ডেস্ক: আধুনিক বিশ্বের ভয়ঙ্করতম তো বটেই, ১০০ বছরের মধ্যে ভয়ঙ্কর মহামারী। জাতির উদ্দেশ্যে ভাষণ দিতে গিয়ে এমনটাই বললেন প্রধানমন্ত্রী মোদী। করোনার টিকাকরণ কর্মসূচি নিয়ে বড় ঘোষণা প্রধানমন্ত্রীর। আগামী ১৮ জুন থেকে সব রাজ্যকে ১৮ বছরের ঊর্ধ্বে প্রত্যেকের জন্য বিনামূল্যে করোনার ভ্যাকসিন দেওয়া হবে বলে জানালেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।
ভাষণে বক্তব্য রাখতে গিয়ে বলেন, “করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ের সঙ্গে আমরা লড়ছি। বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো ভারতও এই লড়াই লড়ছে। আমরা স্বজন হারিয়েছি। তাঁদের প্রত্যেককে আমার সমবেদনা।”
বিনামূল্য সকল দেশবাসীকে ভ্যাকসিন
মোদী বলেন, হাসপাতালের বেড, অক্সিজেন, ভেন্টিলেটরের মতো নানা বিষয়ে কাজ করা হয়েছে। দেড় বছরে নতুন করে স্বাস্থ্য পরিকাঠামো তৈরি করা হয়েছে। এর মধ্যেই বড় ঘোষণা করলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী৷ তিনি জানিয়ে দিলেন যে বিনামূল্য সকল দেশবাসীকে ভ্যাকসিন দেওয়া হবে৷ রাজ্যকে ভ্যাকসিনে কোনও খরচ করতে হবে না। ১৮ ঊর্ধ্বরাও এই নিয়মে কেন্দ্রের কাছ থেকে বিনামূল্যে ভ্যাকসিন পাবে। ২১ জুন থেকে কার্যকরী হবে এই নিয়ম।
তিনি জানান যে, দেশের কোন রাজ্যকে ভ্যাকসিনের জন্য কোনও খরচ করতে হবে না৷ একই সঙ্গে মোদি জানান যে, কেউ যদি ফ্রি ভ্যাকসিন না চায়, তিনি প্রাইভেট হাসপাতাল থেকে ভ্যাকসিন নিতে পারেন। বেসরকারি হাসপাতালগুলি ভ্যাকসিনের দামের উপর দেড়শ টাকা সার্ভিস চার্জ নিতে পারবে।
টিকাকরণ নিয়ে কেন্দ্র রাজ্যের সমন্বয়ের ব্যাপারেও উল্লেখ করেন প্রধানমন্ত্রী৷ তিনি জানিয়ে দেন যে কেন্দ্রের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী টিকাকরণের যে ২৫ শতাংশ দায়িত্ব রাজ্যের কাছে ছিল তাও কেন্দ্রই দেখবে। এই ব্যবস্থা দুই সপ্তাহের মধ্যে চালু হবে সোমবার নিজের বক্তব্যে জানিয়ে দেন প্রধানমন্ত্রী মোদি৷
তিনি বলেছেন, আধুনিক বিশ্বে এরকম মহামারী কেউ দেখেনি। দেশ একসঙ্গে করোনার বিরুদ্ধে লড়ছে।কোভিড হাসপাতাল থেকে টেস্টিং ল্যাব তৈরি হয়েছে। নতুন স্বাস্থ্য পরিকাঠামো তৈরি হয়েছে।’ বলেছেন, ভারতের ইতিহাসে এত বেশি মেডিক্যাল অক্সিজেনের প্রয়োজন হয়নি। যুদ্ধকালীন তৎপরতায় কাজ করেছে কেন্দ্র। ১০০ শতাংশ তরল অক্সিজেন তৈরি করার চেষ্টা করা হয়েছে। জরুরি ওষুধ তৈরি কয়েকগুণ বাড়ানো হয়েছে। করোনা রুখতে কোভিড প্রোটোকল মেনে চলতে হবে।
আরও পড়ুন: বাতিল মাধ্যমিক, উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষা, ঘোষণা করলেন মুখ্যমন্ত্রী
আগে বিদেশে ভ্যাকসিনেশন শেষ হলে তবেই ভারত ভ্যাকসিন পেত। ২০১৪ সালে দেশ আমাদের সেবার সুযোগ দেওয়ার পর তখন টিকাকরণের গড় ৬০ শতাংশের আশপাশে ছিল। যা অত্যন্ত চিন্তার। যে গতিতে ভারতের টিকাকরণ চলছিল, তাতে দেশের ১০০ শতাংশ টিকা পেতে ৪০ বছর লেগে যেত। আমরা এই সমস্যার সমাধানের জন্য মিশন ইন্দ্রধনু চালিয়েছি। এর মাধ্যমে যুদ্ধকালীন পরিস্থিতিতে ভ্যাকসিনেশনের চেষ্টা হয়েছে। আমরা যুদ্ধকালীন পরিস্থিতিতে কাজ করেছি। স্রেফ ৫-৬ বছরের মধ্যে ভ্যাকসিনেশন কভারেজ ৬০ শতাংশ থেকে ৯০ শতাংশ করেছি। মোদী বলেছেন, ‘ভ্যাকসিন হল আমাদের সুরক্ষা কবচ।
স্বাস্থ্যকর্মীদের আগে টিকাকরণ হয়েছে
তিনি বলেছেন, শিশুদের জন্য দুটি ডোজের ভ্যাকসিন ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল চলছে। এখন ন্যাসাল ভ্যাকসিন দেওয়ার পরীক্ষা শুরু হয়েছে। ভ্যাকসিন তৈরি হওয়ার পরেও বিশ্বের কম দেশে টিকাকরণ শুরু হয়।বেশিরভাগ সমৃদ্ধ দেশে ভ্যাকসিন দেওয়া শুরু হয়। ডব্লুএইচও-র নির্দেশ অনুসারে টিকাককণ শুরু হয়েছে। টিকাকরণের জন্য কেন্দ্র বিভিন্ন রাজ্যের সঙ্গে বৈঠক করেছে। করোনায় যাঁদের বেশি আশঙ্কা রয়েছে, তাঁদেরকেই আগে ভ্যাকসিন দেওয়া হয়েছে। সেইজন্যই স্বাস্থ্যকর্মীদের আগে টিকাকরণ হয়েছে।
বিনামূল্যে রেশন
পাশাপাশি দীপাবলি পর্যন্ত দেশের ৮০ কোটি মানুষকে বিনামূল্যে রেশন দেওয়ার কথাও সোমবার ঘোষণা করেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ৷ জাতির উদ্দেশে ভাষণে এদিন প্রধানমন্ত্রী বলেন, চলতি বছরের নভেম্বর পর্যন্ত বিনামূল্যে রেশন দেওয়ার প্রকল্প চালাবে কেন্দ্রীয় সরকার। দেশের মানুষের খাবার পৌঁছে দেওয়া হবে। চলবে প্রধানমন্ত্রী গরীব কল্যাণ অন্ন যোজনা।