উত্তরবঙ্গের অজানা কিছু জায়গা

শীতে মন ভালো করা মানেই উত্তরবঙ্গ।  উত্তরের পাহাড়ের নিস্তব্ধ স্নিগ্ধ পরিবেশে আপনাকে বেশ মুগ্ধ করবে। যেমন বাহারি তেমনই বাহারি সেখানকার প্রকৃতি। বেড়ানো হোক বা অবসর যাপন সবকিছুর জন্যি আদর্শ এই স্থানগুলি। আজ তাহলে রইল উত্তরবঙ্গের সেই সব অদেখা জায়গাগুলির হদিশ।

বিদ্যং

কালিম্পঙের গা ঘেঁষে বয়ে যাওয়া রেল্লি নদীর তীরেই অবস্থিত বিদ্যং গ্রাম। এক, পাইন, ফারের জঙ্গলে নিরিবিলিতে ছুটি কাটানোর দারুণ স্থান এটি। কালিম্পং শহর থেকে এই গ্রামের দূরত্ব মাত্র ১৫ কিলোমিটার। গ্রামকে ঘিরে রয়েছে ঘন অরণ্য। সকালে পাখির কিচির মিচির এবং রাতে পোকার গুনগুনানি ছাড়া এখানে আর কোনও শব্দ পাওয়া যায় না। পূর্ণিমা রাতে এই গ্রামের সৌন্দর্য যেন তাজমহলকেও হার মানায়। নিউ জলপাইগুড়ি বা শিলিগুড়ি থেকে কালিম্পং হয়ে বছরের যেতে সময়ই থেকে আসতে পারেন বিদ্যং গ্রাম থেকে। চাইলে গ্রাম থেকেই কালিম্পং, লাভা, লোলেগাও, রিশপ ঘুরে আসতে পারেন।

রিশপ

রিশপ আরও এক পাহাড়িয়া গ্রাম, যে গ্রামের প্রতিটি বাড়ির বারান্দায় শোভা পায় রঙিন ফুল আর নানান অর্কিড। আর আকাশ পরিষ্কার থাকলে আকাশে হিমালয়ের হিমকন্যাদের দর্শন মেলে। লাভা থেকে মাত্র ১২ কিমি দূরে। ৮,৫০০ ফুট উচ্চতায় নেওড়াভ্যালি ন্যাশনাল পার্কের অন্তর্গত এই পাহাড়ি গ্রামে প্রচুর পাখি আর আকাশের ক্যানভাসে একফ্রেমে কাঞ্চনজঙ্ঘা-সহ নানা অল্প চেনা শৃঙ্গের দেখা মেলে। সুন্দর সূর্যোদয় দেখতে হলে প্রায় ২ কিমি জঙ্গল ট্রেকে চলে আসুন টিফিনদারা ভিউপয়েন্টে।

কোলাখাম

কালিম্পঙের সবচেয়ে সুন্দর গ্রামটি হল কোলাখাম। শান্ত, নিরিবিলিতে ঘুরে বেড়ানোর সেরা ঠিকানা এটি। গামের পশ্চিমদিকে রযেচে কাঞ্চনজঙ্ঘা শৃঙ্গ।সন্ধেবেলা কোলাখাম থেকে দেখা যায় আলো ঝলমলে রিশপ। মনে হয় অন্ধকার পাহাড়ের গায়ে অসংখ্য জোনাকি। ছাঙ্গে  জলপ্রপাতে যেতে হয় ঘন জঙ্গল চিরে। কানে আসবে জলপ্রপাতে প্রবল শব্দ। ৩০০ ফুট উঁচু থেকে নেমেছে জলধারা। যদি বাংলোর চৌহদ্দিতেও গা এলিয়ে বসে থাকেন, তবুও ঝকঝকে নীল আকাশের গায়ে চকচকে কাঞ্চনজঙ্ঘাকে দেখে মন জুড়িয়ে যাবে। 

হোমস্টে-র বারান্দায় বসে ঘণ্টার পর ঘণ্টা কাটিয়ে দেওয়া যায় প্রকৃতির রূপ দেখে। গ্রামকে ঘিরে আছে হাজার হাজার পাইন, ফার গাছের সারি। পাখির কলরব যেন শেষ হতেই চায় না এই গ্রামে। মানুষের ভিড় তেমন নেই।  গ্রামজুড়ে রয়েছে ফুলের সারি। গ্রামেই রয়েছে চাঙ্গে ঝরনা।  বছরের যে কোনও সময়ই ঘুরে আসতে পারেন এই গ্রাম থেকে। নিউ জলপাইগুড়ি থেকে প্রায় ১১৭ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত কোলাখাম। শিলিগুড়ি বা নিউ জলপাইগুড়ি থেকে গাড়ি ভাড়া করে এই গ্রামে পৌঁছোনো যায়। কালিম্পং থেকে শেয়ারেও গাড়ি পাওয়া যায়। নিউ মাল জংশন থেকে কোলাখামের দূরত্ব প্রায় ৫২ কিলোমিটার।

ভালুকহোপ

ভিড়ভাট্টা থেকে দূরে থাকতে চাইলে কটা দিন কাটিয়ে যেতে পারেন ভালুকহোপ গ্রাম থেকে। এই গ্রাম থেকে কাঞ্চনজঙ্ঘার সৌন্দর্য ভাষায় প্রকাশ করা যায় না। নির্জন এই পার্বত্য গ্রামটিতে বছরের যে কোনও সময়ই ঘুরে আসতে পারেন। এখানেও হোম স্টে-র ব্যবস্থা আছে। আশেপাশেই ঘুরে আসতে পারবেন ডেলো পার্ক, বুদ্ধ মূর্তি, হনুমান মন্দির, গুরু পদ্মসম্ভবের মূর্তি। নিউ জলপাইগুড়ি থেকে গাড়ি ভাড়া করে কালিম্পঙে পৌঁছে সেখান থেকে ভালুকহোপ যেতে পারেন।

Related posts

বাইরে বেরোলে জ্বালাপোড়া গরম, কী করবেন আর কী করবেন না?

আজ ধনতেরাস, জানুন সোনা কেনার শুভ সময়

ধনতেরাসে সোনা কেনার সময় এই ৫টি বিষয়ে সজাগ থাকুন