ডেস্ক: আগামী দিনে সিঙ্গুরে শিল্পাঞ্চল গড়ে উঠবে। আগে অ্যাগ্রো ইন্ডাস্ট্রি। তারপর এখানে বড় শিল্প হবে। অতীত ফেলে আজ উন্নয়নই উন্নয়ন। নিজেদের মধ্যে ভুল বোঝাবুঝি করা চলবে না।মানুষের পাশে থেকে কাজ করতে হবে। মানুষের সঙ্গে যাঁরা থাকবে না, তাঁদের সঙ্গে আমার সম্পর্ক নেই। কামারপুকুরে জনসভায় বললেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
মমতা বলেছেন, ‘১৫০০ কোটি টাকা খরচ করেছি, সিঙ্গুরের জমিকে চাষযোগ্য করার জন্য। সিঙ্গুর আন্দোলন এখন পাঠক্রমেও উঠেছে’। তৃণমূল সরকারে এসে বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কর্মসূচী নিয়েছি। ১১ একর জমি সিঙ্গুরে রেখেছি। সেখানে কৃষিভিত্তিক শিল্প হবে। অনেকের কর্মসংস্থান হবে। সিঙ্গুরে বারুইপাড়া পানীয় জল প্রকল্প তৈরি হয়েছে। বিভিন্ন রাস্তা তৈরি হয়েছে।
রাজ্যের উন্নয়নের ক্ষতিয়ান তুলে ধরে বলেন, গোঘাট, খানাকুল, জয়রামবাটি সব জায়গা. উন্নয়ন হয়েছে। গোঘাটের জনসভা থেকে মমতা বললেন, ‘আজ গোঘাট, আরামবাগে শুধুই উন্নয়ন। কোনও ভুল বোঝাবুঝি চলবে না, উন্নয়নের কথা মাথায় রাখতে হবে না। আজ কী নেই? হাসপাতাল, বাস স্ট্যান্ড। আপনাদের রেলের যোগাযোগ ছিল না। গোঘাট পর্যন্ত রেল এসে গেছে। এটা আমার তৈরি করা।বিজেপি, সিপিএম করেনি। ক্ষমতায় আছে বলে উদ্বোধন করছে।
বন্যা প্রতিরোধে আরামবাগে মাস্টার প্ল্যান তৈরি করা হবে।বন্যায় কষ্ট করতে হবে না।জলস্বপ্ন প্রকল্পে বাড়িতে বাড়িতে পানীয় জল পৌঁছে দেওয়া হবে।আগামী ৩-৪ বছরের মধ্যে সব বাড়িতে পানীয় জল পৌঁছে দেওয়া হবে।মুণ্ডেশ্বরী নদীর ওপর সেতু তৈরির পরিকল্পনা রয়েছে। সড়ক পথ তৈরির পরিকল্পানও রয়েছে।
৩ হজার কোটি টাকা দিয়ে রাস্তা তৈরির পরিকল্পনা হয়েছে। দক্ষিণ বঙ্গ থেকে উত্তরবঙ্গ যুক্ত হবে। মেচেদা দাসপুর হয়ে জয়রামবাটি-কামারপুকুর হয়ে বর্ধমান, বীরভূম হয়ে যাবে তরাই-ডুয়ার্স হয়ে শিলিগুড়ি। সেখান থেকে বাংলাদেশ-নেপালের সঙ্গে যুক্ত হবে।
পাঁচলার জনসভা থেকে বিজেপিকে আক্রমণ মমতার’। পাঁচলার জনসভা থেকে বিজেপিকে আক্রমণ মমতার। বললেন, ছাত্রছাত্রীদের জন্য ১০ লক্ষ টাকা ক্রেডিড কার্ডের ব্যবস্থা করা হবে। ৪ শতাংশ ঋণে এই কার্ডের গ্যারান্টার হবে সরকার।
আরও পড়ুন: সরিয়ে দেওয়া হল হলদিয়ার SDPO ও মহিষাদলের CI-কে
