দিঘা: আগামী বৈশাখ মাসে অক্ষয় তৃতীয়ার দিন দিঘার নির্মীয়মাণ জগন্নাথ মন্দিরের উদ্বোধন হবে বলে ঘোষণা করলেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বুধবার মন্দির পরিদর্শন শেষে তিনি জানান, এবার থেকে দিঘার জগন্নাথ মন্দির থেকে রথযাত্রার সূচনা হবে। রথযাত্রার ঐতিহ্যবাহী সোনার ঝাড়ুর জন্য নিজের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট থেকে পাঁচ লক্ষ টাকা অনুদান দেওয়ার কথাও ঘোষণা করেছেন তিনি।
মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘সমুদ্রসৈকতে একটি জগন্নাথ মন্দির তৈরি করার পরিকল্পনা ছিল, যা আজ বাস্তব রূপ পেয়েছে। তিন বছর ধরে কাজ চলার পর এটি সম্পন্ন হয়েছে।’’ পুরীর জগন্নাথ মন্দিরের আদলে নির্মিত হলেও এই মন্দিরের সঙ্গে তুলনা করতে রাজি নন মমতা। তিনি বলেন, ‘‘পুরীর মন্দির রাজাদের সময়কার, আর এই মন্দির সরকারের উদ্যোগে তৈরি।’’
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আশা প্রকাশ করেন, দিঘার এই জগন্নাথ মন্দির ভবিষ্যতে সারা ভারতের পর্যটক এবং ভক্তদের জন্য একটি প্রধান তীর্থক্ষেত্রে পরিণত হবে। মন্দিরে থাকবে ভোগঘর, স্টোর রুম, গেস্ট রুম, এবং সেল্ফ হেল্প গ্রুপের মেয়েদের জন্য ব্যবসার বিশেষ ব্যবস্থা।
মন্দির পরিচালনার জন্য একটি ১৩ সদস্যের ট্রাস্টি বোর্ড গঠন করা হয়েছে। এর নেতৃত্বে থাকবেন রাজ্যের মুখ্যসচিব। সদস্যদের মধ্যে থাকবেন পূর্ব মেদিনীপুরের জেলাশাসক, জেলার পুলিশ সুপার, ইসকন ও সনাতন ধর্মের প্রতিনিধি, এবং মন্দিরের প্রধান পুরোহিত। অতিরিক্ত জেলাশাসক (এডিএম) মন্দির ও পর্যটন ব্যবস্থাপনার দায়িত্বে থাকবেন। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজে এই ট্রাস্টির সদস্য না থাকলেও মন্দির নির্মাণে স্বেচ্ছাসেবী হিসাবে কাজ করছেন।
দিঘার জগন্নাথ ধামের মূল দরজাটি থাকবে চৈতন্যদ্বারে। মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন, এই জায়গার নামকরণ করা হবে ‘চৈতন্যদ্বার জগন্নাথ ধাম’। পুরীর মন্দিরের মতো প্রতিদিন এখানে পতাকা উত্তোলনের ব্যবস্থা থাকবে। রথযাত্রার আয়োজনও হবে নিয়মিত।
মন্দির চত্বরে থাকবে পুলিশ পোস্ট, রথ রাখার জায়গা এবং পুরোহিতদের জন্য বিশেষ অতিথি নিবাস। মমতা জানিয়েছেন, ‘‘এখানে কোনও রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ হবে না। মন্দির সংক্রান্ত সমস্ত কার্যক্রম ট্রাস্টি বোর্ড পরিচালনা করবে।’’
মুখ্যমন্ত্রী আশা প্রকাশ করেন, আগামী কয়েক হাজার বছর ধরে এই মন্দির বাংলার সমুদ্রতীরবর্তী অন্যতম প্রধান তীর্থক্ষেত্র হয়ে থাকবে। তিনি হিডকোকে এই প্রকল্প সফলভাবে সম্পন্ন করার জন্য ধন্যবাদ জানান।