ডেস্ক: নিম্নচাপ পরিণত হল ঘূর্ণিঝড় ইয়াস। বর্তমানে দিঘা থেকে ৬৩০ কিলোমিটার ও ওড়িশার পারাদ্বীপ থেকে ৫৪০ কিলোমিটার দূরে অবস্থান করছে এই ঘূর্ণিঝড়। শক্তি বাড়িয়ে নিয়েছে সে। আর শক্তি বাড়িয়েই বাংলার দিকে ধেয়ে আসছে ঘূর্ণিঝড় ইয়াস। পূর্ব মধ্য বঙ্গোপসাগর ও উত্তর আন্দামান সাগরে ঘনীভূত গভীর নিম্নচাপ আজই ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হয়েছে।
সোমবার বিকেলের পর থেকে ঘণ্টায় ৪০-৫০ কিলোমিটার বেগে ঝোড়ো হাওয়া বইতে পারে। দমকা হাওয়ার বেগ পৌঁছে যেতে পারে ঘণ্টায় ৬০ কিলোমিটারে। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় ঘণ্টায় ৫০-৬০ কিলোমিটার বেগে বইতে পারে ঝড়। কখনও কখনও তা ঘণ্টায় ৭০ কিলোমিটার ছুঁয়ে ফেলতে পারে। মঙ্গলবার রাতে ঝড়ের বেগ আরও বেড়ে ৬০-৭০ কিলোমিটার হতে পারে। দমকা হাওয়ার বেগ পৌঁছে যেতে পারে ঘণ্টায় ৮০ কিলোমিটারে। বুধবার সকাল থেকে ৯০-১০০ কিলোমিটার বেগে বইতে পারে ঝড়। যা সন্ধ্যা পর্যন্ত বাড়তে থাকবে। স্থলভাগে আছড়ে পড়ার সময় ঘণ্টায় ১৫৫-১৬৫ কিলোমিটার বেগে বইবে ঝড়। কখনও কখনও ঝড়ের বেগ ঘণ্টায় ১৮০ কিলোমিটারে পৌঁছে যেতে পারে।
মৌসম ভবন সূত্রে খবর, ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হয়েছে ইয়াস। ইয়াস মোকাবিলায় চূড়ান্ত সতর্ক প্রশাসন। নবান্নের তরফে খোলা হয়েছে একাধিক কন্ট্রোল রুম। আপদকালীন ফোন নম্বরও দেওয়া হয়েছে। সেগুলো হল— ১০৭০ এবং ০৩৩-২২১৪৩৫২৬। উপকূলীয় এলাকাগুলিতে চলছে বাঁধ মেরামতির কাজ। জেলায় জেলায় পৌঁছে গিয়েছে এনডিআরএফ টিম। বাতিল করা হয়েছে একাধিক দূরপাল্লার ট্রেন।
আলিপুর আবহাওয়া দফতরের তরফে ইতিমধ্যে কলকাতা, দুই মেদিনীপুর, উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগণা, হাওড়া, ঝাড়গ্রাম এবং হুগলী জেলায় ভারী থেকে অতিভারী বৃষ্টির সতর্কতা জারি করা হয়েছে। ২৬ ও ২৭ মে মুর্শিদাবাদ, মালদা, দক্ষিণ দিনাজপুর, বীরভূম, বাঁকুড়া, পুরুলিয়া এবং বর্ধমানে ভারী বৃষ্টির সতর্কতা রয়েছে।
আরও পড়ুন: নারদ মামলা: হাইকোর্টের নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে সুপ্রিম কোর্টে সিবিআই
এই পরিস্থিতিতে রাজ্যের উপকূলবর্তী অঞ্চলগুলিতে যুদ্ধকালীন তৎপরতায় চলছে সাইক্লোন মোকাবিলার প্রস্তুতি। ঘূর্ণিঝড়ের ক্ষয়ক্ষতি যথাসম্ভব কমাতে নেওয়া হচ্ছে আগাম সতর্কতামূলক ব্যবস্থা।
পূর্ব মেদিনীপুরের তাজপুরে সমুদ্র তীরবর্তী এলাকায় গার্ডওয়াল তৈরির কাজ অসমাপ্ত। তাই ব্ল্যাক স্টোন ফেলে জলোচ্ছ্বাস আটকানোর ব্যবস্থা করা হয়েছে। তাজপুর লাগোয়া চাঁদপুরে গার্ডওয়াল থাকা সত্ত্বেও তার উপর নেট ও বালির বস্তা ফেলে উঁচু করা হচ্ছে। যাতে সামুদ্রিক জলোচ্ছ্বাস আটকানো যায়।পুলিশ ও ভারতীয় উপকূলরক্ষী বাহিনীর তরফে দক্ষিণ ২৪ পরগনার ফ্রেজারগঞ্জে মত্স্য বন্দর লাগোয়া নদীপথে চলছে নজরদারি। মাইকে প্রচার করে নিরাপদ জায়গায় সরে যেতে বলা হচ্ছে স্থানীয় বাসিন্দাদের।