প্রথম পাতা প্রবন্ধ স্বাধীনতা, মা আমার, আমরা তোমার অতন্দ্র প্রহরায় ছিলাম,আছি, থাকবো

স্বাধীনতা, মা আমার, আমরা তোমার অতন্দ্র প্রহরায় ছিলাম,আছি, থাকবো

149 views
A+A-
Reset

পঙ্কজ চট্টোপাধ্যায়

২২ শে মার্চ, ১৯৪৭ সাল, ভারতবর্ষের বড়লাটের দায়িত্বে এলেন লর্ড মাউন্ট ব্যাটেন, এক মহা চতুর মানুষ। কয়েক মাস পরেই,  ১৮ ই জুলাই, ১৯৪৭ সাল ব্রিটিশ পার্লামেন্ট ভবন থেকে ঘোষণা করা হোল, আগামী ১৫ ই আগস্ট,১৯৪৭ ভারত এবং পাকিস্তান নামে দুটি স্বাধীন ডোমিনিয়ন প্রতিষ্ঠিত হবে, অবিভক্ত একটি দেশ ভারতবর্ষকে দ্বি-জাতি তত্ত্বের ওপর ভিত্তি করে খন্ডিত করে। ঘোষণাটি ছিল এই রকম, ” As from the fifteenth day of August, nineteen hundred and forty seven, two Independent Dominions shall be set up in  Undivided India, to be respectively as India and Pakistan..”।

প্রায় ২০০ বছরের পরাধীনতার গ্লানি মুছে যাবে ভারতবর্ষের। দেশ-মাতৃকার কতো দেশপ্রেমিক বীর সন্তানদের আত্মবলিদানে,কতো অন্যায় দমন পীড়ন শেষে,কতো অত্যাচার সহ্য করার পরে,মুক্তির মন্দির সোপানতলে কত প্রাণ বলিদানের বিনিময়ে স্বাধীনতা আসছে যদিও একটি অবিভক্ত দেশকে দ্বিখন্ডিত করে তবু  তো স্বাধীনতা  আসছে !

খবরটা নিমেষের মধ্যে ছড়িয়ে পড়লো অবিভক্ত ভারতবর্ষের কোনায় কোনায়। স্বাধীনতা আসছে, আমরা স্বাধীন, আমরা স্বাধীন দেশের মানুষ।দেশটা আমাদের,আমাদের জন্যেই সব,সব কিছু।আমাদের আর কোন ভাবনার নেই,আমাদের আর কোন কষ্ট করতে হবে না।আমাদের যা যা পাবার,তা আমরা সব ঠিক ঠিক পাবো,আর কোন চিন্তা থাকবে না। কোনও দুঃখ-কষ্ট থাকবে না, কারণ দেশে এবার আমাদেরই সরকার বসবে,তারা আমাদেরই লোক,আমাদেরই নেতা,বিদেশী কেউ নয়। আহ্ কি আনন্দ কি সুখ !!

১৮ ই, ১৯ শে, ২০ শে জুলাইএবং তারপর শুধু দিন গোনার পালা । মাঝে আর ক’টা মাত্র দিন,তারপর আমরা সব্বাই স্বাধীন, তখন জীবনে যা যা কিছু দরকার,যা যা পাওয়ার, তাই তাই সবাই পেয়ে যাবো।

কোনও এক গ্রামের চন্ডীমন্ডপে কিংবা সে গ্রামের মোড়লের মাটির বাড়ির দাওয়ায় বসে বসে গ্রামের চাষা-ভুষো মানুষগুলো সারাদিনের খাটাখাটনির শেষে পুকুরের বা খালের জলে হাত-মুখ ধুয়ে, কোনও রকমে এক গাল মুড়ি চিবোতে চিবোতে সোজা ‘সেইখানে..যেইখানে গাঁ-এর সব মেয়ে-মদ্দরা জড়ো হইছে’।

