তামিলনাড়ুর তিরুভান্নামালাই মন্দির শহরে সোমবার দ্বিতীয় বার ভূমিধসের ঘটনা ঘটেছে। এর আগে রবিবার বিকেল ৪টা ৩০ মিনিটে প্রথম ভূমিধসের সময় একটি বিশাল পাথর গিয়ে পড়ে একটি আবাসিক ভবনের উপর, যেখানে ৫ থেকে ৭ জন আটকে পড়েন। এদের মধ্যে অন্তত একজনের মৃত্যু নিশ্চিত করা হয়েছে।
প্রথম ভূমিধসটি ঘটেছিল বিখ্যাত অন্নামালাইয়ার পাহাড়ের নিম্ন ঢালে। এই বিপর্যয়ের পেছনে রয়েছে ঘূর্ণিঝড় ‘ফেনজল’-এর প্রভাবে ভারী বৃষ্টিপাত। শনিবার দুপুরে চেন্নাই উপকূলে আঘাত হানা এই ঝড়ের প্রভাবে তিরুভান্নামালাই জেলা ভীষণভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
উদ্ধার কাজ এখনও চলছে, তবে টানা বৃষ্টির কারণে এবং পাহাড়ের উপরের দিকে আরও একটি পাথরের ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থানের কারণে কাজটি বেশ কঠিন হয়ে পড়েছে। ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অফ টেকনোলজি, চেন্নাই-এর বিশেষজ্ঞদের একটি দল উদ্ধারকাজে সহায়তা করছে। এখন পর্যন্ত দু’জনকে জীবিত উদ্ধার করা হয়েছে।
এদিকে, তামিলনাড়ুর অন্যান্য জেলাগুলিতেও প্রবল বৃষ্টিপাত অব্যাহত রয়েছে। উত্তর তামিলনাড়ুর ভিল্লুপুরম জেলা নজিরবিহীন বন্যার সম্মুখীন। সেখানে ব্রিজ ধসে পড়েছে, রাস্তা এবং গ্রামগুলির সাথে সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। এছাড়াও কৃষিজমি ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এবং রেল পরিষেবা ব্যাহত হয়েছে।
পশ্চিম তামিলনাড়ুর কৃষ্ণগিরি এবং ধর্মপুরি জেলাতেও রেকর্ড পরিমাণ বন্যা দেখা গেছে। গত ২৪ ঘণ্টায় কৃষ্ণগিরির উথানগরাই এলাকায় ৫০ সেন্টিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। ভিল্লুপুরমে ৪২ সেন্টিমিটার, ধর্মপুরির হারুরে ৩৩ সেন্টিমিটার এবং কাড্ডালোর ও তিরুভান্নামালাইতে ১৬ সেন্টিমিটার বৃষ্টি হয়েছে।
অনলাইনে ছড়িয়ে পড়া কিছু ভিডিওতে দেখা গেছে, প্রবল বন্যার জলে বাসসহ অন্যান্য যানবাহন রাস্তা থেকে ভেসে যাচ্ছে।
আবহাওয়া দপ্তরের এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, ঘূর্ণিঝড় ‘ফেনজল’-এর অবশিষ্টাংশ এখন তামিলনাড়ুর উত্তরাঞ্চলে একটি শক্তিশালী নিম্নচাপ হিসেবে অবস্থান করছে। এর ফলেই এত প্রবল বৃষ্টিপাত হচ্ছে। এই সিস্টেমটি আগামী ৩ ডিসেম্বরের মধ্যে আরব সাগরে প্রবেশ করার আগে উত্তর কেরালা এবং দক্ষিণ কর্ণাটক অতিক্রম করবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
চেন্নাই বিমানবন্দরও এই ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে আংশিক প্লাবিত হয়েছে। ফ্লাইট বাতিলের কারণে শতাধিক যাত্রী বিপাকে পড়েন। কিছু সময়ের জন্য বিমান পরিষেবাও স্থগিত রাখা হয়েছিল।
এখনও পর্যন্ত দুটি মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। এর মধ্যে একজন চেন্নাইয়ে একটি এটিএম থেকে টাকা তোলার সময় বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মারা যান।