‘অনেকেই ভাবছে সব থেমে গিয়েছে, কিন্তু এখনও তো শুরু হয়নি’, ইয়াস নিয়ে সতর্ক বার্তা মমতার

ডেস্ক: বালেশ্বর দক্ষিণ দিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে ইয়াস। অতিক্রম করল ধামরা বন্দর। গোটা দিন ও রাতভর ওডিশায় তাণ্ডব চালাবে ইয়াস। বৃহস্পতিবার সকালে ঢুকবে ঝাড়খণ্ডে। ল্যান্ডফল সমুদ্রের জল ঢুকে কার্যত বানভাসি বাংলা। বিপর্যস্ত পূর্ব মেদিনীপুর। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছেন, নদী বাঁধ ভেঙেছে। নিচু এলাকায় বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। দক্ষিণ ২৪ পরগনার উপকূল এলাকায় প্রায় সর্বত্র জল ঢুকেছে। 


নবান্ন থেকে পরিস্থিতির দিকে নিরন্তর নজরদারি চালানো হচ্ছে। সারারাত নবান্নে ছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত তিনি নবান্নেই থাকবেন। 
মমতা বলেছেন, ‘অনেকগুলি বাঁধ ইতিমধ্যেই ক্ষতিগ্রস্ত। বাংলার অনেকটাই প্লাবিত। ১৫ লক্ষ মানুষকে সরাতে পেরেছি। পূর্ব মেদিনীপুর, উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনা, পশ্চিম মেদিনীপুর, পুরুলিয়া, ঝাড়গ্রাম, বাঁকুড়া, পশ্চিম বর্ধমান, হাওড়া, কলকাতা, সংলগ্ন জেলা হুগলি, নদিয়া, এই সমস্ত জায়গায় ঘণ্টায় ৭৫ থেকে ১১০ কিলোমিটার গতিবেগে আছড়ে পড়বে ঘূর্ণিঝড়। উপকূলবর্তী এলাকায় হাওয়ার গতিবেগ হতে পারে ঘণ্টায় ১৩০ কিলোমিটার।’


তিনি বলেন, ‘অনেকেই ভাবছে সব থেমে গিয়েছে। কিন্তু এখনও তো শুরু হয়নি। আগামী ৭-৮ ঘণ্টা পরিস্থিতি নজরে রাখতে।’ সাধারণ মানুষকে সতর্ক করে তিনি বলেন, ‘সম্পদ গেলে ফিরে আসবে, প্রাণ গেলে আর ফিরে পাওয়া যাবে না। তাই আজকের দিনটা একটু কষ্ট করুন।’


তিনি বলেন, বিভিন্ন জায়গায় গাছ উপড়ে পড়েছে। নদীবাঁধ ক্ষতিগ্রস্ত। দক্ষিণ ২৪ পরগনার ১৫টি বাঁধ ভেঙেছে। পূর্ব মেদিনীপুরে ৫১টি বাঁধ ভেঙেছে। দিঘা থেকে অনেক লোককে সরানো হয়েছে। দেড় লক্ষ লোককে সরানো হয়েছেয। আরও লোক সরানোর চেষ্টা চলছে। জেলাশাসক করোনা আক্রান্ত। সেই অবস্থাতেও কাজ করছেন। কলকাতায় জল ও বিদ্যুৎ সরবরাহ এখনও নিরবচ্ছিন্ন। তবে ভরা কোটালের জন্য কী হবে জানি না। মোট সাড়ে ১১ লক্ষ লোককে নিরাপদ আশ্রয়ে সরানো হয়েছে। ভরা কোটালের জন্য বাংলায় ক্ষতি বেশি হবে।

আরও পড়ুন: দিঘার সমুদ্রে ৩০ ফুট উচ্চতায় ঢেউ, ভেসে গিয়েছে ফ্রেজারগঞ্জের বিস্তীর্ণ এলাকা


বিশেষ ভাবে পূর্ব মেদিনীপুর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনার কথা উল্লেখ করেছেন তিনি। মমতা জানিয়েছেন, গোসাবা, নামখানা, কাকদ্বীপ, পাথর প্রতিমা-সহ দক্ষিণ ২৪ পরগনার একাধিক জায়গায় বাঁধ ভেঙে গ্রামে জল ঢুকে পড়েছে। রাজ্যে ২০ হাজার বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে উল্লেখ করেছেন তিনি। নন্দীগ্রাম থেকেও ফোন এসেছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে। এ কথা উল্লেখ করে মমতা বলেন, ‘সোনাচূড়া, কেন্দ্রপাড়া এলাকা জলে ভেসে গিয়েছে।


ব্লক থেকে জেলাস্তর পর্যন্ত সর্বত্র কন্ট্রোল রুম খোলা হয়েছে। সেই কন্ট্রোল রুম নবান্নের কন্ট্রোল রুমের সঙ্গে যুক্ত রয়েছে। ২০টি জেলার জেলাশাসকের সঙ্গে ফোনে যোগাযোগ রেখেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা। সব জেলার হালহকিকত প্রতি মুহূর্তে জেনে নিচ্ছেন তিনি। কী করতে হবে টেলিফোনে তার নির্দেশ দিচ্ছেন। মুখ্যমন্ত্রীর লক্ষ্য, ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের প্রভাবে যাতে ন্যূনতম প্রাণহানিও না ঘটে তা নিশ্চিত করা।

Related posts

আন্তর্জাতিক মিউজিয়াম দিবসে কলকাতা জাদুঘর জমজমাট সাধারণ মানুষের ভিড়

‘বেরিয়ে যেতে পারেন’, অধীরকে কড়া কথা শুনিয়ে দিলেন খাড়্গে

কলকাতা থেকে শিলিগুড়ি যাওয়ার পথে মর্মান্তিক বাস দুর্ঘটনা, মৃত ২