সকলেরই ভাঙা-চোরা মুখ,ভেতরে ঢুকে যাওয়া চোখ,হাড় জিরজিরে প্রায় কঙ্কাল শরীরগুলো সেদিন যেন টগবগে ঘোড়ার মতো উত্তেজনায় ছটফট করছিল, ঘরের মেয়ে-বউরাও বাদ যায়নি,কোলে-কাঁকালে বাচ্চাদের নিয়ে, রংচটা,আধছেঁড়া শাড়িটা কোনও রকমে গায়ে জড়িয়েই ন্যাংটা খোকা-খুকুদের হাত ধরে জড়ো হয়েছিল সেখানে।সারাজীবন চুপচাপ মুখগুঁজে থাকা মেয়ে বউরাও সেদিন মুখর হয়ে উঠেছিল তাদেরও মনে খুশীর ঢেউ,মনের মধ্যে এক সুখের অপেক্ষা…স্বাধীনতা আসছে স্বাধীনতা।

এতো গেল গাঁ-এর কথা। এদিকে শহর আর মফঃস্বলেরও ঐ একই অবস্থা ছিল সেদিন।পাড়ার,মহল্লার চায়ের দোকানে,হাট-বাজারের চৌমাথায়, তেমাথায়, বা নিদেনপক্ষে গলির মুখে,কল-কারখানার গেটের ধারে, ইস্কুল-কলেজের প্রাঙ্গনে,অফিস-কাছারি-আদালতের কাজের ফাঁকে ফাঁকে  কিম্বা কাজের শেষে টেবিলের এধারে-ওধারে, পাড়ার ক্লাব ঘরের মধ্যে,পাকাবাড়ির রাস্তার ধারের রোয়াকে বসে,চকমিলানো বড়ো বাড়ির বৈঠকখানায়,গড্ডলিকায় যাদের জীবন বাঁধা। সেই আটপৌরে ছা-পোষা সংসারের একচিলতে রান্নঘরে,কিম্বা বিরাট দালান কোটার বিশাল রান্নাঘরে, বারোঘর তেরো ভাড়াটের এক উঠোনে,ট্রামে বাসে সাইকেলে, পায়েহেঁটে কাজে যাওয়ার পথে বা ফেরার পথে,মদের ভাটিখানায়,নিষিদ্ধপল্লীর আলো-আঁধারির একচিলতে খুপচি ঘরের সামনে খদ্দেরের অপেক্ষায় থাকতে থাকতে তথাকথিত ভদ্দরলোকেদের ঘেন্নাকরা খারাপ মেয়েগুলোর পরস্পরের চোখে মুখে,বেকার ছেলেদের আড্ডায়,মন্দিরে-মসজিদে-গুরুদ্বারে,ভাঙা মন্দিরে,ভাঙা দরগায়,অঙ্গনে-প্রাঙ্গনে একটাই খুশী,একটাই প্রার্থনা,একটাই জন্ম-জন্মান্তরের প্রত্যাশা ১৫ ই আগস্ট,১৯৪৭ এর স্বাধীনতার শুভ আগমন।

গ্রামে-গঞ্জে,শহরে-শহরতলিতেপাড়ায় পাড়ায় আমপাতা আর ফুলের শিকলি তৈরী,রাস্তায় রাস্তায় টাঙানো হবে।বাড়িতে বাড়িতে মঙ্গলঘট বসানো হবে, আরও কত আনন্দের কাজ-কর্ম শুরু হয়েছিল। সেদিন শহরে বাসে ট্রামে, গ্রামে গঞ্জে নদীপথে পারাপারের নৌকাতে, সালতিতে,রেলগাড়িতে মানুষ এদিক ওদিক আসছে-যাচ্ছে, না কোন গাড়িভাড়ার দরকার নেই সেদিন।চারিদিকে উড়বে পতপত করে গেরুয়া-সাদা-সবুজ ত্রিবর্ণ রঞ্জিত স্বাধীনদেশের পতাকা,দেশনেতাদের ছবিতে মালা দিয়ে সাজানো হবে সেদিন।

