেও এই ছবি শিহরিত করে। এরপর থেকেই রাশিয়ার অন্দরে শুরু হয় সরকার বিরোধী স্লোগান হাজার হাজার মানুষ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের বিরুদ্ধে আন্দোলনের ডাক দিয়ে পথে নেমে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করে। রাশিয়ার ৫৪টি শহরে প্রায় ১৭৪৫ জন মানুষকে সরকার বিরোধী আন্দোলনের দরুন গ্রেফতার করা হয়। শুধুমাত্র মস্কোতেই গ্রেফতার হয় ৯৫৭ জন। বিক্ষোভের আঁচ তীব্র থেকে আরও তীব্রতর হয় স্যোশাল মিডিয়ার দৌলতে। ইউক্রেনের রাজধানী কিভে সাইরেন বিস্ফোরিত হওয়ার সাথে সাথে সেখানে এবং অন্যান্য শহরে বড় বিস্ফোরণের শব্দ শোনা গিয়েছিল, রাশিয়ানরা ক্রেমলিনের আক্রমণ বন্ধ করার দাবিতে খোলা চিঠি এবং অনলাইন পিটিশনে স্বাক্ষর করছিল, ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট জানান, রুশ বাহিনীর আক্রমনে কমপক্ষে ১৩৭ জন নিহত হয়েছে, আহত বহু। এদিকে, রাশিয়ার এক আইনজীবী লেভ পোনোমাভিভ রাশিয়ার এই সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে এক পিটিশন দাখিল করেন, দিনের শেষে এই পিটিশনের পক্ষে প্রায় ৩৩০০০০ টিরও বেশি স্বাক্ষর সংগ্রহ করা হয় ।

২৫০ টিরও বেশি সাংবাদিক আগ্রাসনের নিন্দা জানিয়ে একটি খোলা চিঠিতে তাদের নাম রেখেছেন। অন্যটিতে প্রায় ২৫০ জন বিজ্ঞানী স্বাক্ষর করেছেন, মস্কো এবং অন্যান্য শহরের ১৯৪ জন পৌরসভার সদস্য স্বাক্ষর করেছিলেন।

অন্যদিকে, ফেসবুকে পুতিনের বিরুদ্ধে নিজের ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন, রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় অর্থায়নে মস্কো থিয়েটারের পরিচালক ইয়েলেনা কোভালস্কায়া। ফেসবুকে তিনি ঘোষণা করেছেন যে তিনি তার চাকরি ছেড়ে দিচ্ছেন, কারন তার পক্ষে “একজন হত্যাকারীর জন্য কাজ করা এবং তার দেওয়া বেতন গ্রহন করা অসম্ভব”।

বৃহস্পতিবার বিকেলে রাশিয়ার তদন্ত কমিটি রাশিয়ানদের মনে করিয়ে দিয়ে একটি সতর্কতা জারি করেছে। যেখানে বলা হয়েছে এই বিক্ষোভ রাশিয়ান আইনের বিরুদ্ধে। এদিকে, কর্তৃপক্ষের চাপ সত্ত্বেও, বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় মস্কোর কেন্দ্রস্থলে এক হাজারেরও বেশি মানুষ জড়ো হয়ে স্লোগান দিয়েছিল ‘যুদ্ধ না’ পাশ দিয়ে যাওয়া গাড়িগুলো তাদের হর্ন বাজিয়ে সেই মতামতকে সম্মতি জানায়। রাশিয়ার সেন্ট পিটার্সবার্গে শত শত এবং ইয়েকাটেরিনবার্গে কয়েক ডজন মানুষ রাস্তায় নেমে এসে বিক্ষোভ প্রদর্শন করেন। রাশিয়ান পার্লামেন্টের উচ্চকক্ষের স্পিকার ভ্যালেন্টিনা মাতভিয়েনকো বলেছেন, যারা হামলার বিরুদ্ধে কথা বলেছেন তারা কেবল তাদের ‘ক্ষণস্থায়ী সমস্যা’ নিয়ে চিন্তা করছেন।

Related posts

মাধ্যমিকে পাশের হার ৮৩.৩১ শতাংশ, ছেলেদের টেক্কা দিল মেয়েরা

আজ মাধ্যমিকের ফলাফল, কখন থেকে কোথায় কী ভাবে দেখা যাবে?

বিদায় নেবে তাপপ্রবাহ! নামবে স্বস্তির বৃষ্টি