নানা কৌশলে অভিযুক্তদের জেলে ঢোকাতে চাইছে সিবিআই, দাবি সিঙ্ঘভি

কলকাতা: সোমবার সিবিআই দফতরে গিয়ে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার অফিসারদের উপরে চাপ সৃষ্টির চেষ্টা করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়৷ কলকাতা হাইকোর্টে নারদ মামলার শুনানিতে সিবিআই-এর হয়ে সওয়াল করতে গিয়ে এমনই গুরুতর অভিযোগ করেছেন সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহতার৷ 


তুষার মেহতা এ দিন অভিযোগ করেন, চার অভিযুক্ত নেতাকে গ্রেফতারির খবর পেয়েই নিজাম প্যালেসে সিবিআই দফতরে হাজির হন মুখ্যমন্ত্রী৷ সেখানে গিয়ে তিনি তাঁকেও গ্রেফতার করার জন্য সিবিআই অফিসারদের বলেন৷ নিঃশর্তভাবে অভিযুক্তদের ছেড়ে দেওয়ার জন্য়ও তিনি দাবি জানান বলে অভিযোগ করেন তুষার মেহতা৷ 


‘মুখ্যমন্ত্রী এবং বাকি বিধায়করা রাজনৈতিক প্রতিহিংসার প্রতিবাদ করেছেন। তাঁরা কোনও অশান্তি করেননি’, আদালতে সওয়াল অভিষেক মনু সিঙ্ঘভির।
সোমবার নিজাম প্যালেসের বাইরে আইনশৃঙ্খলার অবনতি, মুখ্যমন্ত্রীর অবস্থান নিয়ে বলবেন? আইনমন্ত্রীর আদালতে অবস্থান নিয়ে কী বলবেন?’, অভিষেক মনু সিঙ্ঘভিকে প্রশ্ন ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি রাজেশ বিন্দালের। ‘পুরোটাই গণতান্ত্রিক প্রতিবাদ। কাউকে কাজ করতে বাধা দেওয়া হয়নি। বিচারব্যবস্থাকে বিঘ্নিত করা হয়নি।’ আদালতে সওয়াল অভিষেক মনু সিঙ্ঘভির।


অভিষেক মনু সিংভি বলেন, সেদিন সিবিআই দফতরের বাইরের বিক্ষোভকে যেভাবে দেখানো হচ্ছে তা ঠিক নয়। এমন পরিস্থিতি দেশে এই প্রথমও হল না।  এভাবে বিক্ষোভ দেখানো অবশ্য ঠিক নয়। গত পাঁচ বছরে এই মামলা নিয়ে কোনও পদক্ষেপ করেনি সিবিআই। এতদিনে মনে পড়ল? ওইদিন কোভিড বিধি মানা হয়নি। কিন্তু তাকে যুক্তি হিসেবে খাড়া করে মামলা অন্য রাজ্যে নিয়ে যাওয়া ঠিক নয়। সুব্রত মুখোপাধ্যায়ের বয়স ৭৫ বছরের বেশি। টানা ৪৫ বছর ধরে তিনি বিধায়ক। সুপ্রিম কোর্টের নিয়ম অনুযায়ী তাঁকে আটকে রাখা যায় না। 


এরপর তুষার মেহতার উদ্দেশে বিচারপতি প্রশ্ন করেন, ‘চার্জশিট পেশ করা হয়ে গিয়েছে, এই ৪ জনকে আগে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। তাহলে এই করোনাকালে এঁদের শুধুশুধু জেলে রাখার প্রয়োজন আছে কি?‘ ধৃতেরা অসহযোগিতা করেছেন এমন কোনও উদাহরণ আছে কি না, তাও সলিসিটার জেনারেলের কাছে জানতে চান বিচারক। 

জবাবে তুষার মেহতা বলেন, অভিযুক্তরা জেলে নেই, তাঁরা হাসপাতালে আছেন। তিনি যোগ করেন, ‘এই আদালত সিবিআইকে নিয়োগ করেছিল। তাদেরকেই কাজ করতে বাধা দেওয়া হচ্ছে। যাতে ন্যায্য বিচার না হয় তার চেষ্টা করা হচ্ছে।’


পাল্টা অভিযুক্তদের পক্ষে সিংভি আরও বলেন, নিজাম প্যালেসে সেদিনের পরিস্থিতি নজিরবিহীন বলছে সিবিআই। পাশপাশি চার হেভিওয়েটকে যেভাবে বিনা নোটিসে তুলে আনা হয়েছে তাও নজিরবিহীন। এমনকি নিম্ন আদালতে জামিন পাওয়ার পরও অভিযুক্তদের না জানিয়ে হাইকোর্টে জামিন নাকচের পিটিশন করা হল। এটাও নজিরবিহীন। সবে মিলিয়ে নানা কৌশলে অভিযুক্তদের জেলে ঢোকাতে চাইছে সিবিআই।

Related posts

জাঁকিয়ে শীতের মধ্যে আবহাওয়ার ফের বড়সড় ভোলবদলের পূর্বাভাস

একতরফা ম্যাচে পাকিস্তানকে উড়িয়ে ২২৮ রানে বিশাল জয় ভারতের

জল্পনার অবসান! রাজ্য মন্ত্রিসভায় একাধিক রদবদল, পর্যটন হারালেন বাবুল