 কিশোর শহীদের দিদি অন্নপূর্ণা দেবী সারাদিন তার মা-মরা শহীদ ভাই ক্ষুদির কথা ভেবে ভেবে সেদিন গুলোতে শুধুই কেঁদেছিল আর কেঁদেছিল , শহিদ আসরাফউল্লার পরিবারে,শহীদ অলকা মাজীর পরিবারে,শহীদ ভগৎ সিং,শুকদেব,চন্দ্রশেখর আজাদ,মদনলাল ধিংড়া,প্রফুল্ল চাকী,উল্লাসকর দত্ত,প্রদ্যোৎ ভট্টাচার্যের,কানাই দত্ত,বাঘাযতীনের,মায়া ফুকনের,সরফরাজ কুরেশীর পরিবার গুলিতে,শহীদ বিনয় বসুর পরিবারে,শহীদ বাদল গুপ্তের পরিবারে,শহীদ দীনেশ গুপ্তের পরিবারে,মা মাতঙ্গিনীর পরিবারে,প্রীতিলতা ওয়াদ্দেদারের পরিবারে,মাস্টার দা-র পরিবারে, জালালাবাদের লড়াইতে ১৩ বছরের শহীদ টেগরা বলের পরিবারে আরও অসংখ্য শহীদ পরিবারে সেদিন সকলে তাদের শহীদ সন্তানদের রেখে যাওয়া নানা কথা ভেবে ভেবে বারবার চোখের জল মুছেছিল তাদের সেই সব  দামাল অগিপুত্র-অগ্নিকন্যা ছেলে-মেয়েদের নানা স্মৃতি রোমন্থন করতে করতে।আর দেশের স্বাধীনতার জন্য সবকিছু যিনি উৎসর্গ করেছিলেন,ব্রিটিশ সাম্রাজ্যবাদি শক্তির যিনি ছিলেন তাদের ভাষায় একমাত্র শত্রু… ভারতবর্ষের নয়নমনি সুভাষের বৃদ্ধা মা প্রভাবতী দেবী সারাটা দিন এলগিন রোডের বাড়িতে একখানি ঘরে চুপ-চাপ শুধু তাঁর “সুবি”-র একটি ফটো কোলে নিয়ে বসে ছিলেন,শুধু নীরবে ঝরেছিল বুক ফাটা কান্না সেই কান্নায় মিশেছিল গৌরব…আমার সন্তান দেশের জন্যে নিজেকে উৎসর্গ করেছিল । ইতিহাস মনে রাখবেই তাকে ।

কিন্তু,সেই সময়ের বাস্তব চিত্র ছিল এক ভয়ংকর। তখন জ্বলছে সারা দেশ।যার শুরু হয়েছিল ১৯৪৬ এ ধর্ম আর জাতপাতের জিগির তুলে ইংরেজ শাসকের ষড়যন্ত্রে।ভ্রাতৃঘাতি,জাতিঘাতি রক্তক্ষয়ী দাঙ্গা পাঞ্জাবে,উত্তরপ্রদেশে,মধ্যপ্রদেশে,গুজরাটে, মহারাষ্ট্রে,কেরালায়,মাদ্রাজে, আসামে,বাংলায় বিস্তীর্ণ অঞ্চল জুড়ে। চারিদিকে খুন,ধর্ষন,লুটপাট,ঘর-বাড়ি জ্বালিয়ে দেওয়া…ইত্যাদি…মানুষ তখন ধর্মের নেশায় হিংস্রতে অধম হয়ে গিয়েছিল।বড়লাট মাউন্ট ব্যাটেন সম্পূর্ণ ব্যর্থ হয়েছিল দেশের মানুষকে বাঁচাতে।তাদের রক্ষা করতে।

কতো খুন হয়েছিল?কতো নারীর ইজ্জত লুট হয়েছিল? কতো লুট-পাট হয়েছিল?… তখনকার ব্রিটিশ গোয়েন্দা বিভাগের কর্মকর্তা Mr. Leonard Mosley- রিপোর্ট-এ লিখেছেন..

