ডেস্ক: অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের সফর ঘিরে সরগরম ত্রিপুরা। আগরতলা বিমানবন্দর থেকে আগরতলা শহর পর্যন্ত একাধিক জায়গায় তৃণমূল কংগ্রেসের তরফ থেকে লাগানো হয়েছিল পোস্টার, ব্যানার, ফ্লেক্স। যদিও সেই সব পোস্টার,ব্যানার ছিঁড়ে ফেলা হয়েছে বলে অভিযোগ ত্রিপুরা তৃণমূল নেতৃত্বের। এরই মধ্যে অভিষেককে কালো পতাকা দেখানো হল ত্রিপুরায়। এক নয়, তিন-তিনটি জায়গায় কালো পতাকা দেখানো হয় অভিষেককে। আগরতলা বিমানবন্দরের কাছে দলীয় পতাকা লাগাতে গিয়ে ‘আক্রান্ত’ তৃণমূল ছাত্রনেতা দেবাংশু ভট্টাচার্য, সুদীপ রাহা। তাঁদের সরিয়ে পতাকা ছিঁড়ে দেওয়া হয় বলে অভিযোগ। দেবাংশুদের আক্রান্ত হওয়ার খবর। সেই খবর জানার পরেই টুইটে বিব্লবদেবকে নিশানা করেছেন তিনি। টুইটে অভিষেক লিখেছেন ত্রিপুরায় গণতন্ত্র এখন বিজেপির শাসনে। একটা দারুন উচ্চতায় রাজ্যকে নিয়ে গিয়েছে বিপ্লব দেব।
ত্রিপুরেশ্বরী মন্দিরের কাছে চড়িলাং এলাকায় আটকানো হল অভিষেকের কনভয়। রাস্তায় পোস্টার হাতে বসে পড়ল স্কুলপড়ুয়ারা। উঠল ‘অভিষেক ব্য়ানার্জি গো ব্যাক’ স্লোগান, দেখানো হল কালো পতাকাও। মন্দির চত্বরে জমায়েত বহু তৃণমূল কর্মী, সমর্থকের। ‘খেলা হবে’ স্লোগানে মুখর এলাকা। কোভিড বিধি লঙ্ঘনের জন্য় তাঁদের সরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করায় বাধার মুখে পুলিশ। ত্রিপুরেশ্বরী মন্দির এলাকায় ব্যাপক উত্তেজনা। অভিষেক নিজে গাড়ি থেকে নেমে কথা বলেন পড়ুয়াদের সঙ্গে। তারপর তাঁর রাস্তা ছেড়ে দেওয়া হয়। জানা গিয়েছে, প্রধান শিক্ষকের বদলির দাবিতে পড়ুয়ারা পথে নেমেছে।
বিক্ষোভের মাঝেই ত্রিপুরেশ্বরী মন্দিরে পুজো দিলেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। বিজেপি নেতৃত্বকে তোপ দাগেন তিনি। অভিষেক বলেন, “দু, চার দিন আগে ‘অতিথি দেব ভব’র কথা বলছে, সেই বক্তব্যের উদাহরণ পেলাম। ত্রিপুরার মানুষের উপর ছেড়ে দিচ্ছি। বিজেপি নেতারা দিল্লি থেকে এসে বাংলার গণতন্ত্র নিয়ে গলা ফাটান। ত্রিপুরায় গণতন্ত্র দেখুক আগে।” ভিডিও টুইট করে বিজেপিকে দুষলেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর প্রতিক্রিয়া, ‘অতিথি দেব ভবো-র উদাহরণ দেখলাম, ত্রিপুরার মানুষই এর বিচার করবেন।’
আরও পড়ুন: ত্রিপুরাতে আক্রান্ত দেবাংশু সহ একাধিক নেতা-কর্মী, আটকানো হল অভিষেকের কনভয়
তৃণমূলের সাধারণ সম্পাদককে পাল্টা নিশানা করেছেন রাজ্য বিিজেপি মুখপাত্র শমীক ভট্টাচার্য। তিনি জানান, বিজেপির সংস্কৃতিতে কেউ কাউকে আক্রমণ করে না। বরং এ রাজ্যে দিলীপ ঘোষকে বারবার আক্রান্ত হতে হয়েছে।
বাংলা জয়ের পর ধীরে ধীরে বাইরের রাজ্যে নিজেদের অস্তিত্ব জানান দিতে শুরু করেছে তৃণমূল কংগ্রেস। সেকারণেই এবার ২১ জুলাইয়ের শহিদ স্মরণ গোটা দেশে হয়েছে। মোদীর গুজরাত থেকে ত্রিপুরা সর্বত্র বড় করে হয়েছে ২১ জুলাই উদযাপন। সর্বভারতীয় স্তরে তৃণমূলের বার্তা পৌঁছে দিতে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবার ২১ জুলাইয়ের মঞ্চ থেকে হিন্দি এবং ইংরেজিতে বার্তা দিয়েছেন। সেই মঞ্চেই অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় বার্তা দিয়েছিলেন এবার অন্য রাজ্যে তৃণমূল পা রাখবে সেই রাজ্য জয় করার জন্য বিরোধী হিসেবে থাকার জন্য নয়। তৃণমূলের সেই টার্গেটে প্রথমে আসে ত্রিপুরা। ত্রিপুরায় আগে থেকেই সংগঠন বাড়াতে শুরু করেছিল তৃণমূল কংগ্রেস। মুকুল বিজেপিতে যোদ দেওয়ায় সেই কাজ কিছুটা থমকে গিয়েছিল। ফের মুকুলের তৃণমূল কংগ্রেসে ফিরে আসা নতুন করে ত্রিপুরার সংগঠন চাঙ্গা হয়ে উঠেছে।