কলকাতা: পুলিশি হেফাজতে মারধরের অভিযোগ সংক্রান্ত মামলায় সুপ্রিম কোর্টে গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত। সোমবার বিচারপতি সূর্য কান্ত ও উজ্জ্বল ভুঁইঞার ডিভিশন বেঞ্চ সিবিআই তদন্তে অন্তর্বর্তী স্থগিতাদেশ দিয়ে নতুন করে বিশেষ তদন্ত দল (সিট) গঠনের নির্দেশ দেয়। এই সিটের তদন্তের উপর নজরদারি করবে কলকাতা হাইকোর্ট।
সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ অনুযায়ী, সিট-এর নেতৃত্বে থাকবেন প্রেসিডেন্সি রেঞ্জের ডিআইজি আকাশ মাঘারিয়া। তাঁর সঙ্গে থাকবেন হাওড়া গ্রামীণের পুলিশ সুপার স্বাতী ভাঙ্গালিয়া এবং হাওড়ার ডেপুটি কমিশনার (ট্র্যাফিক) সুজাতা কুমারী বীণাপানি। সিট দ্রুত তদন্ত শুরু করবে এবং প্রতি সপ্তাহে তদন্তের অগ্রগতি সম্পর্কে রিপোর্ট জমা দেবে কলকাতা হাইকোর্টের নির্দিষ্ট বেঞ্চে। প্রয়োজনে সিট অন্য অফিসারদেরও তদন্তে অন্তর্ভুক্ত করতে পারবে।
এই মামলা সংক্রান্ত ঘটনা শুরু হয় আরজি কর মেডিক্যাল কলেজের ঘটনার প্রতিবাদ মিছিল থেকে। অভিযোগ, সেখানে তৃণমূল নেতা অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের কন্যার নাম নিয়ে হুমকি দেওয়া হয়। এর ভিত্তিতে ৪ সেপ্টেম্বর ফলতা থানায় মামলা দায়ের হয়। পকসো এবং তথ্যপ্রযুক্তি আইনের আওতায় তদন্ত করে পুলিশ দুই মহিলাকে গ্রেফতার করে। তবে পুলিশের বিরুদ্ধে পাল্টা অভিযোগ ওঠে, ওই দুই মহিলাকে পুলিশি হেফাজতে মারধর করা হয়েছে। এই অভিযোগ নিয়ে কলকাতা হাইকোর্টে মামলা হয়।
গত ৮ অক্টোবর কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি রাজর্ষি ভরদ্বাজ সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দেন। তবে রাজ্য সেই রায়কে চ্যালেঞ্জ করে ডিভিশন বেঞ্চে আপিল করে। ৬ নভেম্বর প্রধান বিচারপতি টিএস শিবজ্ঞানম এবং বিচারপতি হিরণ্ময় ভট্টাচার্যের বেঞ্চ হাইকোর্টের রায় বহাল রাখে। এরপর রাজ্য সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়। ১১ নভেম্বর সুপ্রিম কোর্ট সিবিআই তদন্তের নির্দেশে অন্তর্বর্তী স্থগিতাদেশ দেয় এবং সোমবার নতুন সিট গঠনের নির্দেশ দেয়।
সিট-এর তদন্ত হবে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ মোতাবেক। এর ফলে পুলিশের ভূমিকা এবং আগের তদন্তের মান নিয়েও নতুন করে প্রশ্ন উঠছে। তদন্তের স্বচ্ছতা এবং নিরপেক্ষতা নিশ্চিত করতে শীর্ষ আদালতের এই পদক্ষেপ অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করছেন আইন বিশেষজ্ঞরা।