” The Last Days of British Raj” বইয়ের ২৮৯ পাতায়…

“…600,000 of them were killed in Punjab only. But no,not just killed,..If they were children,they were picked up by the feet and their hands and body smashed against the wall.If they were girls, they were openly raped by nacked several times and then their breasts were chopped off.And if they were pregnent, after raped they were disembowelled.” (শিশুদের  দেওয়ালে,মাটিতে আছাড় মেরে শেষ খুন করা হয়েছিল।মেয়েদের বারবার ধর্ষণ করার পর।তাদের স্তন কেটে দেওয়া হয়েছিল আর, যারা এর ফলে গর্ভবতী হয়ে পড়েছিল,তাদের পেটে লাথি মেরে গর্ভপাত ঘটিয়ে মেরে ফেলা হয়েছিল।) ওই বইতে ২৯৬ পাতায় মোসলে লিখেছেন,যে অবিভক্ত বাংলাতে প্রায় সাড়ে ৬ লক্ষ মানুষ খুন হয়েছিল,মেয়েদের সঙ্গে পাঞ্জাব প্রদেশের মেয়েদের মতো ব্যবহার করা হয়েছিল। তিনি আরও লিখছেন,সারা দেশে গৃহহারা হয়েছিল ১০ কোটি ৫২ লক্ষ মানুষ,ধর্ষিতা হয়েছিলেন ২ কোটি ৮ লক্ষ নারী,ধর্মান্তরিত করে বা ধর্ষন করে বিক্রি করে দেওয়া মেয়েদের সংখ্যার হিসাব নেই।পুরুষদের সরাসরি খুন করা হয়েছিল।তার সংখ্যাও হিসাবের বাইরে।

কোনও হিসাব নেই সারা দেশের মধ্যে ছড়িয়ে যাওয়া সেই দাঙ্গা আর ধ্বংসের। পুড়ছে ঘর-বাড়ি,পুড়ছে মানুষ,খুন হচ্ছে প্রতিবেশী আর এক প্রতিবেশীর হাতে..এক বীভৎস সেই সময়টা যেন এক উলঙ্গ পৈশাচিকতার আবহাওয়া সারা দেশ জুড়ে। ব্যর্থ প্রশাসন,ব্যর্থ নেতারা।

এই রক্তাক্ত অগ্নিপথ দিয়ে এসে দাঁড়ালো স্বাধীনতা।বীর বিপ্লবীদের আত্মবলিদান সেদিন কোন সম্মানই পেলনা,যেন তার কোন মূল্যই রইল না। তাঁরা তো এই অবস্থা  চাননি।তাহলে কেন হল এই পরিস্থিতি? Leonard Mosley লিখেছেন তার উক্ত বইতে(২৯৪ পাতায়) ” But for Nehru, Patel and all the Congressmen and Mr.MD.Ali Zinnah with Muslim League yearning for the fruits of power. The Lord Mount Batten dangled in for out of their noses was too delectable to be refused.They gobbled it down “. চুক্তির বিষয়ে তিনি আরও লিখলেন(২৯৯-৩০০ পাতায়): ” Official documents dealing with the transfer the Power in India will not the officially realised until 1999, for handed over Subhas Chandra Bose, the prime war enemy of British either alive or dead…”.

যে মানুষটির শয়নে স্বপনে জাগরনে স্বপ্ন ছিল ভারতের স্বাধীনতা যার জন্য তিনি সব ত্যাগ করে দিয়েছিলেন,নিজের প্রানের চেয়েও যিনি ভালোবেসেছিলেন দেশ কে,দেশের মানুষ কে,  একমাত্র তিনিই হলেন ব্রিটিশের পয়লা নম্বর শত্রু..?