সিঙ্গুর থেকে খানাকুল শুধুই অত্যাচার চলত বাম আমলে। এ কথা উল্লেখ করে মমতা বললেন, ‘গোঘাটে এসেছিলাম। জল পিপাসা পেয়েছিল। সব ঘরের দরজা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল। কেউ জল দেয়নি। সেই সিপিএমের হার্মাদরা আজ বিজেপিতে যোগ দিয়েছে।’বিজেপি বাংলা চেনেই না। সিপিএমের হার্মাদরা বিজেপিতে গেছে। বিজেপির নিজেদের কিছু নেই। সিপিএমের ক্যাডারদের বিধানসভার টিকিট দিয়েছে।’
তৃণমূলনেত্রী অভিযোগ করেন,’বহিরাগতরা নন্দীগ্রামে ঢুকছে৷ তৃণমূল নেত্রী বলেন, নন্দীগ্রামের বলরামপুরে আমাদের একটা ছেলেকে এমন মেরেছে যে সে বাঁচবে কিনা জানি না। এলাকায় অত্যাচার করেছে। এর পেছনে যারা রয়েছে তাদের একসময় আমি দুধ কলা দিয়ে পুষেছিলাম। ভোটে দাঁডি়য়েছিস। লড়াই কর না! বলরামপুরে গিয়েছিলাম। আমার গাড়িতে হামলা করছে। গাড়িতে দুমদাম মারছে। এত সাহস! শুধু ভোট বলে চেপে যাচ্ছি। তা না হলে দেখে নিতাম কার কতবড় চেহারা। যাদের মারা হয়েছে তাদের স্ত্রী-রা আমাকে বলেছে আমার স্বামীকে ভিক্ষে দিন। একজনের মেয়েকে বলেছে, তৃণমূলকে ভোট দিলে তুলে নিয়ে যাব। এতবড় সাহস!
উত্তরপ্রদেশে হাথরাস করেছ বলে বাংলায় তাই করবে? একটা মেয়ের গায়ে হাত দিয়ে দেখুক, হুঁশিয়ারি মমতার। ‘কমিশনে বলে বলে মুখ গলা ব্যাথা হয়ে গিয়েছে’, বহিরাগত গুণ্ডা প্রসঙ্গে বললেন মমতা। তিনি জানান, কালও রাতের অন্ধকারে রাতভর ভয় দেখিয়েছে বহিরাগত ‘গুণ্ডা’। বললেন, আমি এসব করছি না বলে এটা আমার দুর্বলতা নয়। আবারও অধিকারীদের নাম না করে বললেন, ‘আন্দোলনে রাস্তায় দেখা যায়নি। সিপিএমের সঙ্গে আন্ডারস্ট্যান্ডিং করেছিল।’
‘সংখ্যালঘুরা ভোট ভাগ করবেন না’, গোঘাটে গিয়ে আর্জি জানালেন মমতা। আসাদুদ্দিন ওয়েইসির দলকে কটাক্ষ করে মমতা বললেন, ‘হায়দরাবাদ থেকে বিজেপির দালাল এসেছে’। আইএসএফ তথা আব্বাস সিদ্দিকির নাম না করে মমতা উল্লেখ করেন, ফুরফুরা শরিফের সবাই নয়, একটা ছেলে টাকা নিয়ে বসে আছে। তাঁকেও গদ্দার বলে কটাক্ষ করেন তিনি। তাঁর দাবি, এই গদ্দারদের জন্য নিজেদের ভোট ভাগ করা যাবে না।
তফশিলীদের জন্য তৃণমূল নেত্রী বলেন, ‘আমি আপনাদের সবার জন্য পেনশনের ব্যবস্থা করে দিয়েছি। কাস্ট সার্টিফিকেটের ব্যবস্থা করে দিয়েছি।’ কেন্দ্রীয় মন্ত্রীদের টিকিট দেওয়া নিয়েও বিজেপিকে বেঁধেন মমতা। বলেন, বিজেপি এমপি, এমএলএদের টিকিট দিয়েছে। কটা জায়গায় এদের সুযোগ দেওয়া হবে! বলে কিনা বাংলাকে সোনার বাংলা করা হবে। বাংলাকে বাংলা বলতে পারে না। বলে কিনা সুনার বাংলা। ঠিকমতে উচ্চারণও করতে পারে না। আমি রাজ্যের নামটা বাংলা করতে চেয়েছিলাম। ওরা করেনি। এরা বাংলাকে ঘৃণা করে।