ডেস্ক: কলকাতার এটিএম জালিয়াতি কাণ্ডে এটিএম তদন্তে নেমে এখনও পর্যন্ত চারজনকে গ্রেফতার করেছে কলকাতা পুলিশ। এর মধ্যে ২ জনকে কলকাতা থেকে এবং বাকি ২ জনকে গুজরাত থেকে গ্রেফতার করা হয়েছে। সিসিটিভি ফুটেজের সূত্র ধরেই চারজনের নাগাল পেয়েছে পুলিশ৷
গত ২২ মে থেকে ২৮ মে-এর মধ্যেই কাশীপুর, নিউমার্কেট ও যাদবপুরের তিনটি এটিএম থেকে একই কায়দায় টাকা চুরি হয়েছে বলে জানিয়েছিল লালবাজার। কাশীপুর, নিউমার্কেট এবং যাদবপুরের এটিএম থেকে যথাক্রমে ৭ লক্ষ, ১৮.৮ লক্ষ এবং ১৩.২ লক্ষ টাকা উধাও হয়েছে। এরপর বউবাজারেও একই ঘটনা ঘটে। নয়া কায়দায় শহরে এটিএম জালিয়াতি গত কয়েক দিনে ঘুম উড়িয়েছে পুলিশ আধিকারিকদের। শহরের এটিএমগুলিতে বাড়ানো হয়েছে নজরদারি। প্রাথমিক তদন্তে জানা যায়, নতুন একটি যন্ত্রের সাহায্যে চলছে এই জালিয়াতি।
জানা গিয়েছে, এই ঘটনায় কলকাতা থেকে গ্রেফতার বিশ্বদীপ রাউত ও আব্দুল সইফুল মণ্ডল। কলকাতা থেকে ধৃত দু’জনকে পুলিশি হেফাজতের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। পুলিশ সূত্রের খবর, বিশ্বদীপের কসবায় একটি মোবাইলের দোকান রয়েছে। তাঁর ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে সম্প্রতি একটা মোটা অঙ্কের টাকা জমা পড়েছিল। পুলিশ সেই টাকা লেনদেনের সূত্র ধরেই তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করে। এরপরই বেশ কয়েকজনের নাম উঠে আসে। তাঁকে গ্রেফতারির পাশাপাশি বাকি তিনজনকেও ধরা হয়।
প্রতারকদের নাগাল পেতে কলকাতা পুলিশের অফিসাররা ভিন রাজ্যে পাড়ি দেন৷ এর পরই সুরাত থেকে মনোজ গুপ্ত (৪০) এবং নবীন গুপ্ত (৩০) নামে দু’ জনকে গ্রেফতার করে পুলিশ৷ এরা দু’ জনেই দিল্লির ফতেহপুর বেরির বাসিন্দা৷ এর পাশাপাশি কলকাতা থেকে বিশ্বদ্বীপ রাউত এবং আব্দুল সইফুল মণ্ডল নামে আরও দুই অভিযুক্তকে গ্রেফতার করা হয়৷ ধৃতদের কাছ থেকে বেশ কিছু ইলেক্ট্রনিক ডিভাইস, ডেবিট কার্ডের মতো বিভিন্ন সরঞ্জাম উদ্ধার করেছে পুলিশ৷
আরও পড়ুন: মাধ্যমিক, উচ্চ মাধ্যমিক নিয়ে জনসাধারণের মতামত চাইল সরকার
সুরাত থেকে গ্রেফতার হওয়া দুই অভিযুক্তকেই কোর্টে পেশ করে ট্রানজিট রিমান্ডে কলকাতায় নিয়ে আসা হবে৷ পাশাপাশি সুরাট থেকে ধৃতদের ট্রানজিট রিমান্ডে কলকাতা আনার পর তাঁদেরও জেরা করা হবে। চারজনকে মুখোমুখি বসিয়ে ঘটনার কিনারা করতে চায় পুলিশ। শহরের এটিএমগুলি পরীক্ষা করেন ফরেন্সিক আধিকারিকরা। ফরেন্সিক বিশেষজ্ঞদের অনুমান, ডুপ্লিকেট চাবি দিয়ে এটিএম খুলে বিশেষ যন্ত্র লাগানো হচ্ছে।
তার ফলে এটিএম-এর নিয়ন্ত্রণ চলে যাচ্ছে প্রতারকদের হাতে। তুলে নেওয়া হচ্ছে কোটি কোটি টাকা। এটাই হল ‘ম্যান ইন দ্য মিডল অ্যাটাক’ পদ্ধতি। সূত্রের খবর, এটিএমের লোকাল এরিয়া নেটওয়ার্ক বা ল্যান কেবিলের সঙ্গে বিশেষ ডিভাইস যা যন্ত্র বসিয়ে দিচ্ছে প্রতারকরা। এরপর মাস্টার কি দিয়ে এটিএমের ডিসপ্লে-র ওপরের হুড খুলে লোপাট করা হচ্ছে টাকা। ডিভাইস ইনস্টলের ফলে, ব্যাঙ্কের বিশেষ সফটঅয়্যার অকেজো হয়ে যাচ্ছে। ফলে এটিএম থেকে টাকা লোপাট করলেও ব্যাঙ্কের কাছে কোনও তথ্য পৌঁছচ্ছে না।