আসানসোল : আরও এক দফায় রাজ্য জুড়ে বেআইনি জবরদখল নিয়ে বৃহস্পতিবার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নবান্নে বৈঠক করেন। নবান্নের সেই বৈঠকে উঠে আসে, আসানসোলে নাকি পুকুর ভরাট করে আরএসএস বা রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘের কার্যালয় তৈরি করা হয়েছে। পরে মুখ্যমন্ত্রী সেইকথা জানিয়ে দেন । আর এরপরে ঘন্টা খানেকের মধ্যেই তৎপরতা শুরু হয়ে যায় আসানসোলের প্রশাসনিক মহলে।
এ দিন দুপুরে আসানসোল উত্তর থানার আসানসোল পুরনিগমের ২১ নম্বর ওয়ার্ডে ধাদকার জে সি বোস লেনে আরএসএস কার্যালয় সুদর্শন নিবাসে পৌঁছে যান আসানসোল পুরনিগমের ইঞ্জিনিয়ার, পুর আধিকারিক, ভূমি ও ভূমি রাজস্ব দফতরের ( বিএলআরও) আধিকারিক ও আসানসোল দূর্গাপুর পুলিশ কমিশনারেটের উচ্চ আধিকারিকরা। কার্যালয়ের ভেতরে ঢুকে তারা সেখানে লোকজনদের সঙ্গে কথা বলেন। স্বাভাবিক ভাবেই গোটা এলাকায় চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়ে। খবর পেয়ে সেখানে চলে আসেন আরএসএস সহ একাধিক হিন্দু সংগঠনের উপদেষ্টা এবং বিজেপির লিগাল সেলের অন্যতম প্রবীণ আইনজীবী পীযূষ কান্তি গোস্বামী। আসানসোল পুরনিগমের প্রাক্তন বিজেপি কাউন্সিলর ভৃগু ঠাকুর সহ অন্যরা সেখানে পৌঁছান ।পরে পীযূষবাবু বলেন, পুর ইঞ্জিনিয়ার সহ যে আধিকারিকরা এসেছিলেন, তারা আমাদের কাছ বাড়ির দলিল, ট্যাক্স, ও অন্যান্য কাগজপত্র দেখতে চান। যদিও কোনো নোটিস আধিকারিকদের পক্ষ থেকে তাঁদের কাছে দেওয়া হয়নি।
তিনি বলেন, অফিস সংক্রান্ত কোন কিছই এখানে থাকে না। সব আরএসএসের সদর দফতর কেশব ভবনে থাকে।আমি তাদেরকে বলেছি, আপনারা আমাদের চিঠি দিয়ে নোটিশ করে যা যা চাইবেন আমরা সেগুলো অবশ্যই আপনাদের হাতে তুলে দেব। পীযূষবাবু বলেন, তিন/চার কাঠা জমিতে পুকুর হয় না। তাহলে কি এখানে পাশাপাশি সব বাড়িসহ গোটা এলাকাটাই পুকুর ছিল? তবে গোটা বিষয়টি রাজনৈতিক যড়যন্ত্র বলে দাবি করেন প্রবীণ এই আইনজীবী।
এদিকে, আসানসোলের প্রাক্তন বিজেপি সভাপতি তথা আরএসএসের সংঘ প্রচারক দিলীপ দে বলেন, এই ভবন দেড় দশকের বেশি সময় আগে তৈরি হয়েছে। এদিকে আসানসোল দূর্গাপুর পুলিশের আধিকারিক সুব্রত দেবনাথ বলেন, “বিষয়টা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এদিন বলেছেন বলে, আমরা এসেছি, এমনটা নয়। অভিযোগ আগেই আমরা পেয়েছিলাম। তাই তা দেখতে এসেছি। সবকিছু দেখে গেলাম । এ রকম অভিযোগ আরও এলে তার ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে তিনি জানান।”
আসানসোল পুরনিগমের ইঞ্জিনিয়ার নয়ন নস্কর বলেন, “আমি পুরনিগমের পক্ষ থেকে সরকারি টিমের সাথে গিয়ে দেখেছি। আমরা লিখিতভাবে তাদের কাছ থেকে পুরনিগমের পাশ করা নকশা বা প্ল্যান থেকে শুরু করে জমির যাবতীয় কাগজ, আসানসোল দূর্গাপুর উন্নয়ন পর্ষদ বা আড্ডার নো অবজেকশন সার্টিফিকেট সহ সমস্ত কাগজপত্র চেয়ে পাঠিয়েছি। “
উল্লেখ্য, এদিনের নবান্নের বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী অভিযোগ করে বলেন, আসানসোলে আরএসএস পুকুর ভরাট করে না কি একটি বড় অফিস তৈরি করেছে। বড় ভবন যদি কাগজে-কলমে পুকুর ভরাট করে হয়ে থাকে তাহলে কেন এটা ভাঙ্গা হয়নি? এটা মলয় ( মন্ত্রী মলয় ঘটক) আমাকে বলেছে। পুলিশ প্রশাসনকেও নাকি বলা হয়েছিল।