বড়বাজারের মেছুয়ায় ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় হোটেলের দুই মালিক আকাশ এবং অতুল চাওলার খোঁজে হাওড়ার গোলাবাড়ি এলাকায় পৌঁছল লালবাজারের তদন্তকারী দল। সাবার্বান পার্ক রোডের একটি আবাসনে তাঁরা থাকতেন বলে খবর থাকলেও, সেখানে দুই ভাইকে পাওয়া যায়নি। তবে তাঁদের পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কথা বলেছেন পুলিশ আধিকারিকেরা।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, দুই ভাইয়ের কাকা বিএস চাওলা জানিয়েছেন, আকাশ ও অতুল বছরখানেক আগে ওই বাড়ি ছেড়ে অন্যত্র চলে গিয়েছেন। ঘটনার পর থেকে তাঁদের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা চলছে। পরিবারের তরফে তাঁদের আত্মসমর্পণের কথাও ভাবা হচ্ছে বলে খবর।
মঙ্গলবার রাতে বড়বাজারের ফলপট্টি সংলগ্ন একটি হোটেলে ভয়াবহ আগুন লাগে। ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছেন অন্তত ১৪ জন। আগুন লাগার কারণ ও হোটেলের সুরক্ষা ব্যবস্থার গাফিলতি নিয়ে ইতিমধ্যেই উঠেছে একাধিক প্রশ্ন। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছেন, হোটেলে দাহ্য পদার্থ মজুত ছিল এবং অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা কার্যকর ছিল না।
দমকলের ডিজি রণবীর কুমার জানিয়েছেন, হোটেলের ফায়ার লাইসেন্সের মেয়াদ শেষ হয়ে গিয়েছিল তিন বছর আগেই, এবং তা আর নবীকরণ করা হয়নি। অগ্নিকাণ্ডের সময় হোটেলের ফায়ার অ্যালার্মও কাজ করেনি বলে জানান দমকলমন্ত্রী সুজিত বসু।
দমকলের প্রাথমিক অনুমান, দোতলায় প্লাইউডের কাজ চলাকালীন আগুন লাগে এবং ধোঁয়া উপরের দিকে ছড়িয়ে পড়ে। হোটেলে কেন্দ্রীয় শীততাপ নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা না থাকলেও, অধিকাংশ জানলা বন্ধ ছিল—এই বিষয়টি নিয়েও উঠেছে প্রশ্ন। ধোঁয়া বের হওয়ার পথ না থাকায় উপরতলার বাসিন্দারা নিচে নামতে পারেননি।
ঘটনার তদন্তে লালবাজার ইতিমধ্যেই একটি স্পেশাল ইনভেস্টিগেশন টিম (SIT) গঠন করেছে। ডিসি সেন্ট্রালের নেতৃত্বে গঠিত ১১ জনের ওই দল শুরু করেছে পূর্ণাঙ্গ তদন্ত। হোটেল কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে দমকলের তরফে থানায় লিখিত অভিযোগও দায়ের করা হয়েছে।