ডেস্ক: ১ এপ্রিল রাজনীতির ইতিহাসের বড় নির্বাচনী যুদ্ধ দেখবে বাংলা। তার আগে আজই প্রার্থী সোহম চক্রবর্তীর প্রচারে চণ্ডীপুরে জনসভা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের। আমাদের সরকার যা যা বলেছিল সব আমরা করেছি। যদি আপনারা আমাকে চান, তৃণমূল সরকারকে চান প্রার্থী সোহম কী অদিতি ভুলে যান, প্রার্থী মমতাদি। আমি এখন আছি। আমি আজ-কাল-পরশু-তরশু থাকব। আমি লক্ষ্য রাখব। আমাদের সরকার যা যা বলেছিল সব করেছি।
এদিন সভায় অমিত শাহের বক্তব্যের পাল্টা দিলেন তৃণমূলনেত্রী। একটা মানুষের লজ্জা থাকা উচিৎ। ৩০টা সিটে ভোট হয়েছে। ৮০ শতাংশ যখন ভোট পড়েছে আমরা বলতে পারি মা-বোনেরা, শ্রমিক-কৃষক ভাইবোনেরা আমাদের পক্ষে ভোট দিয়েছে। কিন্তু কত তা কী মেশিনে ঢুকে বলব। বিজেপির এক নেতা আজ বলেছে ৩০ মে ২৬ ঠো হামকো মিলেগা। বলোনা ৩০ মে ৩০ মিলেগা। তব তো গোল্লা জাদা হোগা। ৩০-এর মধ্যে নাকি ২৬ পাবে। চারটে কি সিপিএম-কংগ্রেসের জন্য? আমি তো একটাও বলব না, মানুষ বলবেন। লোকসভায় যেখানে পিছিয়ে ছিলাম, মানুষ সেখানে আমাদের ভোট দিয়েছে। না হলে সেন্ট্রাল পুলিশ দিয়ে কাল কেন মেরেছেন কাঁথিতে? আমি জানি না কারা করিয়েছে।
রাজ্যের উন্নয়নের ক্ষতিয়ান তুলে বলেন, আমাদের সরকার যা যা বলেছিল সব করেছি। স্বাস্থ্যসাথী, কৃষকবন্ধু, কন্যাশ্রী, শিক্ষাশ্রী, যুবশ্রী সব কাজ আমরা করেছি। যদি আপনারা আমাকে চান, তৃণমূলকে চান প্রার্থী সোহম কী অদিতি ভুলে যান, প্রার্থী মমতাদি। কারণ, সরকারটা মমতাদিকে গড়তে হবে। তা না হলে কন্যাশ্রী, স্বাস্থ্যসাথী বন্ধ হয়ে যাবে।
কর্মসংস্থানের প্রসঙ্গে মমতা বলেন, “দিঘায় কেবল ল্যান্ডিং স্টেশন হবে। ২৫ হাজার ছেলের চাকরি হবে। তাই জোড়া ফুলে ছাপ দিন। আমাকে সরকারটা করতেই হবে।”
অমিয়কান্তি ভট্টাচার্যকে আমি টিকিট দিইনি কারন ওকে দিয়ে অন্য কাজ করাব তাই ওকে টিকিট দিইনি, সোহমকে টিকিট দিয়েছি। মাত্র নয় মাসের মধ্যে দীঘা তমলুক রেল লাইন করে দিয়ে ছিলাম, দীর্ঘ কুড়ি বছর পড়েছিল। চন্ডীপুর নন্দীগ্রাম নন্দকুমারে পানীয় জলের ব্যবস্থা করছি জল প্রকল্পের মাধ্যমে। এক বছর ধরে কোভিড চলছে, সমস্ত নির্বাচনের মধ্যে আমি চার পাঁচ বছর সময় পেয়েছি তাঁর মধ্যে অনেক উন্নয়ন করেছি, মেদিনীপুরের ছেলে মেয়েরা মাধ্যমিক উচ্চমাধ্যমিকে প্রথম স্থান পায়। দোল এবং নির্বাচনের কারনে সময় পাইনি তাই বিকেলে সভা করলাম।
মোদী বলছেন আয়ুষ্মান, ওতে কিছু নেই আমাদের স্বাস্থ্য সাথীতে ৫ লাখ টাকা করে দেব। আমাদের সরকার চললে বিনা পয়সায় দরজায় দরজায় রেশন পাবেন, মা বোনেদের পাঁচশো টাকা করে হাত খরচা দেব, তপসিলিরা ১০০০ টাকা করে পাবেন। বিধবা ভাতা হিসেবে এক হাজার টাকা পেনশন দেব। দুকোটি ছাপান্ন লক্ষ ছেলে মেয়েরা সুযোগ সুবিধা পাচ্ছে। আমরা রাজ্য সরকার গ্যারেন্টার। ব্যাঙ্কে লোন দেব সত্তর লক্ষ টাকা করে, দেড় কোটি ছেলে মেয়েদের স্মলস্কেল ইন্ড্রাস্ট্রিতে চাকরি দিয়েছি, বেকারত্বের সংখ্যা বাংলায় কমেছে। আমরা আগামী দিনে মেডিক্যাল কলেজ করব, অনেক শিক্ষক নেব তাই ভোটটা দিন জোড়াফুলে। দীঘাতে সাগর তাজপুর পোর্ট তৈরি করছি বহু মানুষ চাকরী পাবে ওখানে, কেবল ল্যান্ড স্পোর্ট তৈরি হচ্ছে, চন্ডীপুরে ওভারব্রীজ হচ্ছে, কি করিনি আমরা, সব করে দিয়েছি।
বাংলায় সবাই একসঙ্গে থাকে, এখন এসেছে সংখ্যালঘুদের ভোট ভাগ করতে। হায়দরাবাদের দল থেকে সাবধান। বহিরাগতদের সমর্থন করবেন না, আপনার ঘর দখল করে নেবে, চণ্ডীপুরের সভায় বললেন তৃণমূলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
আরও পড়ুন: ‘প্রথম দফায় ৩০টির মধ্যে ২৬টিতে জিতব’: অমিত শাহ
মমতার বার্তা, “দিল্লী থেকে এলো গাই সঙ্গে একজন আছে। উত্তরপ্রদেশে যখন দাঙ্গা হয়েছিল তখন কোথায় ছিলি? একজন এখানে এখন এসেছে। বাংলায় দূর্গা, কালী, মারাংবুরু, শ্রীকৃষ্ণ সবাই আছে। তাই আজ দোল। তাই বলছি খেলা হবে? মা,বোনেরা খেলা হবে?” মমতা বলেন, “আগামী ২ মে বাংলায় আর একটা দোল যাত্রা হবে সবুজ আবিরে। সংখ্যালঘু ভাইবোনদের জন্য সব ধর্মের মানুষের জন্য বলছি, সবাই ভালো থাকবেন। সব করবো, কিন্তু একটা কথা, ভোটটা দিতে হবে।”
সেন্ট্রাল বাহিনীকে অনুরোধ কোনো মা বোনদের গায়ে দয়া করে হাত তুলবেন না, যদি না শোনেন আমরা ব্যবস্থা নেব, মনে রাখবেন মোদী, যোগীর ভোট বাংলা থেকে হয় না, বাংলা বাংলাতেই থাকবে। খেলতে হবে জিততে হবে। আমার একটা পা না চললেও মা বোনেদের দুটো করে পায়ে আমি চলব, তাঁদের ভালোবাসায়।