সাধনা দাস বসু : একটা সময় রাজ্যে লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছিল করোনা আক্রান্তের সংখ্যা। সেই সঙ্গে বাড়ছিল কোভিড হাসপাতালে শয্যা সংখ্যার অপ্রতুলতার অভিযোগ। মৃদু উপসর্গ কিংবা উপসর্গবিহীন কোভিড পজেটিভ রোগীরা যাতে হাসপাতালে ভিড় জমাচ্ছিলেন।
এর একটি কারণও ছিল। অনেক সময় বাড়িতে জায়গার অভাবে আইসোলেশনে পড়তে হচ্ছিল আক্রান্তদের। ফলে তাঁরা ছুটছিলেন হাসপাতালে।
এই সমস্যার সমাধানে এগিয়ে আসে রাজ্য সরকার। স্টেডিয়াম এবং অডিটোরিয়ামগুলিকে বানানো হয় কোভিড রোগীদের জন্য সেফ হোম। রাজ্যের পুর এলাকাগুলোতে ১০০টিরও বেশি সেফ হোম গড়ে তোলা হয়েছে ।
কী এই সেফ হোম
মৃদু উপসর্গ কিংবা উপসর্গবিহীন কোভিড পজেটিভদের নিঃখরচায় চিকিৎসা ও খাওয়াদাওয়ার ব্যবস্থা থাকছে এই সেফ হোমে। কলকাতা সহ একাধিক জেলায় প্রায় ৭হাজার শয্যার ১০৬টি সেফ হোম তৈরি করা হয়েছে।
সেফ হোমে পুরুষ ও মহিলাদের জন্য থাকার আলাদা ব্যবস্থা রয়েছে । মোটামুটিভাবে দশ থেকে চৌদ্দ দিন এখানে থাকা যায় ।
সেফ হোমে রয়েছে চিকিৎসক , নার্স ও অ্যাটেন্ডডেন্ট । সেই সঙ্গে থাকছে অক্সিজেন সিলিন্ডার , রক্তচাপ মাপার যন্ত্র , অক্সিজেন পরিমাপের জন্য পালস্ অক্সিমিটার ও অন্যান্য চিকিৎসা সরঞ্জাম । রোগীদের নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা হয় । চারবেলা আবাসিকদের অত্যন্ত ভালো খাবার দেওয়া হয় ।
ঘর , বারান্দা , বাথরুম , সিঁড়ি নিয়মিত পরিষ্কার ও স্যানিটাইজ করা হয় । কারো শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে সঙ্গে সঙ্গে তাকে কোভিড হাসপাতালে স্থানান্তরিত করার ব্যবস্থাও রয়েছে ।
রাজ্য জুড়ে এই সেফ হোম তৈরি করার ফলে একদিকে যেমন হাসপাতালগুলোতে রোগীর চাপ কমেছে , অন্য দিকে গোষ্ঠী সংক্রমণ অনেকটাই ঠেকানো গেছে ।
রাজ্যের এই সেফ হোমের সাফল্য দেখে ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অফ মেডিকেল রিসার্চ ( ICMR ) এর প্রধান প্রফেসর বলরাম ভার্গব বলেছেন , কোভিভ নাইনটিন মোকাবিলায় পশ্চিমবঙ্গের সেফ হোম গোটা দেশের মডেল হওয়া উচিত ।