বিচারপতি বনাম বিচারপতির সংঘর্ষ। এমনই নজির বিহীন ঘটনার সাক্ষী থাকল কলকাতা হাইকোর্ট। যেখানে হাইকোর্টের সিঙ্গল বেঞ্চের একজন বিচারপতি অভিযোগের আঙ্গুল তুলছেন কলকাতা হাইকোর্টেরই উচ্চতর বেঞ্চ অর্থাৎ ডিভিশন বেঞ্চের এক বিচারপতির দিকে। শুধুমাত্র অভিযোগ আনাই নয়, এই অভিযোগের প্রতিকার চেয়ে ইতিমধ্যেই তিনি দ্বারস্থ হয়েছেন দেশের সর্বোচ্চ আদালত অর্থাৎ সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতির।
কাদের সুবিধা পাইয়ে দিতে ডিভিশন বেঞ্চ সিঙ্গল বেঞ্চের হাত বেঁধে দিচ্ছে?’ কলকাতা হাইকোর্টে লিখিতভাবে এই প্রশ্ন তুললেন সিঙ্গল বেঞ্চের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। কেন তাঁর দেওয়া রায়ে স্থগিতাদেশ দিচ্ছে কলকাতা হাই কোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ? এই প্রশ্ন তুলে এবার সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতির দ্বারস্থ হলেন কলকাতা হাই কোর্টের বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়।
সম্প্রতি দেখা গিয়েছে একের পর এক মামলা, যেখানে তিনি যে সব নির্দেশ দিয়েছেন, সেই সব নির্দেশেই স্থগিতাদেশ দিয়ে দিচ্ছে কলকাতা হাইকোর্টের উচ্চতর বেঞ্চ। সম্প্রতি স্কুলে শিক্ষক ও অশিক্ষক কর্মী নিয়োগের কয়েকটি মামলায় সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দিয়েছিল কলকাতা হাই কোর্টের বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের একক বেঞ্চ। কারণ, বিচারপতি মনে করেছিলেন, সেখানে বড় কোনও দুর্নীতি থাকতে পারে। কিন্তু ডিভিশন বেঞ্চে সিবিআই অনুসন্ধানের মামলায় স্থগিতাদেশ দেওয়া হয়। এর পর শিক্ষক নিয়োগ মামলায় এসএসসি-র তৎকালীন উপদেষ্টা শান্তিপ্রসাদ সিংহের স্থাবর-অস্থাবর সম্পত্তির হিসেব-নিকেশ চেয়েছিল বিচারপতি বন্দ্যোপাধ্যায়ের একক বেঞ্চ। সেই নির্দেশেও ডিভিশন বেঞ্চে স্থগিতাদেশ দেওয়া হয়। এর প্রেক্ষিতে কার্যত চূড়ান্ত ক্ষুব্ধ হন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়।
উল্লেখ্য, বুধবার কলকাতা হাই কোর্টের ইতিহাসে এমনন ঘটনা কার্যত নজিরবিহীন, যেখানে তাঁর দেওয়া নির্দেশে স্থগিতাদেশ দেওয়া হচ্ছে অভিযোগ করে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হলেন কোনও বিচারপতি। এসএসসি-র উপদেষ্টা শান্তি প্রসাদ সিনহার সম্পত্তির হিসেব নিয়ে তাঁর দেওয়া নির্দেশের পর ডিভিশন বেঞ্চের তরফে বলা হয়েছে, সিল বন্ধ খামে দিতে হবে হিসেব। খোলা যাবে না খাম। সেই মামলার শুনানিতেই এ দিন প্রকাশ্যে আসে বিচারপতির অসন্তোষ।