মোদী সরকারের ‘দিল্লিকেন্দ্রিকতা’র বিরুদ্ধে আক্রমণ। কলকাতা-সহ দেশের চার প্রান্তে চারটি রাজধানী করার দাবি তুললেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এই নিয়ে সংসদে দলীয় সাংসদদের সক্রিয় হওয়ার নির্দেশও দিয়েছেন তৃণমূল নেত্রী।
নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুর ১২৫তম জন্মজয়ন্তী উপলক্ষে শনিবার শ্যামবাজার থেকে রেড রোড পর্যন্ত দীর্ঘ পদযাত্রা করেন মুখ্যমন্ত্রী। মিছিলের শেষে বক্তৃতাও করেন তিনি। সেখানেই তিনি দাবি তোলেন, ‘‘ভারতের দক্ষিণ, উত্তর, পূর্ব এবং উত্তর-পূর্ব— এই চারটি প্রান্তে চারটি রাজধানী হোক।’’ তাঁর প্রশ্ন, ‘‘দিল্লিতে কী আছে? কেন একটা জায়গায় সংসদ সীমাবদ্ধ থাকবে?’’ দেশে ৪ রাজধানীর পাশাপাশি সংসদের অধিবেশনেরও বিকেন্দ্রীকরণ চেয়েছেন মমতা। তাঁর দাবি, ‘‘ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে চারটি জায়গায় অধিবেশন হোক। আমরা সকলের জন্য বলছি। দৃষ্টিভঙ্গি বদলাতে হবে। ওয়ান লিডার, ওয়ান নেশনের মূল্য কী আছে?’’
এই দাবির পিছনে মুখ্যমন্ত্রীর যুক্তি, যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামো তুলেই দিয়েছে মোদী সরকার। তিনি বলেন, ‘‘নেতাজির ভাবনাপ্রসূত যোজনা কমিশন তুলে দেওয়া হয়েছে। এখন তৈরি হয়েছে নীতি আয়োগ। এখন কেন্দ্র আর রাজ্যের সঙ্গে কোনও বিষয়ে কথা বলে না। আলোচনা করে না। যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামো ধ্বংস হয়ে গিয়েছে।’’ এভাবেই আরও এক বার যোজনা কমিশন ফিরিয়ে দেওয়ার দাবিতেও শান দিয়েছেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী।
নেতাজির জন্মদিনকে ‘জাতীয় ছুটি’ ঘোষণার জন্য আগেই প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি লিখেছেন মমতা। এবার ‘পরাক্রম দিবস’কে কার্যত অগ্রাহ্য করে নেতাজির জন্মদিনকে ‘দেশনায়ক দিবস’ হিসাবে আখ্যা দিলেন তিনি।
রাজ্য সরকারের সমস্ত কর্মসূচিতে ২৩ জানুয়ারিকে ‘দেশনায়ক দিবস’ হিসাবেই উল্লেখ করা হচ্ছে। শনিবার রেড রোডে নেতাজি মূর্তির অদূরের মঞ্চ থেকে মুখ্যমন্ত্রী বললেন, ‘‘রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর প্রথম নেতাজিকে ‘দেশনায়ক’ হিসাবে আখ্যা দেন। আমরা রবীন্দ্রনাথ আর নেতাজিকে মিলিয়ে দিয়েছি।’’ রাজ্যে নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুর নামে ‘ডক’ তুলে দেওয়া নিয়েও কেন্দ্রকে বিঁধেছেন মমতা। পাশাপাশিই, রাজ্যে আইএনএ স্মরণে শহিদস্তম্ভ তৈরির কথাও ঘোষণা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী।
আরও পড়ুন : আজাদ হিন্দ ফৌজ মনুমেন্ট- নেতাজি বিশ্ববিদ্যালয় করেছে রাজ্য, জাতীয় ছুটির দাবিতে টুইট বার্তা মমতার