নিয়মিত জিরে খাওয়া উপকারিতা, জেনে নিন

ডেস্ক: রান্নায় জিরার ব্যবহার বাঙালির দীর্ঘদিনের অভ্যাস। এটি খাবারে বাড়তি স্বাদ ও গন্ধ যুক্ত করে। তবে শুধু খাবারের স্বাদ বাড়াতেই নয়, শরীরের নানা উপকারেও জিরার জুড়ি মেলা ভার। জিরে শুধু মশলাই নয়, বহু ঔষধি গুণ সম্পন্ন! শরীরের সচলতা বাড়াতেও জিরার কোনও বিকল্প হয় না বললেই চলে। সেই কারণেই তো আয়ুর্বেদিক বিশেষজ্ঞরা প্রতিদিনের ডায়েটে কোনও না কোনও ভাবে জিরাকে অনর্ভুক্ত করার পরামর্শ দিয়ে থাকেন। 


হজম ক্ষমতার উন্নতির পাশাপাশি নানাবিধ পেটের রোগ সারাতে এই প্রকৃতিক উপাদানটি যেমন বিশেষ ভূমিকা নেয়, তেমনি অ্যাজমার প্রকোপ কমাতে এবং ত্বক ও চুলের সৌন্দর্য বৃদ্ধিতেও কাজে আসে। জিরার আরও অনেক উপকারিতা আছে।

গ্যাস-অম্বল কমায়: গ্যাসের সমস্যার সবথেকে ভালো সমাধান লুকিয়ে জিরেতে। পেটে ব্যথা কমাতেও জিরে ভেজানো জল যথেষ্ট সাহায্য করে। হজম ক্ষমতার উন্নতিতে জিরার কোনও বিকল্প হয় না বললেই চলে। যারা হজমের রোগে ভুগছেন, তারা দিনে কম করে ৩ বার জিরা দিয়ে বানানো চা খান করুন। কয়েকদিন এমনটা করলেই দেখবেন উপকার মিলতে শুরু করবে। 

গর্ভাবতী মহিলাদের জন্য: গর্ভাবতী নারীর শরীর ঠিক রাখতে জিরা বেশ উপকারী। এই সময় হবু মায়েদের কনস্টিপেশন এবং হজমের সমস্যা হয়ে থাকে। জিরা এই দু ধরনের সমস্যা কমাতে দারুন উপকারে লাগে। সেইসঙ্গে মাথা ঘোরা এবং গর্ভাবস্থা সম্পর্কিত আরও সব লক্ষণ কমাতেও বিশেষ ভূমিকা নেয়। সেই কারণেই তো ভাবি মায়েদের প্রতিদিন ১ গ্রাস গরম দুধে হাফ চামচ জিরা এবং ১ চামচ মধু মিশিয়ে খাওয়ার পরামর্শ দেন বিশেষজ্ঞরা।


অনিদ্রার সমস্যাকে দূর করে: যাদের রাতের বেলা ভাল করে ঘুম আসে না, তারা প্রতিদিন ঘুমনোর আগে ১ চামচ চটকানো কলার সঙ্গে হাফ চামচ জিরা পাউডার মিশিয়ে খাওয়া শুরু করুন। এই ঘরোয়া ওষুধটি খেলে ঘুমের আর কোনও সমস্যা হবে না দেখবেন। কারণ জিরা এবং কলা একসঙ্গে খেলে মস্তিষ্কে মেলাটোনিন নামে এক ধরনের কেমিকেলের ক্ষরণ বেড়ে যায়। এই কেমিকালটি ঘুম আসার ক্ষেত্রে দারুনভাবে সাহায্য করে।


ঠান্ডায় জ্বরের প্রকোপ কমায়:
জিরের জলে রয়েছে অ্যান্টি-ব্যাকটেরিয়াল , অ্যান্টি ইনফ্লেমেটরি প্রপাটিজ যা ঠান্ডা লাগা বা জ্বরের প্রকোপ কমায়। আসলে এই প্রকৃতিক উপাদানটি শরীরের প্রবেশ করা মাত্র দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকে বাড়িয়ে দেয়। ফলে ভাইরাল ফিবার এবং ওই সংক্রান্ত নানাবিধ কষ্ট কমে যায়। জ্বর কমাতে কমাতে ১ চামচ জিরা এবং অল্প পরিমাণ আদা, ১ গ্লাস জলে মিশিয়ে নিন প্রথমে। তারপর জলটা ফুটিয়ে নিয়ে ছেঁকে নিন। এই ছেঁকে নেওয়া জলটা দিনে ২-৩বার পান করুন। তাহলেই দেখবেন কষ্ট কমে যাবে।

আরও পড়ুন: আতঙ্কের নাম করোনা, সংক্রমণ এড়াতে ডায়েট কেমন হওয়া উচিত, জেনে নিন


কনস্টিপেশনের প্রকোপ কমায়:
জিরে এতে রয়েছে প্রচুর মাত্রায় ফাইবার, যা বেশ কিছু এনজাইমের ক্ষরণ বাড়িয়ে দিয়ে কোষ্টকাঠিন্যের মতো রোগ সারাতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে। শুধু তাই নয়, পাইলসের কষ্ট কমাতেও জিরা দারুনভাবে সাহায্য করে। এক্ষেত্রে ১ চামচ জিরে ভেজে নিয়ে গুঁড়ো করে নিন। তারপর সেই পাউডার ১ গ্লাস জলে মিশিয়ে প্রতিদিন সকালে খালি পেটে খাওয়া শুরু করুন। দেখবেন উপকার মিলবে।


ওজন কমাতে সাহায্য করে: সকালে ঘুম থেকে উঠে খেতে পারেন জিরে ভেজানো জল। রাতে দুই টেবিল চামচ জিরে এক গ্লাস জলে ভিজিয়ে রেখে পরদিন সেই জল সকালে খালি পেটে খেয়ে নিন। ধীরে ধীরে নিজের শরীরের পরিবর্তন লক্ষ্য করবেন, আপনার কমবে ওজনও। জিরে জলে আয়রনের পাশাপাশি বেশ ভালো পরিমাণ ভিটামিন এ ও সি থাকে, যা থেকে অ্যান্ট- অক্সিডেন্টের সুবিধা পাওয়া যায়।
দুই চা-চামচ জিরে এক গ্লাস জল গরম করে ছেঁকে উষ্ণ গরম অবস্থায় মধু দিয়ে খেয়ে নিন খালি পেটে। এতে আপনার ওজন কমাতে সাহায্য করবে।
 

Related posts

বাইরে বেরোলে জ্বালাপোড়া গরম, কী করবেন আর কী করবেন না?

জুন মাসে ভারতে আছড়ে পড়তে পারে করোনার চতুর্থ ঢেউ

কোভিডে কাহিল ন্যাশনাল মেডিক্যাল, আক্রান্ত ৮০ স্বাস্থ্য কর্মী