হ্যাঁ,ঠিকই ব্রিটিশ জেনে ফেলেছিল,সবাইকে আয়ত্ত করা যাবে…শুধু ওই মানুষটাকে নয় সুভাষ চন্দ্র বসু কিন্তু হায়,ইতিহাসের কি পরিহাস তিনি তখন অনেক দূরে,ধরা-ছোঁয়ার বাইরে।

অবশষে সেই স্বাধীনতা এলো ১৫ ই আগস্ট, ১৯৪৭। ঘরে ঘরে একদিকে আনন্দের বন্যা,আবার অন্যদিকে লাখো-কোটি ঘরে ঘরে সেদিন আলো জ্বলেনি।রান্নাঘরে অরন্ধন,ভেসে যাচ্ছে চোখের জলে মানুষগুলোর শাড়ির আঁচল,কাপড়ের খুঁট..।স্বজনহারার ব্যথায় বিদীর্ণ তাদের সমস্ত সত্তা।ঘর নেই,অভুক্ত পেট,বাড়ির মেয়ের সম্মান হয়েছে লুট,পথে পড়ে আছে ছেলের লাশ,প্রানে একটু বাঁচার জন্যে রাতের অন্ধকারে পথ হয়েছে সাথী পরিচয় হয়েছে ঠিকানাহীন উদ্বাস্তুরিফিউজি।এক নিমেষ সব ছারখার হয়ে গেছে।চারিদিকে খুন হওয়ার,ধর্ষিতার মর্মন্তুদ,বুক ফাটা কান্না আর হাহাকার,আর্তনাদ। লাহোর থেকে,করাচি থেকে ট্রেন এসে থামছে অমৃতসরে…ট্রেনের কামরা ভর্তি লাশের পর লাশ, অমৃতসর থেকে ট্রেন যাচ্ছে উলটো পথে..মানুষ নেই,যাচ্ছে লাশের পাহাড়।শিয়ালদার ফুটপাথে লাশের পর লাশ,বাংলার এপারের আর ওপারের মাটিতে দাঙ্গার রক্তসজ্জা,আগুনের লেলিহান শিখা,মহিলাদের ইজ্জত লুট। ঘরবাড়ি জ্বলছে,বেদখল হচ্ছে জমি জিরেত সব..এপার-ওপারের মাঝপথে লুটতরাজ,খুন আর ধর্ষন আর আগুনে মানুষের পোড়া মাংসের গন্ধকি বিভৎসতা।

তারপর?

দিন যায়,মাস যায়,বছর যায়,আবার ঘুরে আসে।স্বাধীন দেশের বয়স বাড়ে,আর তার সঙ্গে সঙ্গে সেই সব স্মৃতি ধীরে ধীরে ম্লান মুখে দেশের মানুষের মনের ইতিহাসে মাঝে মাঝে হয়তো জিজ্ঞাসা জাগে…আচ্ছা..দেশটার কি এমনটা হওয়ার কথা ছিল..?কারন যারা ছন্নছাড়া,হতচ্ছাড়া,হতভাগ্য ছিল, তারা তো সেই তেমনই তো আছে..? তাহলে..?

আসলে,সেদিন দেশের নেতাদের ইচ্ছায় দেশ ভাগ হয়েছিল…দেশের মানুষের ইচ্ছাতে নয়..,এটাই বাস্তব,এটাই ইতিহাসের কঠিন সত্য…সবাই জানে কথাটা,স্বীকার করে না। স্বীকার করেছিলেন যাঁরা,তাঁদের অন্যতম মৌলানা আবুল কালাম আজাদ ছিলেন।তিনি তাঁর “India Wins to Freedom” বইতে লিখেছেন..” History would never forgive us, if we agreed to partition. The verdict would them be that India was divided as much by the Muslim League as by Congress.”

