ওয়েবডেস্কঃ শীতের রোদ গায়ে মেখে বড়দিনকে স্বাগত জানালো আনন্দনগরী। কেকের সুবাস, রঙিন আলোয় উৎসবমুখর পার্ক স্ট্রিট, বো-ব্যারাক৷ কচিকাঁচাদের বাহারি মোজায় জমা সান্তার উপহার। জাঁকিয়ে শীতের পাশাপাশি, বড়দিনে ক্রিসমাস ট্রি, সান্তা ক্লজ, কেক, সবই আছে। উৎসবপ্রিয় বাঙালি মজেছে পিকনিক, ছুটির আমেজে। তবে হ্যাঁ, চিরকালীন কিছু অমলিন ছবির পাশাপাশি করোনাকালীন সতর্কতাও রয়েছে পূর্ণ মাত্রায়।
প্রত্যেকবছর সারাদিন খোলা থাকে সেন্ট পলস্ ক্যাথিড্রাল চার্চ। দূর-দূরান্ত থেকে ভিড় করেন দর্শনার্থীরা। এবার করোনা আবহে বড়সড় জমায়েত এড়াতে দুপুর ২টোর পর চার্চ বন্ধ করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। বড়দিনের সকালে আলিপুর চিড়িয়াখানায় পরিচিত ভিড়ের ছবিটা উধাও। সকালে কচিকাঁচাদের নিয়ে কয়েকজন এসেছেন। তবে প্রতিবারের মতো গেটের বাইরে লম্বা লাইন নেই। তাই ঠেলাঠেলি করে ভিতরে ঢোকার চেষ্টাও দেখা যায়নি দর্শকদের মধ্যে।
শুধুমাত্র শহরেই নয়, শহরের বাইরে কাছেপিঠে ঘুরে আসছেন অনেকেই। বাঁকুড়ার শুশুনিয়া পাহাড়, পুরুলিয়ার অযোধ্যায় বেড়াতে গেছেন অনেকেই। ব্যান্ডেল চার্চ, চন্দননগরে সমারোহে পালন হচ্ছে বড়দিন। সেক্রেড হার্ট চার্চে আসছেন দর্শনার্থীরা। অংশ নেন সকালের প্রার্থনায়। কেউ আসছেন উপাসনার জন্য, কেউ বা শুধুমাত্র বড়দিনের আমেজ উপভোগ করতে চার্চে এসেছেন। করোনা আবহে এবার ভিড় অনেকটাই কম। সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নিয়েছে চার্চ কর্তৃপক্ষও।
এদিকে প্রত্যেক বছরের মতোই ক্রিসমাস ইভে পর্তুগিজ চার্চে উপস্থিত হয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তবে এবার কোভিড বিধির কারণে রাত ১২টার পরিবর্তে সন্ধ্যাতেই চার্চে যান মুখ্যমন্ত্রী। ওখানে প্রাক বড়দিন উত্সবে যোগদান করেন। এদিন সন্ধ্যায় চার্চে ক্যারোল হয়। পুরো অনুষ্ঠানটি বসে দেখেন মুখ্যমন্ত্রী। সঙ্গে ছিলেন পুলিস কমিশনার অনুজ শর্মাও। চার্চের তরফে ফাদার মুখ্যমন্ত্রীর ভূয়সী প্রশংসা করেন। ফাদার বলেন, “কোভিডের সময় রাজ্য প্রশাসন যেভাবে কাজ করেছে তা খুবই প্রশংসনীয়। কোভিড তাই সেভাবে ছডাতে পারেনি।” সঙ্গে উপস্থিত পুলিশ কমিশনারের প্রশংসা করে ফাদার বলেন, “সবক্ষেত্রেই পুলিস কমিশনার ভালো কাজ করছেন।”
তবে বড়দিনের আগের রাতে পার্ক স্ট্রিটে ভিড় উপছে পড়ায় সতর্ক থাকছে পুলিশ। বড়দিন এবং বছর শেষের উত্সব উপলক্ষ্যে কলকাতায় বিশেষ নিরাপত্তার বন্দোবস্ত থাকছে। করোনা সংক্রমণের আশঙ্কায় ভিড় বা জমায়েত এড়াতে চলছে বিশেষ নজরদারি। বড়দিনে কলকাতায় ৫ হাজার পুলিশ কর্মী মোতায়েন করা হয়েছে। পার্ক স্ট্রিট এলাকায় ১১টি ওয়াচ টাওয়ার থেকে চলছে নজরদারি। থাকছে হেভি রেডিয়ো ফ্লাইং স্কোয়াড, রেডিয়ো ফ্লাইং স্কোয়াড। থাকছে ক্যুইক রেসপন্স টিম।