কলকাতা: রাজ্যে ভোট পরবর্তী হিংসা নিয়ে হাইকোর্টে বড় ধাক্কা খেল কেন্দ্র। রাজ্যে নির্বাচন পরবর্তী হিংসার ঘটনায় অবসরপ্রাপ্ত পুলিশের ডিজিকে নেতৃত্ব দিয়ে ঘটনার তদন্তে বিশেষ তদন্তকারী দল বা সিট গঠনের আবেদনও খারিজ করে দিল কলকাতা হাই কোর্টের সাংবিধানিক বেঞ্চ।
আদালতের পক্ষ থেকে জানিয়ে দেওয়া হল, এখন রাজ্যের পরিস্থিতি স্বাভাবিক। আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় রাজ্য সরকার যথাযথ ভূমিকা পালন করেছে। তাই বিশেষ তদন্তকারী দল বা সিট গঠনের প্রয়োজন নেই। একই সঙ্গে আদালত সাফ করেছে, রাজ্যের আইনশৃঙ্খলার দায়িত্ব এখন রাজ্য সরকারের।
রাজ্যে ভোটের ফল প্রকাশ পাওয়ার পর থেকে যে বিক্ষিপ্ত হিংসার ঘটনা ঘটেছে তা নিয়ে একাধিক জনস্বার্থ মামলা দায়ের হয়েছিল কলকাতা হাইকোর্টে। সেই মামলার শুনানি করতে পাঁচ বিচারপতির সাংবিধানিক বেঞ্চ তৈরি হয়। সেই সময় কেন্দ্রের তরফে আবেদন জানানো হয়, বাংলায় ভোটের পর যেভাবে হিংসা ছড়িয়েছে তার প্রতিফলন কেবল সংবাদ মাধ্যমে নয়, তৃণমূল বিরোধী অন্যান্য রাজনৈতিক দলের সোশ্যাল মিডিয়াতেও ঘটেছে। ফলে এর জন্য পৃথক একটি সিট (তদন্ত কমিটি) গঠন করে তার তদন্ত করা হোক।
রাজ্যে নির্বাচন পরবর্তী হিংসার ঘটনা প্রসঙ্গে রাজ্য সরকার তথা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রশংসা করে তাদেরপর্যবেক্ষণ দিয়েছে। এই ঘটনায় বোঝা যাচ্ছে রাজ্যের তরফে আদালতে রাজ্যের নির্বাচন পরবর্তী হিংসার ঘটনা নিয়ন্ত্রণে ব্যবস্থা রাজ্য সরকার নিয়েছে বলে হলফনামা দিয়ে জানিয়েছে সেটা আদালতের গ্রহণযোগ্য মনে হয়েছে। এই পর্যবেক্ষণ যখন কলকাতা হাই কোর্ট দিচ্ছে ঠিক তখন রাজ্যপাল জগদীপ ধনকর নির্বাচনের পর থেকে নির্বাচন পরবর্তী হিংসা নিয়ে রাজ্য সরকারকে কঠোর ভাষায় সমালোচনা করছেন।
আরও পড়ুন: শীতলকুচিকাণ্ডে ২ অফিসারসহ কেন্দ্রীয় বাহিনীর ৬ জনকে তলব করল সিআইডি
পাঁচ বিচারপতির পক্ষ থেকে ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি রাজেশ বিন্দাল পর্যবেক্ষণে জানান, “আইনশৃঙ্খলার দায়িত্ব এখন রাজ্য সরকারের।” তাই রাজ্য সরকারের কাছেই দ্বিতীয়বার রিপোর্ট তলব করা হয়। যদিও তাৎপর্যপূর্ণ বিষয় হল, আদালতে এ দিন রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে, ৯ মে-র পর এ রাজ্যে আর কোনও হিংসার ঘটনা ঘটেনি। যা হয়েছে তা এর আগেই হয়েছে। আইনশৃঙ্খলার দায়িত্ব রাজ্যের হাতে আসার পরই কড়া পদক্ষেপ করা হয়েছে।
এফআইআর দায়ের করে দ্রুত তদন্তও হচ্ছে। এই রিপোর্টের প্রেক্ষিতে বিচারপতিরা কেন্দ্রের সিট গঠনের দাবি খারিজ করে দেন। যদিও বিজেপির পক্ষে মামলাকারী প্রিয়াঙ্কা টিবরেওয়াল রাজ্যের দাবি মেনে নিতে নারাজ। ফের আগামী সোমবারের মধ্যে হলফনামা জমা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে রাজ্য সরকারকে।