তবু,আজ আমরা স্বাধীন। আমাদের দেশ, সেতো আমাদেরই।তাই,মনে রাখা দরকার,বন্ধু,এই দেশটার নাম ভারতবর্ষ। এই দেশের মাটি আমাদের বীর-বীরাঙ্গনাদের মাটি। হাজার হাজার বছরের এই মাটির ঐতিহ্য আর পরম্পরা হোল..”সর্বং সহা মায়ের মতো”….বাল্মিকী,বেদব্যাস,কালিদাস,চন্ডীদাস,নানক,

কবীর,শ্রীচৈতন্যদেব,লালন ফকির,সিরাজ সাঁই,মির্জা গালিব, মীরাবাঈ,নিজামুদ্দিন আউলিয়া,ঝাঁসী রানী লক্ষীবাঈ,রামমোহন,বিদ্যাসাগর,রবীন্দ্রনাথ,শ্রীরামকৃষ্ণ, বিবেকানন্দ,শ্রীমা সারদা,ভগিনী নিবেদিতা,শ্রী অরবিন্দ,মুন্সী প্রেমচাঁদ, কাজী নজরুল ইসলাম,শরৎ চন্দ্র,প্রমুখদের  যুগে যুগে উচ্চারিত এই দর্শন।আবার এই দেশেরই সন্তান প্রফুল্ল চাকী,ক্ষুদিরাম,বিনয়-বাদল-দীনেশ,ভগৎ সিং,রাজগুরু,শুকদেব,

চন্দ্রশেখর আজাদ,মদনলাল ধিংড়া বাঘাযতীন,প্রীতিলতা, মাতঙ্গিনী, সিধো-কানহো,তুকারাম,তিতুমির,রামান্না পিল্লাই,ভৃগু ফুকন,নানাসাহেব,তাঁতিয়া তোপী,শিবাজী,রানাপ্রতাপ, প্রমুখ আরও লাখো লাখো এ দেশের বীর-বীরাঙ্গনা।

অতএব,জননী জন্মভূমি হে আমার ভারববর্ষ, ভারতমাতা…তুমি আমাদের মা…তোমার স্বাধীনতা.. সেতো আমাদেরই মা। ওগো স্বাধীনতা মা আমার ভারতের অন্তরে অন্তরে, সীমান্তে সীমান্তে,কাছে-দুরে-দুরান্তে সদা সর্বদাই উচ্চারিত হয় “বন্দে মাতরম”,অনুরনিত হয় আজও শহীদ ভগৎ সিং-এর অঙ্গীকার..  “সরফরোশী কি তামান্না অব্ হামারে দিলমে হ্যায়, দেখনা হ্যায় জোর কিতনা বাজুয়ে কাতিল মে হ্যায়…”(এই গানটি লিখেছিলেন ১৯২১ সালে বিপ্লবী কবি বিসমিল আজিমাবাদী)।

রবীন্দ্রনাথের “হে মোর চিত্ত পূণ্যতীর্থ জাগো রে ধীরে, এই ভারতের মহামানবের সাগর তীরে…”

ফরাসী বিপ্লবের সেই চিরসত্য বানী “The People united shall always be victorious”

নেতাজী সুভাষচন্দ্র-এর বার্লিন থেকে সেই আহ্বান…

“Freedom.., My Motheris in my Sense,in my presense and Freedom is in my absence.” স্বাধীনতা মা আমার তুমি আমার অনুভুতিতে আছো, তুমি আমার উপস্থিতিতে আছো, তুমি আমার অনুপস্থিতিতেও থাকবে।

স্বাধীনতা, মা আমার, আমরা তোমার অতন্দ্র প্রহরায় ছিলাম,আছি, থাকবো।

তুমি চিন্তা কোরনা।

আরও খবর

মন্তব্য করুন

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

সম্পাদকের পছন্দ

টাটকা খবর

©2023 newsonly24. All rights reserved.