হুগলি: ডিভিসি থেকে ছাড়া জলে প্লাবিত হয়েছে হুগলির বিস্তীর্ণ অঞ্চল। বলাগড়ের জিরাট পঞ্চায়েতের চরখয়রামারী এলাকা সম্পূর্ণ জলের তলায়। গঙ্গার জোয়ারের চাপে ভেঙে গেছে চরখয়রামারী থেকে জিরাটের সংযোগকারী একমাত্র কালভার্ট। এর ফলে ওই এলাকায় গৃহবন্দি হয়ে পড়েছেন কয়েক হাজার মানুষ। চরখয়রামারীতে বসবাসকারী ২৫০ পরিবারের মধ্যে ৬০টি পরিবার স্থানীয় বিদ্যালয়ে স্থাপিত অস্থায়ী ত্রাণ শিবিরে আশ্রয় নিয়েছে।
অতিবৃষ্টি এবং ডিভিসির ছাড়া জলে বলাগড়ের শ্রীপুর, বাবুচর, সিজা কামালপুর, বানেশ্বরপুর, আশ্রমঘাটসহ একাধিক এলাকা জলমগ্ন হয়ে পড়েছে। গ্রামের রাস্তাঘাট এবং বিস্তীর্ণ চাষের জমি ডুবে গেছে, ফসলের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কা করছেন কৃষকরা। ডিভিসির জলের তোড়ে নতুন করে প্লাবিত হয়েছে খানাকুল ১ এবং ২ নম্বর ব্লকের ২৪টি পঞ্চায়েত এলাকা। বিশেষত খানাকুল ২ নম্বর ব্লকের মারোখানা, পানশিউলি, পলাশপাই, জগৎপুর, নন্দনপুর, ও রাজহাটি গ্রামে ভয়াবহ পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। এসব এলাকায় কোথাও কোমর সমান, কোথাও বা বুক সমান জল দাঁড়িয়ে আছে। হাজার হাজার মানুষ বাড়ির ছাদে আশ্রয় নিতে বাধ্য হয়েছে। খানাকুলের কিশোরপুর এলাকায় জলের তোড়ে একটি পাকা বাড়ি তাসের ঘরের মতো ভেঙে পড়েছে, যার ভিডিও ইতিমধ্যেই ভাইরাল হয়েছে।
আরামবাগ এবং পুরশুড়ার ত্রাণ শিবিরে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে অসংখ্য মানুষকে। বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন অবস্থায় দিন কাটাচ্ছেন সিংহভাগ এলাকাবাসী, মোবাইল নেটওয়ার্কও প্রায় অচল হয়ে পড়েছে।
পূর্ব মেদিনীপুরের পাঁশকুড়ায়ও ভয়াবহ জলবন্দি পরিস্থিতি। পাঁশকুড়া পুরসভার ১৮টি ওয়ার্ড জলের তলায় চলে গেছে। পাঁশকুড়া স্টেশন চত্বরসহ জাতীয় সড়ক পর্যন্ত ডুবে গেছে। জাতীয় সড়কে যান চলাচল সম্পূর্ণ বন্ধ, এমনকি স্থানীয়রা জলের মধ্যে মাছ ধরতে ব্যস্ত।
জলের এমন প্রাকৃতিক দুর্যোগে প্রশাসন দ্রুত ত্রাণ এবং উদ্ধারকাজ চালানোর চেষ্টা করছে, তবে পরিস্থিতি এখনও বেশ উদ্বেগজনক।