দিঘার সমুদ্রে ৩০ ফুট উচ্চতায় ঢেউ, ভেসে গিয়েছে ফ্রেজারগঞ্জের বিস্তীর্ণ এলাকা

ডেস্ক: আছড়ে পড়েছে ইয়াস। আবহাওয়া দফতর সূত্রে খবর, ঘণ্টায় ১৪০ কিলোমিটার গতিবেগ নিয়ে আছড়ে পড়েছে ইয়াস । দিঘা থেকে মাত্র ২৬ কিলোমিটার দূরে ল্যান্ডফল হয়েছে।  কিন্তু তাতেও দিঘা-মন্দারমণি-ফ্রেজারগঞ্জ সহ বাংলার বিভিন্ন প্রান্তে ভয়াবহ হয়ে উঠছে পরিস্থিতি। বর্তমানে সমুদ্রে প্রবল জলোচ্ছ্বাস। পশ্চিবঙ্গের পূর্ব মেদিনীপুরের দিঘাতেও ফুসছে সমুদ্র।  দিঘায় জলের প্রবল জলোচ্ছ্বাসে কার্যত জলের তলায় চলে গিয়েছে সমুদ্র তীরবর্তী এলাকা। ভেসে গিয়েছে বিস্তীর্ণ অঞ্চল। ধামড়াতেও প্রবল জলোচ্ছ্বাস। সঙ্গে বইছে ঝোড়ো হাওয়া।  


ভয়ানক পরিস্থিতি ফ্রেজারগঞ্জে, উল্টে গেল পে লোডার । দক্ষিণ ২৪ পরগনার ফ্রেজারগঞ্জে উত্তাল সমুদ্র। হু হু করে আশপাশের গ্রামগুলোতে জল ঢুকতে শুরু করেছে। জলের তোড়ে উল্টে যায় পে লোডারের মতো ভারী যন্ত্রও। আশপাশের বাড়িগুলো জলমগ্ন। আশ্রয়হীন হয়ে পড়েন বহু মানুষ। ফ্রেজারগঞ্জে ঝড়ে গতিবেগ প্রতি ঘণ্টায় ৬৮ কিলোমিটার। 


দিঘা-মন্দারমণিতে উত্তাল হয়ে উঠেছে সমুদ্র। বিরাট-বিরাট ঢেউ আছড়ে পড়েছে পারে। ফলে দিঘা-মন্দারমণিতে বড় রাস্তায় ইতিমধ্যেই কোমর সমান জল। যা বিগত কোনও ঝড়ের সময় হয়নি বলেই দাবি স্থানীয় বাসিন্দাদের।


ইতিমধ্যেই দিঘার সমুদ্রে ৩০ ফুট উচ্চতায় ঢেউ উঠছে। ইতিমধ্যেই গ্রামে জল ঢুকতে শুরু করেছে। গ্রামের পর গ্রাম প্লাবিত হওয়ার আশঙ্কা। কোমর সমান জল গ্রামগুলিতে। দিঘা, চাঁদিপুরেও হচ্ছে প্রবল জলোচ্ছ্বাস। ডুবে যাচ্ছে গাড়িও।


ভেসে গিয়েছে ফ্রেজারগঞ্জের বিস্তীর্ণ এলাকা। জল ঢুকে গিয়েছে কপিলমুণির আশ্রমেও।
শুধু ফ্রেজারগঞ্জই নয়, দক্ষিণ ২৪ পরগনা জুড়ে কোথাও ভেঙেছে বাঁধ। কোথাও আবার প্রবল ঝড় বৃষ্টি। জলোচ্ছ্বাসের জেরে গোসাবার গোমর নদীতে জলস্তর বাড়ায় বেশ কিছু জায়গায় নদী বাঁধে ধস নেমেছে।

আরও পড়ুন: আছড়ে পড়ল ‘ইয়াস’, জলচ্ছ্বাসে ভেসে গিয়েছে ধামড়ার উপকূলবর্তী এলাকা

গোসাবা পাখিরালয়ের দয়াপুর ঘাট সংলগ্ন নদী বাঁধে মাটিবোঝাই বস্তা ফেলার কাজ চলছে। হাত লাগিয়েছেন গ্রামবাসীরা। রায়দিঘির কৈলাসপুর গ্রামে মৃদঙ্গভাঙা নদীতে বাঁধে ফাটল। বাঁধ সারানোর কাজ শুরু করেন গ্রামবাসীরা। প্রবল জলোচ্ছ্বাসে কাকদ্বীপ, নামখানা, মৌসুনি, সাগর ও পাথরপ্রতিমায় বাঁধ ভেঙে যাওয়ার আশঙ্কা।


জলোচ্ছ্বাস আছড়ে পড়তে ৫১ টি বাঁধ ভেঙে পড়েছে। পাখিরালাতে বাঁধ ভেঙে জল ঢুকে গিয়েছে গ্রামে।  ১৫ লক্ষ মানুষ কে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। ইতিমধ্যে দক্ষিণ ২৪ পরগনার ১৫ টা এলাকায় জলের তোড়ে গ্রামে জল ঢুকেছে।আশপাশের গ্রামগুলোতে প্লাবিত হতে পারে। আতঙ্কিত গ্রামবাসীরা।


ইতিমধ্যেই মৌসুনি দ্বীপের বালিয়াড়ায় জল ঢুকতে শুরু করেছে। পাথরপ্রতিমাতেও বাঁধ টপকে জল ঢুকছে আশাপাশের গ্রামগুলোতে। সকাল ৭টা নাগাদ সাগর দ্বীপের ঝাউঘেরি গ্রামে বাঁধ টপকে জল ঢুকতে শুরু করেছে। আতঙ্কিত গ্রামবাসীদের নিরাপদ জায়গায় সরিয়ে নিয়ে যায় প্রশাসন। ঘূর্ণিঝড় আছড়ে পড়ার আগে বকখালিতে প্রবল বেগে ঝোড়ো হাওয়া বইতে শুরু করেছে। সঙ্গে বিক্ষিপ্ত বৃষ্টি। জেলা প্রশাসন জানিয়েছে, সতর্কতামূলক ব্যবস্থা হিসেবে ইতিমধ্যেই প্রায় ৩ লক্ষ মানুষকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।

Related posts

জম্মু ও কাশ্মীরে কনভয়ে জঙ্গি হামলা, নিহত বায়ুসেনার জওয়ান, আহত ৫

তাপপ্রবাহ থেকে মুক্তি! ঝড়বৃষ্টির পূর্বাভাস দক্ষিণবঙ্গে

মহিলা অপহরণ মামলায় গ্রেফতার প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী দেবেগৌড়ার ছেলে