প্রথম পাতা খবর এসআইআর আতঙ্কে উলুবেড়িয়ায় যুবকের মৃত্যু! রাজ্যে পঞ্চম আত্মহত্যার অভিযোগ

এসআইআর আতঙ্কে উলুবেড়িয়ায় যুবকের মৃত্যু! রাজ্যে পঞ্চম আত্মহত্যার অভিযোগ

24 views
A+A-
Reset

ভোটার তালিকার বিশেষ নিবিড় সংশোধন (এসআইআর) শুরুর দিনেই মৃত্যু এক যুবকের। ঘটনাস্থল হাওড়ার উলুবেড়িয়া। পরিবারের দাবি, এসআইআর আতঙ্কেই আত্মহত্যা করেছেন দিনমজুর জাহির মাল (২৮)। এ নিয়ে রাজ্যে ‘এসআইআর-আতঙ্কে’ পঞ্চম মৃত্যুর অভিযোগ উঠল।

ঘটনাটি ঘটেছে উলুবেড়িয়া পূর্ব বিধানসভা কেন্দ্রের খলিসানি গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায়। মঙ্গলবার সকালে জাহিরের ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার করে উলুবেড়িয়া থানার পুলিশ। বাড়ি থেকে কোনও সুইসাইড নোট মেলেনি। তবে পরিবারের দাবি, তিনি গত কয়েক দিন ধরে “বাংলাদেশে পাঠিয়ে দেওয়া হবে”—এই ভয়েই মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছিলেন।

মৃতের স্ত্রী রেজিনা বিবি বলেন,“এসআইআর নিয়ে আতঙ্কে ছিল ও। বারবার বলত, নাম বাদ যাবে, ওকে বাংলাদেশি বলে ধরে নিয়ে যাবে। ভয়েই ও নিজেকে শেষ করে ফেলেছে।”

ঘটনার খবর পেয়ে রাজনীতিতে তীব্র প্রতিক্রিয়া তৈরি হয়েছে। তৃণমূল কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে দলের একটি প্রতিনিধিদল পৌঁছয় মৃতের বাড়িতে।
রাজ্যের পূর্ত ও জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতরের মন্ত্রী পুলক রায় বলেন, “এই পরিবার আমাদের দলের পাশে রয়েছে। রাজ্যে আতঙ্কের পরিবেশ তৈরি করা হয়েছে। বাংলা ভাষায় কথা বললেই বাংলাদেশি বলা হচ্ছে! কেন্দ্রীয় সরকারকে বলব, মৃত্যুর রাজনীতি বন্ধ করুন।”

তিনি আরও জানান, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় উভয়েই ব্যক্তিগতভাবে নির্দেশ দিয়েছেন, পরিবারটির পাশে দাঁড়াতে।

অন্যদিকে, বিজেপির দাবি, এসআইআর আতঙ্কের জন্য দায়ী তৃণমূলই
কেন্দ্রীয় মন্ত্রী ও বালুরঘাটের সাংসদ সুকান্ত মজুমদার বলেন, “এসআইআর নিয়ে ভয় দেখিয়ে রাজনৈতিক ফায়দা তুলতে চাইছে তৃণমূল। সাধারণ মানুষকে বিভ্রান্ত করা হচ্ছে।”

এই ঘটনার আগে রাজ্যে আরও চারজনের মৃত্যু নিয়ে এসআইআর বা এনআরসি আতঙ্কের অভিযোগ উঠেছিল।

  • ২৮ অক্টোবর: আগরপাড়ার মশারি ব্যবসায়ী প্রদীপ কর আত্মহত্যা করেন। ঘর থেকে সুইসাইড নোট উদ্ধার হয়। হাতের লেখা যাচাইয়ের জন্য ফরেনসিক পরীক্ষা চলছে।
  • ৩০ অক্টোবর: বীরভূমের ইলামবাজারে আত্মহত্যা করেন ৯৫ বছরের বৃদ্ধ ক্ষিতীশ মজুমদার, যাঁর ২০০২ সালের ভোটার তালিকায় নাম ছিল না বলে দাবি পরিবারের।

এসব ঘটনার পর থেকেই রাজ্যে এসআইআর নিয়ে আতঙ্ক ছড়িয়েছে। নির্বাচন কমিশন বলেছে, “কোনও বৈধ ভোটারের নাম বাদ যাবে না।” তবুও একের পর এক মৃত্যু প্রশাসন ও রাজনৈতিক মহলে উদ্বেগ বাড়াচ্ছে।

আরও খবর

মন্তব্য করুন

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.