গত বুধবার গভীর রাতে বাড়িতে ঢুকে সইফ আলি খানের উপর হামলা চালানো হয়। মুম্বাই পুলিশ জানিয়েছে, এই ঘটনার গ্রেফতার বাংলাদেশি নাগরিক শরিফুল ইসলাম শেহজাদ অবৈধভাবে ভারতে প্রবেশ করে বিজয় দাস নামে পরিচয় দিচ্ছিলেন। রবিবার, মহারাষ্ট্রের থানে থেকে তাঁকে গ্রেফতার করা হয়।
অভিযুক্ত ব্যক্তি অভিনেতা সাইফ আলি খানের বাড়িতে চুরির উদ্দেশ্যে প্রবেশ করেছিলেন এবং তাঁকে আক্রমণও করেন। পুলিশ তাঁকে ধরতে ৩০টি দল গঠন করেছিল।
ব্যান্ড্রার বিল্ডিংয়ের সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণ করে পুলিশ দেখতে পায়, সন্দেহভাজন ব্যক্তি হামলার পর বেরিয়ে যাচ্ছে। এরপর শহরের বিভিন্ন জায়গার সিসিটিভি ফুটেজ স্ক্যান করে পুলিশ তাঁকে শনাক্ত করে।
অন্ধেরির ডিএন নগরে একটি সিসিটিভিতে ধরা পড়ে অভিযুক্তের ছবি। তাঁকে মোটরবাইক থেকে নামতে দেখা যায়। এরপর বাইকের নম্বর ব্যবহার করে পুলিশ তাঁকে চিহ্নিত করে।
তদন্ত চলাকালীন স্থানীয় সূত্রের মাধ্যমে ওরলির কোলিওয়াড়ায় একটি ভাড়া বাসায় তাঁর অবস্থান সম্পর্কে তথ্য পাওয়া যায়। সেখান থেকে জানা যায়, অভিযুক্ত আরও তিনজনের সঙ্গে থাকতেন।
পুলিশ সেই বাসায় গিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করে অভিযুক্তের নাম ও অন্যান্য তথ্য সংগ্রহ করে। তাঁর ফোন নম্বরও পাওয়া যায় এবং সেটির লোকেশন ট্র্যাক করে তাঁকে থানের একটি নির্জন রাস্তায় ঘিরে ফেলে গ্রেফতার করা হয়।
পুলিশ জানিয়েছে, তাঁর কাছ থেকে কোনো ভারতীয় পরিচয়পত্র পাওয়া যায়নি, তবে এমন কিছু প্রমাণ মিলেছে যা তিনি বাংলাদেশি নাগরিক বলে প্রতিষ্ঠা করছে।
জিজ্ঞাসাবাদে অভিযুক্ত দাবি করেন, তিনি জানতেন না যে এটি সাইফ আলি খানের বাড়ি। তিনি পেছনের সিঁড়ি ও এয়ার-কন্ডিশনিং ডাক্ট ব্যবহার করে ভবনে প্রবেশ করেছিলেন এবং এটিই প্রথমবার তিনি এই বিল্ডিংয়ে ঢোকেন।
মুম্বাই পুলিশের ক্রাইম ব্রাঞ্চের ডিসিপি দীক্ষিত গেদাম এক প্রেস কনফারেন্সে বলেন, “প্রাথমিক প্রমাণ অনুযায়ী অভিযুক্ত একজন বাংলাদেশি। তাঁর কোনো বৈধ ভারতীয় নথি নেই। কিছু বাজেয়াপ্ত সামগ্রী থেকে বোঝা যাচ্ছে, তিনি বাংলাদেশ থেকে অবৈধভাবে প্রবেশ করেছেন।”
তিনি জানান, ১৬ জানুয়ারি রাত ২টায় সাইফ আলি খান তাঁর বাসায় আক্রান্ত হন। “এফআইআর দায়ের করা হয়েছে এবং অভিযুক্তকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তাঁর নাম মোহাম্মদ শরিফুল ইসলাম শেহজাদ, বয়স ৩০ বছর। তিনি চুরির উদ্দেশ্যে বাড়িতে প্রবেশ করেছিলেন। তাঁকে আদালতে পেশ করা হবে এবং হেফাজতের আবেদন জানানো হবে।”
তদন্ত চলছে এবং পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে ঘটনার পুনর্নির্মাণ করতে পারে বলে জানানো হয়েছে।
ডিসিপি আরও জানান, অভিযুক্ত ৫-৬ মাস আগে ভারতে আসে এবং ১৫ দিন আগে মুম্বাইতে এসে বসবাস শুরু করে। তিনি ‘বিজয় দাস’ নামে পরিচয় দিচ্ছিলেন এবং হাউসকিপিং সংস্থায় কাজ করতেন।
এদিকে, সাইফ আলি খান বর্তমানে লীলাবতী হাসপাতালে চিকিৎসাধীন এবং তিনি ধীরে ধীরে সুস্থ হয়ে উঠছেন। তাঁর শরীরে ছয়টি ছুরিকাঘাতের চিহ্ন পাওয়া গিয়েছে।