ডেস্ক: বিধ্বংসী আমফানের পর ফের বাংলায় ধেয়ে আসছে সাইক্লোন ‘যশ’। আর আমফানের কথা রেখেই যশ মোকাবিলায় একাধিক পদক্ষেপ নিচ্ছে রাজ্য সরকার। এবার ‘যশ’ (Yaas) মোকাবিলায় আগেভাগে তোড়জোড় শুরু করেছে প্রশাসন। উপকূলবর্তী এলাকায় নজরদারি ও মাইকিং বাড়ানো হয়েছে। হলদিয়ায় ভারতীয় উপকূলরক্ষী বাহিনীর তৎপরতা তুঙ্গে।
ইতিমধ্যেই দক্ষিণ ২৪ পরগনার কাকদ্বীপ, সাগর, বাসন্তী, গোসাবা এবং ডায়মন্ড হারবারে এনডিআরএফ পাঠানো হয়েছে। পাশাপাশি পাথরপ্রতিমা নামখানা এবং মথুরাপুরে বেশি সংখ্যায় এনডিআরএফ ও এসডিআরএফ পাঠানো হয়েছে। এছাড়াও, উত্তর ২৪ পরগনার হিঙ্গলগঞ্জ ও হাসনাবাদে এবং ব্যারাকপুরে এসডিআরএফ টিম মোতায়েন করে রাখা হয়েছে।
গতবার আমফানে বেশ কিছুদিন ধরে দক্ষিণবঙ্গের একাংশ কার্যত বিদ্যুৎ বিহীন হয়েছে পড়েছিল। বিদ্যুৎ বিভ্রাটে সাইক্লোন কবলিত এলাকার মানুষকে দিন কাটাতে হয় অন্ধকারে। তাই সেই অভিজ্ঞতা থেকে শিক্ষা নিয়ে এবার আর কোনও ফাঁক রাখতে চাইছে না রাজ্য সরকার।
আজ, শুক্রবার এই প্রস্তুতি সংক্রান্ত একটি বৈঠক করেন বিদ্যুৎ মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস। উপস্থিত ছিলেন তাঁর দফতরের উচ্চপদস্থ আধিকারিকেরাও। সেই বৈঠকের পর মন্ত্রী জানিয়েছেন, এবার যেহেতু দক্ষিণবঙ্গের ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার সম্ভাবনা বেশি, তাই দুই ২৪ পরগনা, হাওড়া, বিধান নগর ও মেদিনীপুরে আগে থেকে দফতরের বিশেষ ‘গ্যাং’ থাকবে। ২৫-৩০ জনের একটি দল তৈরি করা হবে, সেই দলের একজন প্রধান থাকবে।
তিনি আরও জানিয়েছেন, ৪৫০ টি ট্রান্সফর্মার প্রয়োজনে পাঠানো হবে, সেগুলি আলাদা করে রাখা আছে। ২০৫৫ কিলোমিটার তার ইতিমধ্যেই পাঠানো হয়েছে বলে জানানো হয়েছে। জেলায় জেলায় পাঠানো হয়েছে বাতিস্তম্ভ।
আরও পড়ুন: ভবানীপুর বিধানসভার বিধায়ক পদ থেকে ইস্তফা শোভনদেবের
কোভিড হাসপাতালগুলিতে যাতে বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন হওয়ার সঙ্গে-সঙ্গেই ব্যাকআপ রাখা যায়, তার জন্য অতিরিক্ত পরিমাণে জেনারেটর রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। দক্ষিণ ২৪ পরগনাতে প্রায় ৩ লক্ষ মানুষকে নিরাপদ আশ্রয় নিয়ে আসার প্রস্তুতি শুরু হয়েছে। হাসপাতালগুলিতে যাতে সাইক্লোনে আহতদের জন্য বেড সংরক্ষিত রাখা যায়, সেই বিষয়ে প্রয়োজনীয় নির্দেশ দেওয়া হয়েছে সরকারের তরফে। তার সঙ্গে অস্থায়ী ক্যাম্প বানানোরও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
ইতিমধ্যেই বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীকে সজাগ থাকতে বলা হয়েছে। উপকূলবর্তী এলাকার প্রতিটি ব্লকে ২৪ ঘণ্টা সতর্ক করার কাজ চলছে। প্রশাসনকে প্রচুর মাস্ক কিনে রাখতে বলা হয়েছে। কেননা এই প্রাকৃতিক বিপর্যয় যখন আসতে চলেছে, ঠিক তখন রাজ্যে করোনা মহামারিতে বিপর্যস্ত মানুষ। সমুদ্রে ও নদীতে যারা মাছ ধরতে যান, তাদেরও আপাতত সমুদ্রে যেতে নিষেধ করা হয়েছে।
এবার ‘ইয়াস’ মোকাবিলায় আগেভাগে তোড়জোড় শুরু করেছে প্রশাসন। উপকূলবর্তী এলাকায় নজরদারি ও মাইকিং বাড়ানো হয়েছে। হলদিয়ায় ভারতীয় উপকূলরক্ষী বাহিনীর তৎপরতা তুঙ্গে।
ঝড় আছড়ে পড়ার সম্ভাবনা ২৬ মে। তার আগে ২৫ তারিখ থেকে কন্ট্রোল রুম খোলা হচ্ছে। সেই কন্ট্রোল রুমে নিজেই থাকবেন মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস, সঙ্গে থাকবেন আধিকারিকরা। জরুরি পরিষেবার জন্য দুটি ফোন নম্বর দেওয়া হয়েছে। নম্বরগুলি হল, 8900793503/8900793504। এছাড়া, আজ থেকে দফতরের সব কর্মীদের ছুটি বাতিল করে দেওয়া হয়েছে।